ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সময় এসেছে জনগণের জন্য কী করছি তা হিসাব করার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২১
সময় এসেছে জনগণের জন্য কী করছি তা হিসাব করার

ঢাকা: রাজনৈতিক নেতাদের ব্যক্তিস্বার্থে বাইরে এসে জনগণের জন্য কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বঙ্গভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি বিমান বাহিনীর বরিশাল রাডার ইউনিট ও হেলিকপ্টার সিমুলেটর ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান তিনি।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, দেশের জনগণ আমাদের মুক্তিসংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারসহ সব গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম, সর্বোপরি দেশের যে কোনো প্রয়োজনে নিজেদের বিলিয়ে দিয়েছেন। এখন সময় এসেছে আমরা তাদের জন্য কতটুকু করেছি বা করছি, তা হিসাব করার।

‘কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজ আমরা বলি, আমরা কী পেলাম। বঙ্গবন্ধুর একজন কর্মী হিসেবে সব সময়ই দেখেছি, তিনি নিজে যা বিশ্বাস করতেন, তাই বলতেন। নিজের বা পরিবারের কথা না ভেবে দেশ ও জনগণের কল্যাণই ছিল তার সব চিন্তা-চেতনায়। ’

১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি সংসদে বঙ্গবন্ধুর বক্তব্য থেকে উদ্বৃতি দিয়ে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, সেদিন বঙ্গবন্ধু তার সমাপনী ভাষণে মন্ত্রী, জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মন মানসিকতা পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন,‘যারা তোমায় মাহিনা দেয়, তোমার সংসার চালায়, ট্যাক্স দেয়, তার কাছে তুমি আবার পয়সা খাও! মেন্টালিটি চেঞ্জ করতে হবে। সরকারি কর্মচারী, মন্ত্রী, প্রেসিডেন্ট-আমরা জনগণের সেবক, আমরা জনগণের মাস্টার নই। এই মেন্টালিটি আমাদের চেঞ্জ করতে হবে। আর যাদের পয়সায় আমাদের সংসার চলে, যাদের পয়সায় আমাদের রাষ্ট্র চলে, যাদের পয়সার আমরা গাড়ি চড়ি, আমরা কার্পেট ব্যবহার করি, তাদের জন্য কী করলাম- সেটাই আজ বড় জিনিস’।

সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি বলেন, মনে রাখবেন, আপনারা সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য হলেও এদেশেরই সন্তান। দেশের জনগণেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই আপনারাও দেশের মানুষের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার সমান অংশীদার। পেশাদারিত্বের নিপুণতা বজায় রাখার পাশাপাশি জনগণের প্রয়োজনে নিজ-নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে।

বিমান সেনাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মনে রাখবেন, পরিশ্রম ও সততার কোনো বিকল্প নেই। সুদৃঢ় মনোবল, কঠোর পরিশ্রম, সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার ও দেশপ্রেমই আপনাদের পেশাগত জীবনে উৎকর্ষের শিখরে পৌঁছে দিতে পারে।

রাডার ইউনিটের গুরুত্ব তুলে ধরে আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশের ভূ-কৌশলগত অবস্থান, বিশাল সমুদ্রসীমার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের নিরাপত্তা বিধান, প্রাকৃতিক দুর্যোগকালীন উদ্ধারকাজ, ত্রাণ তৎপরতা দ্রুত ও সহজতর করা এবং এই অঞ্চলের আকাশসীমা পর্যবেক্ষণে সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বরিশাল রাডার ইউনিট স্থাপন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, নতুন অন্তর্ভুক্ত রাডার বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রাঞ্চল তথা সমগ্র মহীসোপান এলাকায় টহলরত প্লেনগুলোর সঠিক দিক-নির্দেশনা এবং তাদের চলাচল ও নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালনে সক্ষম হবে।

সিমুলেটর ইনস্টিটিউট প্রসঙ্গে আবদুল হামিদ বলেন, উন্নত দেশগুলোতে বৈমানিকদের প্রকৃত উড্ডয়নের আগে সিমুলেটরের মাধ্যমে উড্ডয়ন করানো হয়। এতদিন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে কোনো সিমুলেটর ট্রেনিং ইনস্টিটিউট না থাকায় হেলিকপ্টারের সমগ্র উড্ডয়ন প্রশিক্ষণই বাস্তব উড্ডয়নের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হতো, যা ছিল ব্যয়বহুল এবং সময়সাপেক্ষ। নবনির্মিত হেলিকপ্টার সিমুলেটর ট্রেনিং ইনস্টিটিউট আমাদের বৈমানিকদের উড্ডয়নের একটি অংশ সিমুলেটরের মাধ্যমে সম্পন্ন করবে। ফলে প্রশিক্ষণ ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাবে।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির পক্ষে ফলক উন্মোচন করেন বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত।

বাংলাদেশ সময়: ২২০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২১
এমইউএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।