ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মেঘনার ভাঙন হুমকিতে হাইমচরের ২০ হাজার মানুষ

মো. মাসুদ আলম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২১
মেঘনার ভাঙন হুমকিতে হাইমচরের ২০ হাজার মানুষ

চাঁদপুর: পদ্মা-মেঘনা উপকূলে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার চরাঞ্চলের ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এতে আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছে চরের শত শত পরিবারের।

বিশেষ করে নীলকমল ও হাইমচর ইউনিয়নে বছর জুড়েই বসতভিটা ও ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে।  

ভাঙন বাড়লে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে জরুরিভাবে ভাঙন প্রতিরোধ করা হয়েছে একাধিকবার। কিন্তু স্থায়ী বাঁধের দাবি স্থানীয় লোকজনের। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে স্থায়ী বাঁধের জন্য টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হয়ছে।

সম্প্রতি ওই এলাকায় গিয়ে ও স্থানীয় লোকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চাঁদপুর জেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন হাইমচর উপজেলার ৫ নম্বর হাইমচর ইউনিয়ন পরিষদ মেঘনা নদীর পশ্চিমে অবস্থিত। মেঘনার একাধিক ভাঙনে এই ইউনিয়নের অনেক মানুষ ছিন্নমূল হয়ে পড়ে। প্রায় ২০ হাজার লোকের বসবাস এই চরে। অধিকাংশ মানুষই কৃষি ও মৎস্য আহরণ করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। এখানকার কৃষি উৎপাদন ও মৎস্য আহরণ দেশের অর্থনীতিতে বেশ ভূমিকা রেখে আসছে। বিশেষ করে চরাঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে মরিচ আবাদ হয়। ইউনিয়নে একটি উচ্চ বিদ্যালয়, তিনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাঁচটি মসজিদ, একটি বড় বাজার ও ছয়টি মৎস্য আড়ৎ রয়েছে। ভাঙনের কারণে এসব স্থাপনা এখন হুমকির মুখে। বিশেষ করে একমাত্র উচ্চ বিদ্যালয়টি এ পর্যন্ত পাঁচবার ভাঙনের শিকার হয়। এখন আবারও বিদ্যালয়টি ভাঙন হুমকিতে রয়েছে।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলে, মেঘনা নদী আমাদের বিদ্যালয়ের কাছে এসে গেছে, প্রতিদিনই ভাঙছে। আমরা আতঙ্কের মধ্যে থাকি। এর আগের ভাঙনেও আমাদের পড়াখেলার অনেক ক্ষতি হয়েছে। এখন আমাদের প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় অনেক কষ্ট করে ক্লাস করতে হয়। সরকার যেন আমাদের বিদ্যালয় রক্ষায় ব্যবস্থা নেয়।

স্থানীয় বাসিন্দা আ. রহমান বাংলানিউজকে বলেন, মেঘনার অব্যাহত ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। সরকার বাঁধ তৈরির উদ্যোগ নিলেও এখন পর্যন্ত হচ্ছে না। তবে আমরা আশা করছি সরকার শিগগিরই ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেবে। বর্তমান ভাঙনে বিদ্যালয়টি যে কোনো সময় নদী গর্ভে বিলীন হতে পারে। বিদ্যালয়টি রক্ষা করা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও সাবেক ইউপি সদস্য আবদুল হক বলেন, আমাদের বসতবাড়িসহ একমাত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি পাঁচবার ভাঙনের শিকার হয়েছে। এখন আবার ভাঙন হুমকিতে। এ অবস্থায় সরকারের পক্ষ থেকে জরুরি ব্যবস্থা নিলে বিদ্যালয়টি কমপক্ষে রক্ষা হবে। আমরা সরকারের কাছে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানাই।

চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রিফাত জামিল বাংলানিউজকে বলেন, হাইমচর উপজেলার নীল কমল ইউনিয়ন ও হাইমচর ইউনিয়নের চরাঞ্চলের ভাঙনের বিষয়টি আমরা অবগত। ইতোমধ্যে একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি ঘটনা সরেজমিন পরিদর্শন করেছে। প্রকল্প তৈরি করে পাঠানো হবে। বিদ্যালয় ভাঙন এলাকাটিও আমাদের নজরে আছে।

এদিকে সম্প্রতি চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি নীল কমল ইউনিয়নে পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ উদ্বোধন করতে গিয়ে বলেছেন, চরাঞ্চলের মানুষের ভাঙনের বিষয়টি তিনি অবগত আছেন। এখানে কিভাবে স্থায়ী বাঁধ করা যায় তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলে আলোচনা করবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।