ফেনী: ফেনী সদর উপজেলার দক্ষিণ কাশিমপুর এলাকার বাসিন্দা সানজিদা আক্তার। গত দেড় মাস আগে বালিগাঁও ইউনিয়নের আকরামপুর এলাকার ওলি আহমেদের ছেলে আবুল বাশারের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
পুলিশ ও নিহত সানজিদার পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ৭ নভেম্বর দুবাই প্রবাসী আবুল বাশারের সঙ্গে পারিবারিকভাবে ফেনী সিটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সানজিদার বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে যৌতুকের দাবিতে সানজিদার ওপর মানসিকভাবে নির্যাতন চালায় তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন। একপর্যায়ে সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) রাতে আকরামপুর এলাকার শ্বশুর বাড়ি থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেলে কাশিমপুর এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
নিহত সানজিদার মা মোহছেনা আক্তার জানান, যৌতুক লোভী স্বামী ও তার পরিবার সানজিদার ওপর বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন চালায়। তাদের প্ররোচনার শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন আমার মেয়ে। বিয়ের পর দিন থেকেই তার ওপর নির্যাতন শুরু হয়েছে। মেয়ের স্বামী বিভিন্নভাবে তাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন। নির্যাতন সইতে না পেরে মেয়ে আমার আত্মহত্যা করেছেন। আমরা আদালতের কাছে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। এটা নিশ্চিত হত্যাকাণ্ড।
তিনি আরও জানান, সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটলেও রাত ১০টার পর মৃত্যুর খবর পেয়ে সানজিদার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পাই।
এ ঘটনায় সানজিদার স্বামী আবুল বাশার, শ্বশুর ওলি আহমেদ, শাশুড়ি সাফিয়া খাতুন, ভাসুর জাফর, তার স্ত্রী রুবি বেগম, ননদ পিংকি বেগমকে আসামি করে ফেনী মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
নিহত সানজিদার মায়ের অভিযোগ, আবুল বাশার বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময় সানজিদাকে পছন্দ হয়নি বলে কটাক্ষ করতেন। পরিবারের চাপে পড়ে বিয়ে করায় কাবিনের টাকা নিয়ে চলে যেতেও বারবার চাপ প্রয়োগ করেছেন বাশার।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ফেনী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নারায়ণ চন্দ্র দাস এ ঘটনায় সানজিদার স্বামীকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনায় মামলা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০২১
এসএইচডি/আরআইএস