রাজশাহী: সাফিয়া সিলভী (১৫)। স্কুল শিক্ষিকা মা ও ব্যবসায়ী বাবার স্বপ্ন ছিল এই সিলভী।
তবে এবারের ফলাফল তার বাবা-মায়ের হৃদয়ে মেয়ে হারানোর যন্ত্রণাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ভালো ফলাফল শোনার পর সাধারণত সব বাড়িতেই খুশির বন্যা বয়ে যায়। কিন্ত সিলভীর বাড়িতে পড়ে গেছে কান্নার রোল! কারণ ঈর্ষণীয় সাফল্যের এই প্রথম ধাপ দেখে যেতে পারেনি সিলভী। এর আগেই মৃত্যু তাকে আলিঙ্গন করে নিয়ে গেছে পরপারে। যেখান থেকে আর ফিরবে না সিলভী!
সিলভীর গ্রামের বাড়ি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার পুরান তাহেরপুর গ্রামে। বাবা শফিকুল ইসলাম ও মা মরিয়ম খাতুনের একমাত্র সন্তান সে। বিয়ের ১৬ বছর পর এই দম্পতির কোলজুড়ে এসেছিল সিলভী। আক্কেলপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল সে। পরীক্ষা শেষে গত ২৭ নভেম্বর পাড়ি জমিয়েছে পরলোকে।
এসএসসি পরীক্ষা শুরুর তিনদিন আগে সিলভী হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরমধ্যেই বাসায় চিকিৎসা নিয়ে এক বিষয়ে পরীক্ষা দেয়। এরপর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজশাহী শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার অ্যাপেন্ডিসাইটিস ধরা পড়ে। অসুস্থ হওয়ার পরও সিলভী পরীক্ষা দিতে চায়। তাই অসুস্থ অবস্থায়ই পরীক্ষায় অংশ নেয় সিলভী। পরীক্ষা শেষে চিকিৎসকের পরামর্শে অস্ত্রোপচারের জন্য তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু ২৭ নভেম্বর অস্ত্রোপচারের আগেই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে মৃত্যুবরণ করে সিলভী।
বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) এসএসসির ফল প্রকাশের পর জানা যায়, সিলভী সবকটি বিষয়েই এ প্লাস পেয়েছে।
সিলভীর বাবা শফিকুল ইসলাম জানান, সিলভী তাদের একমাত্র সন্তান ছিল। লেখাপড়ায় খুবই ভালো ছিল। তাকে নিয়ে তাদের অনেক স্বপ্ন ছিল। অসুস্থ অবস্থায় পরীক্ষা দিয়েও সে এতো ভালো ফলাফল করেছে। এ ফলাফল মেয়েকে হারানোর যন্ত্রণা আজ বাড়িয়ে দিয়েছে, যা প্রাকাশের মত নয়!
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২১
এসএস/এমআরএ