ঢাকা, সোমবার, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৯ জুলাই ২০২৪, ২২ মহররম ১৪৪৬

জাতীয়

১৭ বছর ধরে ওদের টার্গেট ব্যাংক-ডাকঘরে টাকা তুলতে যাওয়া বয়স্করা 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২২
১৭ বছর ধরে ওদের টার্গেট ব্যাংক-ডাকঘরে টাকা তুলতে যাওয়া বয়স্করা  ...

ফরিদপুর: ওদের টার্গেট ব্যাংক কিংবা পোস্ট অফিসে পেনশন বা সঞ্চয়পেেত্রর টাকা তুলতে আসা বয়স্ক ব্যক্তিরা। একেক সময় একেক জেলায় গিয়ে সেখানকার তথ্য সংগ্রহ করে কাজে নামে।

এরপর কমান্ডো স্টাইলে শিকারকে ঘিরে সুবিধামতো সময়ে ছো মেরে নিয়ে যায় টাকাভর্তি ব্যাগ। এককজন ব্যাগ নিয়ে পালায়, আরেকজন পালানো রাস্তা করে দেয় আর আরেকজন থাকে পলায়ন পর চোরকে প্রটেকশন দিতে।

এভাবে ১৭ বছর ধরে চালিয়ে যাচ্ছিল এই অপরাধ। তবে এবার পুলিশের জালে গ্রেফতার হয়েছে এই সংঘবদ্ধ চক্রের দুই সদস্য। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১৩ লাখ টাকা। চক্রের অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।  

বুধবার (১৬ মার্চ) দুপুরে ফরিদপুরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অর্থ) জামাল পাশা।  

গ্রেফতার দুই জন হলেন, খুলনার হরিণটানা থানার গোলাডাঙ্গা গ্রামের মৃত ফটিক শেখের ছেলে ফারুক শেখ (৬০) ও মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থানার পূর্ব কোলা গ্রামের মো. জৈনদ্দিন ওরফে জিয়াউদ্দিনের ছেলে মো. আলী (৪৫)।  

মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) ভোররাত থেকে অভিযান চালিয়ে বুধবার (১৬ মার্চ) ভোর পর্যন্ত বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে ফারুকের নামে গাইবান্ধা থানায় অন্য একটি মামলা রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কর্মকর্তা সুমন রঞ্জন কর বলেন, গত ৬ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুরের প্রধান পোষ্ট অফিসে বাবার পেনশনের ২০ লাখ টাকা তুলতে যান নজরুল ইসলাম (৪২) নামে এক ব্যক্তি। টাকা নিয়ে বের হওয়ার সময় থেকেই তাকে ঘিরে ধরে এবং পোষ্ট অফিসে সুবিধা করতে না পেরে টাকা নিয়ে বের হওয়ার পর নজরুলকে অনুসরণ করে ব্যাংক পর্যন্ত যায়। নজরুল ম্যানেজারের কক্ষের সোফায় টাকার ব্যাগ রেখে ক্যাশ অফিসারের সঙ্গে কথা বলতে পাশের রুমে যান। এ সময় ওই তিন জন সেখানে ছিলেন। তাদের একজন টাকার ব্যাগটি নিয়ে যায়। আরেকজন রাস্তা ক্লিয়ার করে দেয় এবং অপরজন তাকে প্রটেক্ট করার জন্য অবস্থান নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে যাতে কেউ ধাওয়া করলে সে বাধা দিতে পারে।

ঘটনার তিন দিন আগে এরা ফরিদপুরে এসে কোন কোন স্থানে টাকা পয়সা লেনদেন হয় সে তথ্য সংগ্রহ করে উল্লেখ করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার জানান, ওদের পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতা হচ্ছে ওরা ব্লেড দিয়ে কেটে যতো টাকা নিয়ে যেতে পারে। ওরা জানতো সরকার কড়াকড়ি করায় এখন আর মানুষ টাকা জমা দিতে নয় বরং টাকা তুলতে পোষ্ট অফিসে যায়। সে ছকেই ওরা পোষ্ট অফিসকে বেছে নেয়।

পুলিশ বলছে, ঘটনার সময় ব্যাংকে গার্ড ছিলোনা। এঘটনায় ব্যাংকের ম্যানেজার জড়িত সম্ভাবনা না থাকলেও তার নেগলেসি আছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানানো হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরো দুই জনকে গ্রেফতার করা গেলে বাকি টাকা উদ্ধার হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২২
কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।