ঢাকা, সোমবার, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০৮ জুলাই ২০২৪, ০০ মহররম ১৪৪৬

জাতীয়

মৌলভীবাজারে পাহাড়ি ঢলে আক্রান্ত ২ লাখেরও বেশি মানুষ

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪১ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২২
মৌলভীবাজারে পাহাড়ি ঢলে আক্রান্ত ২ লাখেরও বেশি মানুষ

মৌলভীবাজার: মুষলধারে ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের ৭ উপজেলার চারটিতে আকস্মিক বন্যা এবং জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এ পর্যন্ত বন্যা কবলিত হয়েছেন দুই লাখেরও বেশি মানুষ।

পানি উঠেছে ঘরবাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।

বন্যায় ভেসে গেছে ফসলের জমি ও মাছের খামার। হঠাৎ করে বন্যা কবলিত হয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। জানা গেছে, সময় যত গড়াচ্ছে দুর্ভোগ ততই বাড়ছে।

বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে জানিয়েছেন জেলার নদী ও হাওর তীরের বাসিন্দারা। হাকালুকি, কাউয়াদিঘি, হাইলহাওর এ তিনটি হাওর ছাড়াও মনু, ধলাই, ফানাই, কন্টিনালা, জুড়ী ও কুশিয়ারা নদীর পানি বাড়ছেই।

সবচেয়ে বেশি বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছেন হাকালুকি হাওর তীরের বাসিন্দারা। বিদ্যুতের সাব স্টেশন পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বড়লেখা, জুড়ী ও কুলাউড়ার অধিকাংশ এলাকা অন্ধকারে ডুবে আছে। জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কুশিয়ারা নদী ও হাকালুকি হাওড়ের পানি বেড়ে বড়লেখার বহুমগ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যা দুর্গত মানুষের সংখ্যা প্রায় এক লাখ ষাট হাজার। পৌর এলাকা ও দাশটি ইউনিয়নের দুইশো গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

কুলাউড়া উপজেলায় নদ-নদীসহ হাকালুকি হাওরের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সাতটি ইউনিয়ন ভূকশিমইল, ভাটেরা, জয়চন্ডী, ব্রাহ্মণবাজার, কাদিপুর, ও কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের মহিষমারা গ্রামের ফানাই নদীর বাঁধ ভেঙ্গে মহিষমারা, বাবনিয়া, হাশিমপুর, ভাতাইয়া, পুরশাই গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। অর্ধ শতাধিক গ্রামের প্রায় তিন হাজার পরিবার পানি বন্দি অবস্থায় নিজ নিজ বাসস্থানেই রয়েছেন।

জুড়ী উপজেলার আটাশটি গ্রামের প্রায় ১৬ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন। এসব গ্রামের অধিকাংশ রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জনসাধারণের চলাচলে দুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এ পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ প্রায় শতাধিক পরিবারকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। এছাড়াও জায়ফরনগর ইউনিয়নের গৌরীপুর ও সাগরনাল ইউনিয়নের কাশিনগর গোয়ালবাড়ি পশ্চিম শিলুয়া গ্রামে জুড়ী নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় ৬টি ইউনিয়ন খলিলপুর, মনুমুখ, আখাইলকুড়া, কনকপুর, কামালপুর, চাঁদনীঘাট ইউপির নিম্নাঞ্চল আংশিক প্লাবিত হয়েছে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, জেলার কুশিয়ারা, মনু ও ধলাই নদীর চারটি পয়েন্টের রোববার (১৯ জুন) বিকেল ৩টা পর্যন্ত পানির প্রবাহ স্থিতিশীল রয়েছে। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এসব পয়েন্টে পানি বিপদসীমার প্রায় কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল।

মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মীর নাহিদ আহসান বাংলানিউজকে বলেন, বড়লেখা উপজেলার দশটি ইউনিয়নই প্লাবিত, জুড়ী উপজেলার দুটি ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামসহ রাজনগর উপজেলার এবং কুলাউড়া উপজেলার কিছু ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত অবস্থায় রয়েছে। আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন উপজেলার বন্যার সার্বিক পরিস্থিতির খোঁজখবর নিতে কন্ট্রোলরুম খুলেছি। বন্যা-কবলিত এলাকায় আমরা বিভিন্ন ত্রাণ-সহায়তা দিচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪১ ঘণ্টা, ১৯ জুন, ২০২২
বিবিবি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।