ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

সাংবাদিকদের বাকযুদ্ধ ও কিছুকথা

আহমেদ আরিফ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩২ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৩
সাংবাদিকদের বাকযুদ্ধ ও কিছুকথা

বহুল আলোচিত গাজীপুর সিটি নির্বাচনে রাজনীতির হিসেব নিকেশ নিয়ে আলোচনার মাঝেই মিডিয়া পাড়ার হট টপিক সময় এবং একাওর টিভির সাংবাদিকদের বাকযুদ্ধ। মিডিয়া সম্পর্কে কৌতুহুলীদের কাছে ব্যাপারটা `সাংবাদিকদের সাংঘাতিক বাকযুদ্ধ`।



সময়, একাত্তর, ইনডিপেনডেন্ট টিভির পর মোহনা টিভির আব্দুর রউফের `কলুষিত হচ্ছে ভাষা ও সাংবাদিকতা` শিরোনামের সময়পোযোগী লেখাটি রীতিমত সব চ্যানেলের জন্যই বেশ বিব্রতকর। গ্রাম্য ভাষায় বলতে গেলে সব চ্যানেলকেই বাঁশ দিয়েছেন আব্দুর রউফ। বাদ দেননি আব্দুর রউফের কর্মস্থল মোহনা টিভিকেও।

তথ্যের বিভ্রান্তি,ভুল বানান, খিচুড়ী মার্কা বাক্য ব্যবহারে সবগুলো চ্যানেলেরই যে প্রায় একই অবস্থা টিভি চ্যানেলগুলোর সাংবাদিকদের বাকযুদ্ধে সেটা স্পষ্ট প্রমাণিত।

সাংবাদিকদের বাকযুদ্ধে স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলগুলো নিয়ে একজন দর্শক হিসেবে কিছু কথা লেখার লোভ সামলাতে পারলাম না।

টিভি সাংবাদিকতার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বিনয়ের সাথে বলছি,বাংলাদেশের স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলের সংখ্যা বাড়লেও সাংবাদিকতার মান বাড়েনি। বরং নিম্নমূখী হয়েছে বলা যায়।

টিভি চ্যানেলগুলোতে কর্মরত বেশীর ভাগ সাংবাদিকেরই লাইভ সাংবাদিকতা করার যোগ্যতা আছে বলে মনে হয়না। লাইভ টেলিকাস্টের সময় বেশীর ভাগ সাংবাদিককেই বাক্যের শুরুতে আ্যা এ্যা শুরু করে দেয়। অস্পষ্ট উচ্চারণে পাশাপাশি প-ফ,জ-ঝ,গ-ঘ,ব-ভ,শ-স-ষ বিভ্রাট রীতিমত ভয়াবহ। একটা বাক্যকে গুছিয়ে বলতে একই বাক্যে কয়েকবার বলার ঘটনা অহরহ ঘটে। যা রীতিমত দর্শকের জন্য চরম বিরক্তিকর।

যারা খবর পড়েন বিশেষ করে নারী নিউজ প্রেজেন্টশনারদের সাজগোজ দেখলে মনে হয় বিউটি পার্লার থেকে সোজা নিউজরুমে এসেছেন। একজন নারী বিয়ে বাড়িতে যে সাজগোজে যায় অমন টাইপের সাজগোজ নিউজ রিডারদের মানায় কি? বিশ্বের জনপ্রিয় স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলগুলোর নারী নিউজ রিডাররা পর্দায় আসেন সাধামাটা ভাবে। কিন্তু, বাচন ভঙ্গি, নিউজ পড়ার স্টাইলের কারণে দর্শকের মন জয় করে নিয়েছেন।

নিউজ রুম এবং লাইভ সাংবাদিকতার পর টিভি চ্যানেলগুলোর দর্শকদের আকর্ষনের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু টকশো। অপ্রিয় হলেও সত্য যে, টকশো উপস্থাপকদের অনেকেই আমন্ত্রিত অতিথিদের চাইতে বেশী কথা বলেন!!নিজেদের রাজনৈতিক বিশ্বাস আমন্ত্রিত অতিথিদের উপর চাপিয়ে দেন।

`ম` আদ্যক্ষরের একজন উপস্থাপিকাকে প্রায় দেখা যায় আমন্ত্রিত অতিথিদের থামিয়ে দিয়ে নিজের মতামত দিতে শুরু করেন। এবং নিজেই বিরোধী মতের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। একজন উপস্থাপিকা এমন করার অধিকার রাখেন কি না তা বিচারের ভার পাঠকের উপরই ছেড়ে দিলাম।

টিভি চ্যানেলগুলোর সাংবাদিকদের গঠনমূলক যে সাইবার বাকযুদ্ধ শুরু হয়েছে একজন দর্শক হিসেবে আমি সেটাকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি। কারণ,গঠনমূলক সমালোচনা ভাল কিছু দিতে পারে দর্শকদের। আমরা দর্শকরা চাই আমাদের টিভি চ্যানেলগুলো বিশ্বের জনপ্রিয় চ্যানেলগুলোর সাথে যেন তাল মিলিয়ে চলতে পারে।

* আহমেদ আরিফ, বাংলানিউজের একজন পাঠক। ইমেল-ahmedarif2011@gmail.com


বাংলাদেশ সময়: ১৫২০ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৩
এনএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।