ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

বেকারদের কর্মসংস্থানে ৭ দফা দাবি যুব অধিকার পরিষদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০২৩
বেকারদের কর্মসংস্থানে ৭ দফা দাবি যুব অধিকার পরিষদের

ঢাকা: বেকারদের কর্মসংস্থানে প্রতি বছর ২৫ লাখ কর্মসংস্থান তৈরিসহ ৭ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ।

শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক যুব সমাবেশে এসব দাবি জানান গণঅধিকার পরিষদের সহযোগি এই সংগঠনটির নেতারা।

যুব সমাবেশ গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রাশেদ খান বলেন, অনেক যুবক চাকরি না পেয়ে হতাশায় আত্মহত্যা পর্যন্ত করছে। এর দায় সরকারের, এ সরকার ব্যর্থ। প্রতিবছর দেশ থেকে ৭২ হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। গত ১২ বছরে ১৪ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। অর্থ পাচার করে দেশকে দেউলিয়া করা হচ্ছে। অথচ এই টাকা দেশে থাকলে শিল্প কলকারখানা গড়ে তুলে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা যেতো। কিন্তু সরকারের সেদিকে মনোযোগ নেই। আর পাচারকারীদের ধরবে কারা? সরকারের লোকজনই তো পাচারের সঙ্গে জড়িত।

সভাপতির বক্তব্যে যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোরশেদ মামুন বলেন, বর্তমান সরকার গত ১৪ বছর ক্ষমতায় থেকে যুব সমাজকে জীবিকার নিরাপত্তা দেওয়ার বদলে, বেকারত্ব উপহার দিয়েছে। ২০২২ সালের আইএলও তথ্য মতে, দেশে তরুণ বেকারের সংখ্যা ৭ কোটি ৩৫ লাখ। ঘরে ঘরে চাকরি দেওয়ার কথা বলে, আওয়ামী লীগ ঘরে ঘরে বেকারত্বের অভিশাপ পৌঁছে দিয়েছে। যুবকদের জীবিকা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করতে পারলে ডিজিটাল ও স্মার্ট বাংলাদেশের নামে ধোঁকাবাজি স্বপ্ন দেখিয়ে লাভ হবে না।

যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান বলেন, দেশের অধিকাংশ তরুণ সমাজকে কর্মহীন রেখে কোনো দেশ ডিজিটাল বা স্মার্ট হতে পারে না। আজকে যুবকদের কর্মসংস্থানের বদলে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে দেশের অর্থনীতিকে আরও ভঙ্গুর করে দিয়েছে। ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের এক সাবেক সভাপতিই ২ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। সম্প্রতি দেশের ৮-৯টি ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে! আওয়ামী লীগের স্মার্ট বাংলাদেশ মানেই মানি লন্ডারিংয়ের বাংলাদেশে, ভোট চুরির বাংলাদেশে।

বেকারদের কর্মসংস্থানে যুব অধিকার পরিষদের ৭ দফা দাবি হলো- কর্মসংস্থান মৌলিক অধিকার হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে। প্রতি বছর অন্তত ২৫ লাখ কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে; চাহিদা ভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে; আবেদন ফি, ঘুষ, প্রভাবশালীর রেফারেন্স, জামানত, বয়সসীমা মুক্ত চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারি-বেসরকারি চাকরির সকল বৈষম্য দূর করতে হবে; ইউনিয়নভিত্তিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে স্থানীয় উৎপাদন উপযোগী জনশক্তি তৈরি করতে হবে; শিক্ষা বা প্রশিক্ষণ সার্টিফিকেট জামানতে সুদবিহীন ঋণ প্রদান করতে হবে। কর্ম ও ঋণ আওতার বাইরের সবার জন্য বেকার ভাতা দিতে হবে; শিক্ষিত প্রতিবন্ধীদের যোগ্যতা অনুসারে শতভাগ চাকরি নিশ্চিত করতে হবে। নিরক্ষর অসহায় প্রতিবন্ধীদের স্বাভাবিক জীবন ধারণের জন্য উপযুক্ত বরাদ্দ দিতে হবে; জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ, প্রশিক্ষিতদের রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে বিদেশে প্রেরণ, বিদেশে পাঠানোর সব স্তরে গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক (ভিআইপি) হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।

যুব অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্তাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় যুব সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান, হাসান আল মামুন, যুগ্ম সদস্য সচিব মো. আতাউল্লাহ, আইনজীবী অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ব্যারিস্টার জিসান মোহসিন, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি মোল্লা বিন ইয়ামিন, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান প্রমুখ।

এ সময় ৭ দফা দাবি আদায়ে আগামী ২০ জানুয়ারি দেশের প্রতিটি জেলা ও মহানগরে মানববন্ধন কর্মসূচির ঘোষণা দেন যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোরশেদ মামুন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০২৩
এসসি/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।