ঢাকা: নিত্যপণ্য ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে আগামী ১৬ জানুয়ারি সারাদেশের জেলা, উপজেলা, মহানগর, পৌর শহর ও বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ মিছিল করার ঘোষণা দিয়েছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)।
বুধবার (১১ জানুয়ারি) রাজধানীর পূর্ব পান্থপথের দলীয় কার্যালয়ের সামনে এলডিপির গণ-অবস্থান থেকে নতুন এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন দলটির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. রেদোয়ান আহমেদ।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ভারত থেকে উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ কিনছে। দেশের মানুষের ওপর এর ভার চাপিয়ে দিতে আবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে। এর বিরুদ্ধে আমরা আগামী ১৬ ডিসেম্বর উপজেলা থেকে শুরু করে দেশের সব মহানগর, বিভাগ ও জেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করব।
ঢাকার কর্মসূচি পালন করা হবে এলডিপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে। সেদিন বেলা ১১টায় এখান থেকে মিছিল শুরু হয়ে মালিবাগে গিয়ে শেষ হবে।
এর আগে বিএনপি ঘোষিত ১০ দফার সমর্থনে এবং বর্তমান সরকারের পদত্যাগের দাবিতে দুপুর পৌনে ১২টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দলীয় কার্যালয়ের সামনে গণ-অবস্থান কর্মসূচি পালন করে রাজনৈতিক দলটি।
গণ-অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এলডিপির মহাসচিব বলেন, দেশে মানবাধিকার লুণ্ঠিত হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় গুম, হত্যা, রাহাজানি, ছিনতাই থেকে শুরু করে আজ দেশের সব পর্যায়ে দুরবস্থা বিরাজ করছে। প্রশাসন থেকে শুরু করে সব কাঠামো আজ ভেঙে পড়েছে। একটি নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার থাকলে এ ধরনের অপকর্ম সম্ভব হতো না।
তিনি আরও বলেন, আজ সারা পৃথিবীর কাছে প্রমাণিত, এই দেশে গণতন্ত্র বলে কোনো বস্তু নেই, মানুষের কথা বলার অধিকার নেই, মানুষের ভোটাধিকার নেই। আজ যারা নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে, তারাই নির্বাচিত হয়। এই প্রহসনের নির্বাচনকে সত্যিকারের নির্বাচন দেখানোর জন্য কিছু কিছু জায়গায় তারা (আ. লীগ) অপকৌশল প্রয়োগ করে। রংপুরে এই অপকৌশল প্রয়োগ করে তারা দেখানোর চেষ্টা করেছে, তারা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। কিন্তু আমরা বলতে চাই, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ছাড়া কোনো জাতীয় নির্বাচন হবে না।
বর্তমান সরকার মেগা মেগা প্রকল্পগুলোর কোনটিই নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়ন করতে পারেনি অভিযোগ করে এই নেতা বলেন, অনেকে বিভিন্ন জায়গায় বলেন, পাকিস্তানিরাও এই সরকারের মতো অত্যাচার আমাদের ওপর করেনি। মুক্তিযুদ্ধের আগে তারা এই জাতিকে নিষ্পেষিত করেছে, নির্যাতন করেছে, মা-বোনের ইজ্জত লুণ্ঠন করেছে। কিন্তু এই দেশকে অর্থনৈতিকভাবে বিপন্ন করার জন্য তারা কোনো কাজ করেনি।
তিনি আরও বলেন, এই জাতিকে যদি লুণ্ঠনকারীদের হাত থেকে রক্ষা করতে হয়, তাহলে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রয়োজন। সেই নির্বাচন একমাত্র নির্দলীয় সরকারের অধীনে করলে হয়তো এই দেশ টিকে থাকতে পারবে।
ছাত্রলীগের অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদেরের মঞ্চ ভেঙ্গে পড়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে এলডিপি মহাসচিব বলেন, মঞ্চ যদি ঠিকভাবে তৈরি না হয়, কন্ট্রাক্টর যদি ঠিকভাবে তৈরি না করে, আর যতটুকু ভার নিতে পারবে, তার থেকে বেশি বোঝা যদি রাখা হয়, তাহলে সেই মঞ্চ ভেঙে যাবে, এটাই স্বাভাবিক। এই সরকার যে লুণ্ঠন করেছে, জাতীয় সম্পদ লুট করেছে, সেই লুটের বোঝায় ওবায়দুল কাদেরের মতো এই সরকারের পতনও অনতিবিলম্বে হবে।
গণ-অবস্থান কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য এস. এম মোরশেদ, অ্যাড. নেয়ামুল বশির, যুগ্ম মহাসচিব বেল্লাল মিয়াজী, আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. আব্দুল হাশেম, প্রচার সম্পাদক অ্যাড. মফিজুল ইসলাম, গণতান্ত্রিক স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মো. সোহেল, আহ্বায়ক খালেদ বিন জসিমসহ দলের বিভিন্ন শাখা ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এর আগে সকাল থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন এলডিপি কেন্দ্রীয় কমিটি এবং এর শাখা ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। শাখা ও অঙ্গ সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে গণতান্ত্রিক মহিলা দল, গণতান্ত্রিক যুবদল, গণতান্ত্রিক স্বেচ্ছাসেবক দল, গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক দল, এলডিপির ঢাকা মহানগর পূর্ব, ঢাকা মহানগর পশ্চিম, ঢাকা মহানগর উত্তর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৩
এসসি/আরএইচ