ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলির সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, ১০ জানুয়ারি এক উজ্জ্বল জ্যোতির্ময় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। যুদ্ধের পরে দেশে সব কিছুই ধ্বংস হয়েছিল।
শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে ছাত্রলীগের আয়োজিত ‘জাতির পিতা ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন: ভেঙেছে দুয়ার এসেছে জ্যোতির্ময়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো সামাদ।
বিশেষ আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বক্তব্য রাখেন।
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ঘটনার স্মৃতি চারণ করতে গিয়ে মতিয়া চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে মানুষের এত আগ্রহ ছিল যে বিমান বন্দরে মানুষের লোকারণ্যের কারণে অনেকবার বিমান মাটি স্পর্শ করতে গিয়েও পারেনি। ফাঁসির মঞ্চ থেকে নিজের স্বদেশে ফিরে এসে বঙ্গবন্ধুর অনুভূতি কেমন ছিল সেটা কখনো কেউ উপলব্ধি করতে পারবে না। একমাত্র বঙ্গবন্ধুর পক্ষেই তা সম্ভব। বিমান থেকে নেমে তিনি বাংলার মাটিতে এক উজ্জ্বল জ্যোতির্ময় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। সেদিন তিনি যে বক্তব্যটা দিলেন, তার কণ্ঠ বারবার আবেগে রূদ্ধ হয়ে আসছিল। বঙ্গবন্ধুর সেই বক্তব্য সাধারণ জনতাকে স্পর্শ করে গিয়েছিল। তিনি মানুষের হৃদয়ে যে উচ্চাসন দখল করেছিলেন তা আর কারো দ্বারা সম্ভব না।
তিনি বলেন, বাংলার মাটি ও মানুষকে তিনি শূন্য থেকে গড়ে তুলেছেন। তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের যে গ্যারান্টি বঙ্গবন্ধু দিয়েছিলেন তার কন্যার হাত ধরে তা আজ বাস্তবে রূপ নিয়েছে। তার প্রমাণ আজ আমাদের সামনে। পাকিস্তান পার্লামেন্টের একজন মেম্বার বক্তব্য দেওয়ার সময় বলেন, ‘আমরা পাকিস্তানকে সুইজারল্যান্ড বানাবে’। এর জবাবে আরেকজন মেম্বার উঠে দাঁড়িয়ে বলেন আমরা সুইজারল্যান্ড চায়না, আমাদেরকে বাংলাদেশ বানিয়ে দাও। এ জিনিসগুলো শুনলে নিজের রাজনৈতিক জীবন স্বার্থক মনে হয়। একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ অংশগ্রহণকারী হিসেবে এবং বঙ্গবন্ধুকে নেতা মেনে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার একজন কর্মী হিসেবে আমার জীবনে আর কি চায়।
বিশেষ আলোচক বক্তব্যে বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, শুধু ১০ জানুয়ারি নয়, একজন কৃতজ্ঞ বাঙালি হিসেবে প্রতিদিনই আমাদের বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করা উচিত। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে বঙ্গবন্ধু কখনো আত্মগোপনে থাকেননি, পালিয়ে বেড়াননি। অসীম সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে তিনি পাকিস্তানিদের কাছে কখনো মাথা নত করেননি।
তিনি বলেন, জাতির পিতার শাসনামলে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ৬ শতাংশ, যা আমরা এখনো স্পর্শ করতে পারিনি। বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয় তখন বাংলাদেশের জিডিপি ছিল ২৭৮ ডলার। সেই সময়ে পরাশক্তি চীনের জিডিপি ছিল ১৭৮ ডলার। যে পাকিস্তানকে আমরা পরাজিত করেছিলাম সে পাকিস্তানের জিডিপি ছিল ১৬৮ ডলার এবং ভারতের ছিল ১৫৮ ডলার। আজ বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে এই দেশ মালয়েশিয়া সিঙ্গাপুরের মতো একটা উন্নত দেশে রূপান্তরিত হতো। তারা শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেনি একটি দেশের ভবিষ্যতকে হত্যা করেছে।
সভাপতির বক্তব্যে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, আজকে আমরা মধ্যম আয়ের দেশ হয়েছি ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করতে পেরেছি, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করতে পেরেছি, কিন্তু আজকের দিনেও আমাদের শহিদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করে, সংবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাদের কাছে আমাদের সংবিধান গুরুত্বপূর্ণ নয়, তাদের কাছে বিদেশিদের প্রেসক্রিপশন গুরুত্বপূর্ণ। তাদের কাছে বাংলার মানুষের ভোট গুরুত্বপূর্ণ নয়, তাদের কাছে বাংলার মানুষের লাশ গুরুত্বপূর্ণ। আজকে আমরা শপথ গ্রহণ করতে চাই, ক্রিমিনাল গ্যাং, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক বিএনপি-জামায়াতের বিষ দাঁত আমাদের ভেঙে দিতে হবে।
বাংলাদেশ সময় ঘণ্টা: ১৫১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২৩
এসকেবি/জেএইচ