ঢাকা: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেছেন, আওয়ামী লীগ দেশ থেকে যে লুট করেছে তা ফিরিয়ে দিলে দেশে কোন অভাব থাকবে না।
শুক্রুবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এড.রুহুল কবির রিজভী আহমেদের নি:শর্ত মুক্তির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করে বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলন।
বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, আপনারা দেশ থেকে যে ৫২ হাজার কোটি টাকা লুট করেছেন তা কৃষক, শ্রমিকদের মাঝে দিয়ে দেন। এই টাকা দিয়ে মিল কারখানা করেন অনেক লোকের কর্মসংস্থান হবে। আপনারা যে লুটপাট করেছেন তার না করলে বিদ্যুতের দাম বাড়াতে হতো না। ডিজেল কেরোসিনের দাম বাড়াতে হতো না। আপনারা এই অর্থ ফিরিয়ে দিলে নিত্যপণ্যের মূল্য স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
বুলু বলেন, চাল গুদামের মালিক যারা আওয়ামী ঘরানার তারাই দাম বাড়িয়েছে। তারা চাল মজুদ করে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে চালের দাম বাড়াচ্ছে। যারা আজ চাল আমদানি করার লাইসেন্স নিচ্ছেন তারা সবাই আওয়ামী ঘরানার। উত্তরবঙ্গের একটি গোডাউনে ৫৫ লাখ টন চাল মজুদ পাওয়া গেল। কিন্তু কোথাও সেই কোম্পানির নাম আসে নাই। সরকারের পক্ষ থেকেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বেগম খালেদা জিয়া, রুহুল কবির রিজভীসহ সকল রাজবন্দিরদের মুক্তি সরকারের কাছে আর চাইবেন না মন্তব্য করে বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, রুহুল কবির রিজভীকে এতগুলো মামলা দিয়ে কেন আটকে রাখা হয়েছে। পত্র পত্রিকায় রিজভীর পরিবার অনেক বার বলেছেন তিনি ভাল করে চলতে পারেন না। তাকে লাঠিতে ভর দিয়ে চলাফেরা করতে হয়। তিনি অসুস্থ, তাকে কোনো চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু তিনি সৎ রাজনীতিবিদ দেখে তাকে সরকার ভয় পায়। তাই আমরা সরকারকে বলতে চাই সব রাজবন্দীদের অতি দ্রুত মুক্তি দিতে হবে।
আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা হবে জানিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি অঙ্গনে আজকে আন্দোলন সংগ্রাম চলছে। এই সরকারকে আর কেউ ক্ষমতায় রাখতে পারবে না। আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে সরকারের পতন হবে।
তিনি বলেন, গতকাল প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আন্দোলন করে নাকি উনাকে নামানো যাবে না। আপনি আমাদের হাজারো নেতাকর্মীকে গুম হত্যা করেছেন। তারপরও আপনি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) বলতে চান আপনি ক্ষমতায় থাকবেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আপনি আর থাকতে পারবেন না। আন্দোলনের মাধ্যমেই সরকারের বিদায় হবে। আপনার (শেখ হাসিনা) পতনের পরেই বাংলাদেশে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। আর একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশে একটি জাতীয় সরকার গঠিত হবে।
তিনি বলেন, আগামীকাল ১০টি বিভাগীয় সমাবেশ হবে। সেখান থেকে নতুন কর্মসূচি আসবে। ইনশাআল্লাহ আন্দোলনের মাধ্যমেই আপনার (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) বিদায় হবে। আর বিএনপির আন্দোলন ছাড়া নির্বাচন করে কখনই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যেতে পারবে না। আপনার পতনের পরই বাংলাদেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে।
অবস্থান কর্মসূচির সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক এম জাহাঙ্গীর আলম। পরিচালনা করেন নাগরিক অধিকার আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাড. নাসিরউদ্দিন বেপারী।
অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাড. সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৫, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৩
ইএসএস/এসএএইচ