ঢাকা: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, কাউকে ক্ষমতায় নিতে, কারও বি-টিম হতে বা কারও দাসত্ব করতে আমাদের রাজনীতি নয়। আমরা দেশ ও জাতীর স্বার্থে রাজনীতি করব।
বৃহস্পতিবার (০৬ এপ্রিল) বিকেলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় বর্ধিত সভা শেষে ইফতার অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য নির্বাচন একটা ব্যবসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকেই পয়সা খরচ করে নির্বাচন করতে আসেন, নির্বাচিত হয়ে সেই পয়সা আদায় করেন। আমরা এমন সংস্কৃতি থেকে রাজনীতিকে বের করতে চাই। নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে ত্যাগী নেতা ছাড়া কাউকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অবস্থার প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত হবে, জাতীয় পার্টি এককভাবে নির্বাচন করবে নাকি জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করবে। দেশের মানুষের প্রত্যাশা, নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন এবং সিনিয়র নেতাদের মতামতের ভিত্তিতেই নির্বাচনের আগে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ জাপা নেতা আরও বলেন, শক্তিশালী দল হলেই সবাই আমাদের সঙ্গে জোটবদ্ধ হতে আসবে। আর সেক্ষেত্রে শুধু জাতীয় সংদস নির্বাচন নয়, প্রতিটি স্থানীয় সরকার পর্যায়ের নির্বাচনেও জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করতে হবে। মানুষের আস্থা অর্জনের জন্যও পার্টিকে শক্তিশালী করতে হবে। সংগঠন শক্তিশালী করে আমরা নিজস্ব রাজনীতি নিয়ে গণমানুষের সামনে গেলে উজ্জ্বল ভবিষ্যত অপেক্ষা করছে।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, রমজানে অনেক মানুষ চাহিদা মতো খাদ্য পাচ্ছে না। আধা পেট খেয়ে রমজান পালন করছে বেশিরভাগ মানুষ। সাধারণ মানুষ দারুণ অর্থ-কষ্টে আছেন। বিভিন্ন জরিপে জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ মাছ-মাংস খেতে পারছে না অনেক দিন ধরে। প্রতিদিনই বেশির ভাগ মানুষ দারিদ্যসীমার নিচে নেমে যাচ্ছে। অপ্রয়োজনীয় এবং অবাস্তব মেগা প্রকল্প তৈরি করে হাজার কোটি টাকা তসরুপ করা হয়েছে। মেগা প্রকল্পগুলোতে প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি টাকা খরচ করা হয়েছে। সময় ব্যয় হচ্ছে অনেক গুণ। দেশের মেগা প্রকল্পগুলো কখনোই লাভজনক হবে না। সরকারের হাতে টাকা নেই, তাই মূল্যস্ফীতি হচ্ছে। নতুন করে টাকা ছাপানো হচ্ছে আবার বিদেশ থেকে আমদানি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে ডলারের দাম আরও বাড়ছে, কমে যাচ্ছে টাকার মান। এর ফলে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। আমরা এই অবস্থা থেকে দেশকে মুক্ত করতে চাই। আমরা স্বাধীনতার চেতনায় ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই।
এসময় জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেন, ৩২ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতার বাইরে থেকেও জাতীয় পার্টি রাজনীতিতে টিকে আছে। এটা আমাদের জন্য বিশাল অর্জন। দেশে রিজার্ভ নেই, তাই সরকার দেশ চালাতে হিমশিম খাচ্ছে।
তিনি বলেন, আগে ৩০ ভাগ ভাসমান ভোট ছিলো। এখন ভাসমান ভোট ৬০ ভাগের বেশি। তাই ভালো রাজনীতি নিয়ে মাঠে থাকলেই বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা আছে। শক্তিশালী দল তৈরি করলে, জাতীয় পার্টির জোটের প্রয়োজন হবে না।
কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, জোট নিয়ে চিন্তা করা কিছু নেই। সময় বলে দেবে, কার সঙ্গে জোট হবে। জাতীয় পার্টি হচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতির টার্নিং পয়েন্ট। কয়েক দিন আগে কূটনৈতিকদের সম্মানে ইফতার অয়োজন করে জাতিকে দেখিয়ে দিয়েছে জাতীয় পার্টি এখনও অনেক কৌশলী এবং শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তি।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০২৩
এসএমএকে/এসএএইচ