বাগেরহাট: বাগেরহাটের রামপালে ককটেল বিস্ফোরণ মামলায় বিএনপি-জামায়াতের আট নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, সোমবার (১৪ আগস্ট) সকালে রামপালের বেতকাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনের মাঠে জড়ো হয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় দল দুটির নেতাকর্মীরা।
এ ঘটনায় রামপাল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শেখ মো. আজগর আলী বাদী হয়ে ১৮ জনের নাম উল্লেখ ছাড়া অজ্ঞাত ১৫-২০ জনকে আসামি করে মামলাটি করেন।
পরে এ মামলায় আটক আটজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- রামপাল উপজেলার গৌরম্ভা ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাহফুজ আকুঞ্জী (৪৫), গৌরম্ভা ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মো. আলমগীর হোসেন (৪৮), জামায়াত কর্মী মো. তরিকুল ইসলাম (৪৬), গাজী আরাফাত (৩৫), শেখ খবির উদ্দিন (৫২), মোস্তাফিজুর রহমান (৪২), মোল্লা আব্দুর রাজ্জাক (৫৮) ও মো. জুলফিকার আলী (৪৫)।
পুলিশ জানায়, সোমবার (১৪ আগস্ট) সকাল ৭টার দিকে বেতকাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবনের সামনের মাঠে জড়ো হয়ে নাশকতার উদ্দেশে বিস্ফোরক পদার্থ মজুত করা, হেফাজতে রাখা ও বিস্ফোরণ ঘটানোর অভিযোগে আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এসময় কালো টেপে মোড়ানো দুটি অবিস্ফোরিত ককটেল, বিস্ফোরিত ককটেলের সাতটি জালের কাঠি ও দুটি টিনের অংশ, আটটি লোহার রড, ১৩টি বাঁশের লাঠি, একটি লোহার হাঁসুয়া জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
স্বজনদের দাবি, রাজনৈতিক হয়রানির উদ্দেশে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত গৌরম্ভা ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাহফুজ আকুঞ্জীর ছেলে মাহাদী আকুঞ্জি বলেন, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে রামপাল থানার ওসি সাহেব দেখা করবেন বলে আমার আব্বাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গেছে গৌরম্ভা ফাঁড়ি পুলিশ। পরে সকাল ৯টার দিকে আমরা ফাঁড়িতে গিয়ে জানতে পারি, রাজনৈতিক মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিকেলে শুনলাম সকাল ৭টায় আব্বাকে বেতকাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবনের সামনে থেকে ককটেল বিস্ফোরণের মামলায় গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ মিথ্যা মামলা থেকে আব্বার মুক্তি চাই।
এদিকে বেতকাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয় এলাকার স্থানীয় ইউপি সদস্য উজ্জ্বল মজুমদার বলেন, বেতকাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে এমন কোনো বিষয় আমার জানা নেই।
জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, বিনা অপরাধে বিভিন্ন এলাকা থেকে জামায়াতের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গায়েবি মামলা দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠাচ্ছে। রাজনৈতিক উদ্দেশে হয়রানিমূলক মামলা ও গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা জানাই। সেই সঙ্গে কারাগারে থাকা নেতাকর্মীদের মুক্তি চাই।
এদিকে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এটিএম আকরাম হোসেন তালিম বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশে প্রায়ই বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে মামলা দেওয়া হচ্ছে। এসব গায়েবি মামলায় নিরপরাধ নেতাকর্মীদের কারাগারে পাঠাচ্ছে পুলিশ।
রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আশরাফুল ইসলাম বলেন, বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০২৩
এসআই