ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

বিএনপি-জামায়াতের ব্যর্থ আন্দোলনে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ: বাহাউদ্দিন নাছিম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০২৩
বিএনপি-জামায়াতের ব্যর্থ আন্দোলনে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ: বাহাউদ্দিন নাছিম সভায় বক্তব্য রাখছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। ছবি: ডি এইচ বাদল

ঢাকা: বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীকে গণতন্ত্রের ভক্ষক আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, এ অপশক্তির ব্যর্থ আন্দোলনে দেশের মানুষ এখন অতিষ্ঠ।

সোমবার (০৪ ডিসেম্বর) মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ শেখ ফজলুল হক মনির ৮৫তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও ‘তারুণ্যের জয়যাত্রা’ শীর্ষক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রাজধানী বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে এ আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে যুবলীগ।

বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বিএনপি-জামায়াত যখন অবরোধ ডাকে, তখন আমরা দেখি রাস্তায় রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম। তাদের হরতালের কারণে মানুষ এখন হরতালকে ঘৃণা করতে শুরু করেছে। অথচ এ অপশক্তি জানে না দেশে স্বৈরাচারবিরোধী অন্দোলনে, গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে হরতাল করেছে, অবরোধ করেছি জনগণের স্বার্থে, মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। সেদিন আমরা দেখেছি, দেশের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়িয়ে হরতাল-অবরোধকে সমর্থন করে সফল করেছে।

বিএনপি-জামায়াতের অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার পথে উল্লেখ করে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বিএনপি-জামায়াতের হরতাল-অবরোধের নামে বোমা মেরে, সন্ত্রাস করে, গান পাউডার ছিটিয়ে বাস ও গাড়িতে আগুন দেয়। এগুলোর নাম যদি হয় হরতাল, তাহলে সেই অবরোধ, সেই হরতালে দেশের মানুষের মনে ঘৃণার সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘৃণাবোধের কারণে এবং বিএনপি-জামায়াত তাদের অপকর্ম, অপরাজনীতি, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি, খুনের রাজনীতির কারণে তাদের শেষ অস্তিত্বটুকুও বিলীন হওয়ার পথে।

তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত রাতের অন্ধকারে পটকা মারে। এ পটকা মেরে আর যাই হোক মুজিব আদর্শের সৈনিকদের, শেখ হাসিনার সৈনিকদের ভয় দেখানো যাবে না। দেশের মানুষ বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্রের রাজনীতি, দুর্নীতির রাজনীতি, নাশকতার রাজনীতি কায়েম করতে দেবে না। আপনারা (নেতাকর্মী) সতর্ক থাকবেন, সজাগ থাকবেন। আপনাদের সতর্ক অবস্থানের মাধ্যমে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসের রাজনীতি, ভয়ের রাজনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে।

শহীদ শেখ ফজলুল হক মনির কথা স্মরণ করে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, মনি ভাই সম্পর্কে আজকের তরুণ সমাজের অনেক কিছু জানার প্রয়োজন আছে। ঘাতকরা, স্বাধীনতাবিরোধী চক্র, সাম্রাজ্যবাদী চক্র জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার জন্য শেখ ফজলুল হক মনি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনিকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। ওই খুনি চক্র যারা পাকিস্তানের দালাল, পাকিস্তানের সাম্প্রদায়িক রাজনীতির আদর্শ বিশ্বাস করতো, তারা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতার পরিবারসহ শেখ ফজলুল হক মনিকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে পরাজয়ের প্রতিশোধ নিয়েছে।

তিনি বলেন, শহীদ শেখ ফজলুল হক মনি সব কিছুর ঊর্ধ্বে উঠে জাতির পিতার আদর্শের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করেছেন। আমাদের শহীদ শেখ ফজলুল হক মনির মতো নিঃস্বার্থ হয়ে মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধকে রক্ষা করার জন্য, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য সবাই মিলে যদি কাজ করতে পারি, তাহলেই শেখ ফজলুল হক মনির সারা জীবনের আরাধ্য জাতির পিতার সোনার বাংলাদেশ গড়তে পারবো এবং তার আত্মা সেক্ষেত্রে শান্তি পাবে। আমাদের বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ, শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।  

যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিলের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র আমির হোসেন আমু। এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইনুদ্দিন রানা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা প্রমুখ।

সভায় শেখ ফজলুল হক মনিকে নিয়ে একটি ভিডিও চিত্র উপস্থাপন করা হয়।

শেখ ফজলুল হক মনি ১৯৩৯ সালের ৪ ডিসেম্বর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় শেখ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা শেখ নূরুল হক বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি। মা শেখ আছিয়া বেগম বঙ্গবন্ধুর বড় বোন।

শেখ ফজলুল হক মনি একাধারে মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, মুজিব বাহিনীর স্রষ্টা, স্বনামধন্য লেখক, বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট, যুব আন্দোলনের পথিকৃৎ, যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে নিহত হন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০২৩
এসসি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।