ঢাকা: ডামি নির্বাচনের সরকার বাজারে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে হাঁকডাক দিলেও এটা এখন প্রমাণিত যে, সরকারই সিন্ডিকেটের মূল পৃষ্ঠপোষক। এই সরকার বিগত ১৫ বছরে কখনোই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে পারেনি বলে অভিযোগ করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা।
শনিবার (১৬ মার্চ) রাজধানীর তোপখানা রোডের মেহেরবা প্লাজায় রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন কার্যালয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সূচনা বক্তব্য রাখেন গণতন্ত্র মঞ্চের বর্তমান সমন্বয়ক ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।
সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, ডামি নির্বাচনের সরকার বাজারে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে হাঁকডাক দিলেও এটা এখন প্রমাণিত যে, সরকারই সিন্ডিকেটের মূল পৃষ্ঠপোষক। এই সরকার বিগত ১৫ বছরে কখনোই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে পারেনি। অবৈধ ক্ষমতার নবায়ন করে আবারো কেবল হাঁকডাকই দিচ্ছে। সরকার আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিলেও আন্তর্জাতিক বাজারে যখন দাম নিম্নমুখী তখনও সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। কারণ, এই সিন্ডিকেটের মূল পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে সরকার।
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণের মূল প্রশ্নই হচ্ছে চাহিদা অনুযায়ী জোগান নিশ্চিত রাখা এবং এই সরবরাহ চেইন স্থিতিশীল রাখা। যোগান কিংবা সরবরাহ চেইনে যাতে সিন্ডিকেটের আধিপত্য তৈরি না হয়, সেক্ষেত্রে সরকারের যে বহুবিধ ভূমিকা প্রয়োজন, সেসব পদক্ষেপ সরকার গ্রহণ করেনি। সরকার নিজস্ব আমদানি উদ্যোগ ও টিসিবির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের জন্য রেশনিং ও ন্যায্যমূল্যে নিত্যপণ্য ক্রয়ের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করেনি। বরং কায়েমি স্বার্থে সিন্ডিকেটের সুবিধা করে দিতে এই ভারসাম্য তৈরি থেকে তারা বিরত থেকেছে। একই সাথে বাজারে উন্মুক্ত আমদানির ব্যবস্থা ও পরিবেশ নিশ্চিত করতেও সরকারের কার্যকর কোনো ভূমিকা নেই। ফলে কতিপয় এবং সবশেষে একটি কোম্পানিই পুরো বাজারে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। সরকারের ছায়াতলে থাকা এইসব সিন্ডিকেটই জনগণের পকেট থেকে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে এবং তাদের জীবনে নাভিশ্বাস তুলছে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, সরকার বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু তার কোনো কার্যকারিতা বাজারে নেই। ফলে সরকারের এইসব তৎপরতা যে জনগণকে কেবল ধোঁকা দেয়ার জন্যই সেটা এখন স্পষ্ট। শুধু তাই নয়, জনগণ এইসব প্রতারণা বূঝে ফেলায় সরকারি দলের নেতারা এখন ন্যক্কারজনকভাবে বাজারে দামের ঊর্ধ্বগতির দায় বিরোধীদলের ওপরে চাপাতে চাইছেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, এই সিন্ডিকেটের পৃষ্ঠপোষক, লুটেরা ও প্রতারক সরকারের হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে জনগণকেই ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি’র সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন।
সংবাদ সম্মেলন থেকে আগামী ১৮ মার্চ সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০২৪
এমজেএফ