ঢাকা: সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে ছাত্রলীগ ও পুলিশের হামলায় ৫ শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনার বিচার এবং অবিলম্বে কমিশন গঠন করে কোটা সংস্কারের দাবি জানিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এ দাবি করা হয়।
গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডির) সিনিয়র সহসভাপতি তানিয়া রব ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য নুরুজ্জামান হীরা প্রমুখ।
নেতৃবন্দ বলেন, দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনকে দমাতে সরকার ভয়াবহভাবে মরিয়া। পুলিশ সারা দেশে ন্যক্কারজনকভাবে শিক্ষার্থীর ওপর গুলি চালিয়েছে। এতে সংবাদ মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে রংপুরে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় একজন শিক্ষার্থী এবং চট্টগ্রামে তিনজন এবং ঢাকায় একজন শিক্ষার্থীসহ মোট ৫ জনকে হত্যা করা হয়েছে। ভয়াবহ এবং নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডে আমরাসহ পুরো জাতি স্তব্ধ।
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, গত দুদিন ধরে সারা দেশে সরকার তার পুলিশ এবং হেলমেটবাহিনী ছাত্রলীগকে দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্ত্রশস্ত্রযোগে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলা করছিল। এরই নৃশংস ফলাফল হলো শিক্ষার্থীদের মৃত্যু এবং এই হত্যাকাণ্ড।
নেতৃবন্দ বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দানবীয় পদ্ধতিতে দেশটায় আতঙ্ক তৈরি করতে নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের ওপর হামলে পড়েছে। এখন দেশবাসীর করণীয় হলো, এই ফ্যাসিবাদী সরকারকে ঠেকাতে হবে। ইতোমধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ধাওয়া দিয়েছে। গত রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষার্থী লেলিয়ে দেওয়া গুন্ডাবাহিনীকে রুখে দিয়েছিল।
নেতারা আরও বলেন, সরকার একদিকে হাইকোর্ট দিয়ে তামাশা অব্যাহত রেখেছে। অন্যদিকে রাষ্ট্রযন্ত্রকে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে নির্মমভাবে ব্যবহার করছে। কাজেই দেশবাসীকে এই আন্দোলনের পাশে অকুণ্ঠচিত্তে দাঁড়াতে হবে। শিক্ষার্থীরা যেখানেই নিপীড়িত হচ্ছে, সেখানেই জনগণকে দাঁড়াতে হবে। কেননা দেশকে ডামি প্রধানমন্ত্রী মেধার ভিত্তিতে নয়, দেশকে নতজানু দাসদের দিয়ে পরিচালনা করতে চায়।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দীন পাটোয়ারী, গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মনির উদ্দীন পাপ্পু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সমম্বয়ক ইমরান ইমন।
বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০২৪
এমজেএফ