ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

যে কারণে আন্দোলনে দলের শহীদের সংখ্যা বলবে না জামায়াত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৪
যে কারণে আন্দোলনে দলের শহীদের সংখ্যা বলবে না জামায়াত

পাবনা: জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, অনেক সাংবাদিক ভাইয়েরা আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, (ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে) আপনার দলের শহীদের সংখ্যা কত? কিন্তু আমরা তাদের বলেছি আমরা সংখ্যা বলবো না, কারণ শহীদরা কোনো দলের হতে পারে না। তারা জাতির সম্পদ, তারা জাতির বীর।

এই জন্য আমরা আমাদের দলের শহীদের সংখ্যা বলবো না, কারণ এই শহীদরা সমস্ত জাতির।  

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পাবনায় সরকারি অ্যাডওয়ার্ড কলেজ মাঠে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ পরিবার ও আহতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পাবনা জেলা জামায়াতে ইসলামী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।  

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ১৫ বছরের আমাদের ওপর যে জুলুম করা হয়েছে আর কারো ওপর করেনি। আমাদের প্রতীক কেড়ে নেওয়া হয়েছে, আমাদের অফিসগুলো সিলগালা করা হয়েছে। আমাদের ভাই-বোনদের হত্যা করা হয়েছে। আমাদের শেষ পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এই যে জুলুম করা হয়েছে আমরা বলেছি তার প্রতিশোধ নেব না। প্রতিশোধ নিতে গেলে, আমাদের ওপর যেভাবে জুলুম করা হয়েছে সেভাবে জুলুম করতে হবে, আইন আমাদের হাতে তুলে নিতে হবে কিন্তু আমরা আইন হাতে তুলে নেব না। এই জন্য ক্ষমা করেছি কিন্তু গণহত্যার জন্য নয়, আয়নাঘরের গুমের জন্য বা গণধর্ষণের জন্য ক্ষমা করেনি। হাজার হাজার মানুষকে গুলি করে যে হত্যা করা হয়েছে তার বিচার অবশ্যই হতে হবে।

এসময় বর্তমান শিক্ষা সংস্কার কমিশন ছেঁটে ফেলে আস্তিক ও আগস্ট বিপ্লবের চেতনাধারীদের বসাতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান জামায়াতে ইসলামীর আমীর।  

তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই কিছু অসুবিধা দেখতে পেয়েছি। এই দেশের ৯০ ভাগ মানুষ আস্তিক। অথচ গঠন হওয়া শিক্ষা কমিশনে আস্তিকদের প্রতিনিধিত্ব নেই কেন? যারা এই দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের চেতনাই বুঝতে পারে না তাদেরকে কেন বসতে দেওয়া হয়েছে? আমরা চাই তাদেরকে এখান থেকে সাফ করে দেয়া হোক। তাদের জায়গায় তারা ফিরে যাক। এই জাতির ঘাড়ে তাদেরকে বসতে দেওয়া যাবে না। আস্তিক এবং আগস্ট বিপ্লবের চেতনা যারা ধারণ করে তাদেরকে এখানে (শিক্ষা কমিশন) বসাতে হবে।

দীর্ঘ ১৫ বছর পরে পাবনা জেলা জামায়াতের আয়োজনে এই সুধী সমাবেশ বিশাল সমাবেশে  রুপ নেয়।  জেলার প্রতিটি উপজেলাসহ আশপাশের প্রায় প্রতিটি জেলা উপজেলা থেকে বিভিন্ন পরিবহনযোগে দলের নেতাকর্মীরা সমাবেশ স্থলে দলে দলে উপস্থিত হন। সরকারি অ্যাডওয়ার্ড কলেজের ঐতিহাসিক মাঠ জনসমুদ্রে পরিণত হয়। দলের নেতাকর্মীরা দলে ব্যনার, প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন নিয়ে মিছিল করে আসেন সমাবেশ স্থলে।  

জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আবু তালেব মণ্ডলের সভাপতিত্বে এবং জেলা সেক্রেটারি অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইকবাল হুসাইনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, জেলা জামায়াতের সাবেক আমির আব্দুর রহিম, নায়েবে আমির মাওলানা জহুরুল ইসলাম খান, শহীদ জাহিদুল ইসলামের বাবা দুলাল উদ্দিন মাস্টার শহীদ মাহবুব হাসান নিলয়ের বাবা আবুল কালাম, সমন্বয়ক রাসেল মাহমুদ, বরকতুল্লাহ ফাহাদ প্রমুখ।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে পাবনা অ্যাডওয়ার্ড কলেজ মাঠে জামায়াতে ইসলামীর পাবনা জেলার ষান্মাসিক রুকন‌ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। এরপর দুপুরে দারুল আমান ট্রাস্টে এতিমদের সঙ্গে দুপুরের খাবার খান এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৪
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।