ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

স্বাধীনতাযুদ্ধে শেখ পরিবারের অবদান নেই, আ. লীগকর্মীদের থাকতে পারে: রিজভী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০২৪
স্বাধীনতাযুদ্ধে শেখ পরিবারের অবদান নেই, আ. লীগকর্মীদের থাকতে পারে: রিজভী

নরসিংদী: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও ‘আমরা বিএনপি পরিবারের’ প্রধান উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস যদি দেখা হয়, সেখানে শেখ পরিবারের কোনো অবদান নেই। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অবদান থাকতে পারে।

ওই পরিবারের লোকজনের দেশপ্রেম নেই। আছে শুধু টাকার প্রেম, অন্যের বাড়ি-ঘর দখলের প্রেম ও অন্যের স্ত্রীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার প্রেম। বর্তমানে তাদের এসব কুকীর্তি বের হচ্ছে। এসব আমার বানানো কোনো কথা নয়।  

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মরজাল বাসস্ট্যান্ডে গত জুলাই-আগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার আনুপাতিক হারে যে নির্বাচন ব্যবস্থার কথা বলছে, তা কখনোই বাংলাদেশের মানুষ প্রত্যাশা করে না। বিশ্বের অন্যান্য দেশে এ ব্যবস্থা থাকতে পারে। কিন্তু এটি আমাদের দেশের জন্য প্রযোজ্য নয়। এ ব্যবস্থায় কেবল একটি মহলের বিশেষ সুবিধা হবে। স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ যদি আবার কখনও ক্ষমতায় আসে, তাহলে বাংলাদেশ কসাইখানায় পরিণত হবে। তারা ক্ষমতায় থাকতে দেশের ১১ কোটি মানুষের ভোটার তথ্য বিক্রির পাশাপাশি ঋণ করা ১৮ হাজার কোটি টাকার মধ্যে সাড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকাই বিদেশে পাচার করেছে।

রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ বিচারের ধার ধারে না। তারা আইনের শাসনের পরোয়া করে না। ওরা মনে করে, যারা আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করে, তারা প্রত্যেকে অপরাধী। যারা শেখ হাসিনার বিরোধিতা করে, তারা প্রত্যেকে অপরাধী। ১৯৭২-৭৫ এ তারা মনে করতো বঙ্গবন্ধুর বিরোধিতা করা মানেই অপরাধ। এ কারণে অপরাধের শাস্তি হিসেবে তারা কোর্ট-কাচারিতে যাওয়াকে পছন্দ করতো না। ধরবে-মারবে-কাটবে এটাই ছিল আওয়ামী লীগের নীতি।  

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ লুট করে, আমরা তৈরি করি, তারা পাচার করে, আমরা সংরক্ষণ করি। বিএনপির আমলে দেশে এত টাকা পাচার হয়নি। সাধারণ মানুষ যেন তাদের আয় অনুযায়ী খেতে পারে, এজন্য বিএনপির পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বারবার অনুরোধ করা হয়েছে, বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে।  

অনুষ্ঠানে আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক খায়রুল কবির খোকন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ-সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনজুর এলাহী, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক তোফাজ্জল হোসেন মাস্টার, বিজি রশিদ নওশের, যুবদলের সভাপতি মহসিন হোসেন বিদুৎ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দসহ জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।  

এর আগে দুপুরে রায়পুরা উপজেলার মরজাল ইউনিয়নের বটিয়ারা গ্রামে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও ছাত্রদলের কর্মী জুনায়েদ আল হাবিব হত্যার ঘটনায় তার পরিবারকে সমবেদনা জানাতে বাড়িতে যান। এসময় তিনি জুনায়েদের বাবা জসিম উদ্দিনকে সমবেদনা জানান। বিএনপি নিহতের পরিবারের পাশে থাকবে বলে জানান। আর জুনায়েদের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিত করতে বিএনপি কাজ করবে বলে জানান। পরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ‘আমরা বিএনপি পরিবারের’ উদ্যোগে জুনায়েদের বাবাকে আর্থিক সহায়তা করা হয়। বিকেলে মরজাল থেকে নরসিংদী আসার পথে শিবপুরের শাষপুরে ছাত্র আন্দোলনে নিহত শহীদ সিয়ামের কবর জিয়ারত করে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রিজভী। পরে সেখানে এক পথসভায় তিনি বক্তব্য দেন।

এরপর সন্ধ্যায় নরসিংদীর চিনিশপুরস্থ জেলা বিএনপির কার্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ‘আমরা বিএনপি পরিবারের’ উদ্যোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নরসিংদীর প্রথম শহীদ তাহমিদের পরিবারকে অনুদান দেওয়া হয়। এসময় তিনি শেখ হাসিনার শাসনামলকে মাফিয়ার শাসন বলে আখ্যা দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০২৪
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।