ঢাকা, বুধবার, ২৮ কার্তিক ১৪৩১, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

বিএনপি ক্ষমতায় এলে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার পদক্ষেপ নেবে: ইশরাক 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২৪
বিএনপি ক্ষমতায় এলে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার পদক্ষেপ নেবে: ইশরাক  ছবি: ডি এইচ বাদল

ঢাকা: বিএনপি ক্ষমতায় আসলে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়ে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন বলেছেন, এ বিষয়ে আমাদের দল থেকে নানা পরিকল্পনা এরই মধ্যে নেওয়া হয়েছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার জন্য কিছু যুগান্তকারী ব্যবস্থা নেবেন।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর গুলিস্তান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনে 'অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক সফল মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকার পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সভাটির আয়োজন করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন।

ইশরাক হোসেন বলেন, আমার বাবা মেয়র থাকা অবস্থায় আমি কখনো নগর ভবনে আসিনি। তিনি আমাদের কখনো প্রশ্রয় দেয়নি নগর ভবনে আসার জন্য। নগর ভবন কি এটাই আমরা জানতাম না।

তিনি বলেন, আমি ২০২০ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থী ছিলাম। দলের ভাইস চেয়ারম্যান আমাকে মনোনীত করেছিল। তবে আপনারা দেখেছেন বিগত ফেসিস্ট সরকার এদেশের সব নির্বাচনে এমন কি মসজদ কমিটির নির্বাচনেও কারচুপি করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় তারা আমার নির্বাচনেও কারচুপি করেছেন। আমি তখন জনগণের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পেয়েছিলাম। তবে আগামীতে জনগণ কাকে মননীত করবেন এটা পরের বিষয়।

তিনি বলেন, পুরো পৃথিবীতে যে ১০টি দূষিত নগরী আছে তার মধ্যে ঢাকা অন্যতম। ঢাকার বায়ুর মান খুবই খারাপ। অল্প বৃষ্টি হলেও ঢাকায় চলার কোনো ব্যবস্থা থাকে না।

তিনি বলেন, ঢাকার খাল খননের নামে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা তাপস ওয়াসার কাছ থেকে জোর করে নিয়ে নেয়। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে তিনশত কোটি টাকা তারা খরচ করে ফেলে।

তিনি বলেন, ঢাকাকে বিশ্বের উন্নত নগরগুলোর মতো বাসযোগ্য করে গড়ে তুলব। আমি আমার বাবার কাছ থেকে জানতে পেরেছিলাম ঢাকার উন্নয়নে সব থেকে বড় বাধা ছিল সমন্বয়হীনতা। এ সমন্বয়হীনতা দূর করার জন্য আমরা কাজ করব।

তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় আসলে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার পদক্ষেপ নেব। এ বিষয়ে আমাদের দল থেকে নানা পরিকল্পনা করা আছে। দলের ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার জন্য কিছু যুগান্তকারী ব্যবস্থা নেবেন।

ইশরাক বলেন, ফেসিস্ট আওয়ামী লীগের আমলে সিটি করপোরেশনের যাদের প্রতি বৈষম্য মূলক আচরণ করা হয়েছে, সেসব কিছুকে আমরা বিচারের আওতায় আনব। পাশাপাশি বঞ্চিত হয়েছিল বা রোষের শিকার হয়েছিল তাদের যথাযথ মর্যাদায় আসীন করা হবে।

উদ্বোধকের বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, বহু গুণে গুণান্বিত ব্যক্তি ছিলেন সাদেক হোসেন খোকা। তিনি জনবান্ধব লোক ছিলেন, তার কাছে গিয়ে শত্রুও সহজে কথা বলতে পারতেন। তিনি জনতার মেয়র ছিলেন। যেটা অন্য মেয়রদের কারো মধ্যে ছিল না। তিনি দল মত নির্বিশেষে সবার মেয়র ছিলেন।

তিনি বলেন, সাদেক হোসেন খোকা তৎকালীন সময়ে আওয়ামী লীগের প্রধানকে হারিয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন। সাদেক হোসেন খোকা হিন্দু সম্প্রদায়ের সমর্থন পেয়েছিলেন। তিনি একজন মুসলমান হলেও সব ধর্মের লোকদের কাছে তার গ্রহণ যোগ্যতা ছিল। তার কর্মের মধ্যদিয়ে তিনি মানুষের নেতা হয়েছিলেন। আমরা দেখেছি নির্বাচন হলে সাদেক হোসেন খোকাকে হারানো সম্ভব ছিল না। তৎকালীন আওয়ামী সাদেক হোসেন খোকাকে হারানোর জন্য ঢাকাকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছিলেন।

তিনি বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের টেক্সের টাকা ঢাকা দক্ষিণের হক আছে। উত্তরের কারণে দক্ষিণের অনেক ক্ষতি হয়েছে। আজকে ঢাকার বর্জ্য ব্যবস্থা খুবই নাজুক অবস্থায় রয়েছে। মানুষের কাছ থেকে ঠিকই কর নেওয়া হচ্ছে কিন্তু কোনো নাগরিক সুবিধা কেউ পাচ্ছেন না।

আব্দুস সালাম বলেন, আমরা আগে জাতীয় নির্বাচন চাই। তার পর সিটি করপোরেশন নির্বাচন চাই। যেখানে আমরা ইশরাককে মেয়র হিসেবে মনোনীত করব। আগামী নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে আমরা নির্বাচিত হতে চাই। ভোট ছাড়া আওয়ামী লীগের মত নির্বাচিত হতে চাই না। ভোট ছাড়া নির্বাচিত হওয়ায় আওয়ামী লীগের আজকে এ করুণ পরিণতি হয়েছে। যেকারণে এক কাপড়ে তাকে পালিয়ে যেতে হয়েছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ পুলিশকে জনগণের বন্ধু না বানিয়ে শত্রু বানিয়েছিল। তাই হাসিনা পালানোর পরবর্তী সময়ে অনেক পুলিশেরই করুণ অবস্থা হয়েছিল। তাই জনগণের বন্ধু না হয়ে কেউ কখনো টিকে থাকতে পারবে না। তাই জনগণের প্রভু হওয়ার কখনো চিন্তা করা যাবে না।

স্মরণ সভাটির সভাপতিত্ব করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আবু জাফর মাও. ইলিয়াস।

সঞ্চালনা করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুজ্জামান প্রিন্স।

প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কমিশনার কাজী আবুল বাশার।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা ও সাবেক কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম রাসেল, বিএনপির সাবেক মহিলা কাউন্সিলর হোসনে আরা চৌধুরী ও সাবেক মহিলা কাউন্সিলির শামসুন নাহার ভুইয়া।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২৪
ইএসএস/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
Veet