ঢাকা: আবারো পেছাতে পারে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের কারণে কাউন্সিল এ দফায় পেছানো হতে পারে বলে আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন।
আগামী ২৮ মার্চ আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে আরও এক দফা সম্মেলনের সময় পেছানো হয়েছিলো। পরে গত ৯ জানুয়ারি দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় ২৮ মার্চ সম্মেলনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সে অনুযায়ী ইতোমধ্যে সম্মেলনের প্রস্তুতিও শুরু করা হয়েছে।
কিন্তু মার্চের শেষ দিকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দুই ধাপের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে আগামী ২২ মার্চ ৭৩৮টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় ধাপে ৬৮৪টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৩১ মার্চ।
দলের কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও এই নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছেন। এবারই ইউনিয়ন পরিষদে প্রথম দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ফলে জাতীয় নির্বাচনের আঙ্গিকেই এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে যাচ্ছে। এই অবস্থায় সম্মেলন পিছিয়ে এপ্রিলে নেয়া হতে পারে বলে আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে। দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়েও বিষয়টি আলোচনা হয়েছে।
সম্মেলন পেছানোর সম্ভাবনা আছে কি না জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বাংলানিউজকে বলেন, জাতীয় সম্মেলন পেছানোর সম্ভাবনা আছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের কারণে পেছানো হতে পারে। তবে এ ব্যাপারে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, বাস্তবতার কারণে সম্মেলন পেছানোও হতে পারে। তবে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় আমরা না বসলে তো কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবো না।
তবে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ অবশ্য পেছানোর সম্ভাবনা নেই বলে মন্তব্য করেন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সম্মেলন পেছানোর তেমন সম্ভাবনা দেখছি না। কারণ বিদেশি অতিথিদের ইতোমধ্যে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
এদিকে আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, দলের স্থানীয় সরকার/ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বোর্ডের সভায় চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়নের সময় আলোচনায় জাতীয় সম্মেলনের বিষয়টি এসেছে। আগামী ২২ মার্চ ও ৩১ মার্চ দুই ধাপের নির্বাচনের মাঝে ২৮ মার্চ দলের সম্মেলন করতে গেলে প্রস্তুতি পর্বে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। আগামী এপ্রিলে সম্মেলন করার ভাল সময় পাওয়া যেতে পারে। বাস্তবতা পর্যালোচনা করে সম্মেলন পিছিয়ে ওই সময় নিয়ে যাওয়া হতে পারে ওই সূত্রগুলো আরও জানায়।
এর আগে গত ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের সিদ্ধান্ত নেয়া হলে পৌরসভা নির্বাচনের কারণে তখন সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি। গত ৩০ ডিসেম্বর সারা দেশে পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রতি তিন বছর পর পর জাতীয় সম্মেলন করার বিধান রয়েছে। ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের বিশতম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। গত ডিসেম্বরে বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবে গত ৯ জানুয়ারি কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সর্বসন্মতিক্রমে বর্তমান কমিটির মেয়াদ ৬ মাস বাড়ানো হয়েছে। সে অনুযায়ী আগামী জুন পর্যন্ত এই কমিটি বহাল থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ০০২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৬
এসকে/আরআই