ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

অবশেষে দেখা দিলেন সিইসি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১২ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০১৬
অবশেষে দেখা দিলেন সিইসি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ

ঢাকা: অবশেষ দেখা দিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। গত পৌরসভা নির্বাচনের সময় থেকে কোনো দলের নেতার সঙ্গেই দেখা করেননি তিনি।

তবে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন উপলক্ষে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সামনে এলেন সিইসি।
 
মঙ্গলবার (০১ মার্চ) বিকেলে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আসেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল। ফজলে হোসেন বাদশা এমপি সাংবাদিকদের বলেন, ইউপি নির্বাচনে অনেক অনিয়ম ও বিধি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। আমরা এ বিষয়টি মৌখিকভাবে সিইসিকে জানাতে এসেছি। এরপরে আসবো লিখিত অভিযোগ নিয়ে। তখন যেন বিষয়টি সিইসির মনে থাকে, এজন্য আজ মৌখিক অভিযোগ দিয়ে যাচ্ছি।
 
এরপর তারা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। তবে এর আগে তাদের অপেক্ষা করতে হয় সিইসি’র ব্যক্তিগত সহকারীর কক্ষে। খানিকক্ষণ পরে অনুমতি মেলে সিইসি’র। বিকাল সোয়া তিনটা থেকে পৌনে চারটা পর্যন্ত আধা ঘণ্টার বৈঠকে সিইসি তাদের বক্তব্য শোনেন।
 
গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর পৌরসভা নির্বাচনের দিন সকাল সাড়ে সাতটা থেকে বিএনপির ড. ওসমান ফারুকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল দিনভর ইসিতে অপেক্ষা করেও দেখা পাননি সিইসি’র। এমনকি তারা কয়েকবার সিইসি’র সাক্ষাত প্রার্থনা করলেও তা আমলে নেননি তিনি। সিইসি’র সাক্ষাত না পেয়ে ইসি সচিব সিরাজুল ইসলামের সাক্ষাত চাইলে সে অনুমতিও পাননি তারা। এ নিয়ে সে সময় রাজনীতিবিদদের প্রতি সিইসি এবং ইসি সচিবের কোনো সম্মানবোধ নেই বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন ওসমান ফারুক। একই সঙ্গে তিনি প্রশ্ন রেখে বলেছিলেন-‘আমি সাবেক মন্ত্রী অথচ তারা আমাকে মানুষই মনে করলেন না তারা। এ কেমন শিষ্টাচার?’
 
ওইদিন এইচটি ইমামের নেতৃত্বে আসা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের সঙ্গেও সাক্ষাত করেননি সিইসি। এরপর আর কোনো দলের সামনেই আসেননি তিনি। দুই মাস অতিবাহিত হলে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টিই প্রথম, যে দলটির প্রতিনিধিদের কাছে মঙ্গলবার দেখা দিলেন কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ।
 
বৈঠক থেকে বের হয়ে ফজলে হোসেন বাদশা সাংবাদিকদের বলেন, গত পৌরসভা নির্বাচনে অনিয়ম হয়েছে। সে বিষয়টির পুনরাবৃত্তি যেন আসন্ন ইউপি নির্বাচনে না হয়, সেজন্য সতর্ক করতেই সিইসি’র সঙ্গে দেখা করেছি। নির্বাচন কমিশনের অনেক ক্ষমতা আছে। কিন্তু তারা সে ক্ষমতা প্রয়োগ করে না। ইউপি নির্বাচনে যেন তাদের ক্ষমতাটা প্রয়োগ সে বিষয়ে আহ্বান জানিয়েছি।
 
তিনি বলেন, যার ভোট তিনি দেবেন। সবার ভোট যেন একজনে না দেন, সে বিষয়েও লক্ষ্য রাখতে হবে। দেশে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা যেন গড়ে ওঠে সে দাবি নিয়েই আমরা এসেছি। জাতীয় সংসদে আমাদের মাত্র সাতজন সদস্য। তাই স্থানীয় পর‌্যায়ে কতোটুকু অংশগ্রহণ করবে এ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হতে পারে। কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচন হলে একটা পরিবর্তন আসতে পারে। রাজনীতিতে সে পরিবর্তনটা আমরা ইতিবাচক পরিবর্তন বলেই কামনা করি।
 
সব জায়গায় গুলি চালানো হয়, সব জায়গায় পুলিশ লাঠিপেটা করতে পারে। ভোটকেন্দ্র দখল করে ভোট লুটপাট করা হলে তাদের ক্ষেত্রে কেন এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না- এ প্রশ্নও তোলেন ফজলে হোসেন বাদশা।
 
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ভোটকেন্দ্র দখল করে ভোট দেওয়ার চেষ্টা করলে প্রয়োজনে গুলি চালানো হবে, এ নির্দেশনা মাঠ পর‌্যায়ে জানিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি সিইসিকে। বলেছি, পৌরসভা নির্বাচনে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, তা যেন না ঘটে এর দায়িত্বও নির্বাচন কমিশনের। আমাদের সন্দেহ, ইসি ক্ষমতা ব্যবহার করবে না। তাই আমরা সন্দেহমুক্ত হতে চাই। জবাবে সিইসি বলেছেন, আপনারা সন্দেহ করবেন না। আমরা ব্যবস্থা নেবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৩ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০১৬
ইউডি/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।