ঢাকা: একাত্তরে হত্যা-গণহত্যার দায়ে আলবদর বাহিনীর তৃতীয় শীর্ষনেতা মীর কাসেম আলীর ফাঁসির রায় বহালের প্রতিবাদে বুধবার (০৮ মার্চ) জামায়াতের ডাকা দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছে।
এদিন ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হরতাল পালন করবে একাত্তরে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত দল জামায়াত।
সকালে রাজধানীর আজীমপুর, প্রেসক্লাব, পল্টন, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, বিজয় সরণি, জাহাঙ্গীর গেট, মহাখালী, বনানী, বিশ্বরোড, খিলক্ষেত, জসীম উদদীন, রাজলক্ষী, উত্তরা, আব্দুলাপুর এলাকা ঘুরে রাস্তায় প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও গণপরিবহণসহ প্রায় সব ধরনের যান চলাচল করতে দেখা যায়। তবে তা তুলনামূলক কিছুটা কম।
এ সময় যাত্রী, শ্রমজীবী মানুষ, অফিসগামী কর্মব্যস্ত মানুষকে যার যার মতো গন্তব্যে ছুটতে দেখা যায়। এমনকি কোথাও কোনো মিছিল বা মিটিংও চোখে পড়েনি।
সকাল ৯টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবরও পাওয়া যায়নি।
তেজগাঁও জোনের ট্রাফিক সার্জেন মো. আশরাফ বাংলানিউজকে জানান, যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। সড়কে হরতালের কোনো প্রভাব নেই। কাউকে সন্দেহ হলে আমরা তল্লাশি করছি।
হরতালে বিজয় সরণি এলাকায় দায়িত্বরত তেজগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রমজান বলেন, যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাজধানীর অলিগলিতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলেও জানান তিনি।
এর আগে মঙ্গলবার (০৮ মার্চ) দুপুরে দলটির প্রচার বিভাগ থেকে সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে হরতালের ঘোষণা দেওয়া হয়। এদিন সকালে যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য কাসেম আলীর ফাঁসির রায় বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
এদিকে, হরতালের আগের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীসহ দেশের কোথাও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
তবে নাশকতা এড়াতে সন্ধ্যা থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত রাজধানীতে ১৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সন্ধ্যা থেকে ঢাকায় টহল করছেন বিজিবি সদস্যরা।
এর আগে, ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা মীর কাসেমকে ফাঁসির আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
আটজনকে নির্যাতনের পর হত্যা ও মরদেহ গুম এবং ২৪ জনকে অপহরণের পর চট্টগ্রামের বিভিন্ন নির্যাতনকেন্দ্রে আটকে রেখে নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী ১৪টি অপরাধের দায়ে ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্ত হন মীর কাসেম আলী এ ১৪টি অভিযোগের মধ্যে ১০টি প্রমাণিত হয় ট্রাইব্যুনালের রায়ে, বাকি ৪টি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পারেননি প্রসিকিউশন।
ফাঁসি ছাড়া প্রমাণিত অন্য ৮টি অভিযোগে আরও ৭২ বছরের কারাদণ্ডাদেশ পান চট্টগ্রাম অঞ্চলে মানবতাবিরোধী অপরাধের মূল হোতা মীর কাসেম।
এরপর রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ৩০ নভেম্বর খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৩২ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০১৬/আপডেট: ০৯০৪ ঘণ্টা
এনএ/এসএস/টিআই