ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

দেশে দুর্নীতি এখনও বন্ধ হয়নি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৬
দেশে দুর্নীতি এখনও বন্ধ হয়নি ছবি - শাকিল / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: দেশে এখনও দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব হয়নি মন্তব্য করে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি, বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, বেশ কিছু ক্ষেত্রে সরকার উপযুক্ত পদক্ষেপ নিলেও দুর্নীতি দূর করা এখনও সম্ভব হয়নি।

তিনি বলেছেন, দুর্নীতি পুরোপুরি দূর করতে পারলে প্রবৃদ্ধি আরও বেড়ে যেতো এবং দেশ আরও এগিয়ে যেতো।

সেই সঙ্গে রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক সহনশীলতার কিছুটা অভাব রয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

রাশেদ খান মেনন শুক্রবার (২২ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত মি দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন। ডিআরইউ’র সাগর-রুনী মিলনায়তনে এ মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে রাশেদ খান মেনন বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প, বিমান পরিবহন বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ, সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়েও খোলামেলা কথা কলেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। অনুষ্ঠানে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি জামাল উদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদসহ ইউনিটির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সংক্রান্ত অপর এক প্রশ্নের উত্তরে রাশেদ খান মেনন নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে বলেন, নির্বাচন কমিশন এখন যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছে সেটি আগেই নেওয়ার দরকার ছিল। আমি মনে করি নির্বাচন কমিশন যথাযথভাবে পদক্ষেপ নিতে পারেনি।

সাংবাদিক শফিক রেহমানের গ্রেফতার সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, শফিক রেহমান আমার প্রিয় ব্যক্তিত্ব সন্দেহ নেই। কিন্তু তার সম্পর্কে পত্র-পত্রিকায় যে সব খবর দেখছি সেগুলো যদি সত্যি হয় তাহলে আমাদের বোধ-বুদ্ধি হারিয়ে ফেলতে হয়।

তিনি সরকারের বিভিন্ন ইতিবাচক পদক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর আমরা অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক যাত্রা পথে ফিরে আসতে পেরেছি। রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিতে ফিরেছি। যদিও কিছু অসঙ্গতি রয়েছে। রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম রয়ে গেছে। সংবিধান সংশোধনের সময় আমরা এর বিরোধিতা করেছি। রাষ্ট্রীয়ভাবে জঙ্গিবাদ-মৌলবাদ-সাম্প্রদায়িকতার যে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হতো তা দূর হয়েছে।

এ সময় তিনি ব্যংকগুলোতে লুটপাটের ঘটনার সমালোচনা করেন বলেন, ব্যাংকগুলোতে লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে, যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের রিভার্জ থেকে চুরির টাকা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা হচ্ছে। কিছু টাকা পাওয়ার আশ্বাসও ইতোমধ্যে পাওয়া গেছে।

বিএনপি-জামায়াতের সহিংস আন্দোলনের তীব্র সমালোচনা করেন মেনন। বলেন, তারা যেভাবে জ্বালাও, পোড়াও করেছে মানুষ হত্যা করেছে সেটি আমরা দেখেছি। আমি মনে করি আমরা যদি সেভাবে রাজনৈতিক উদ্যোগ নিতাম তাহলেও মোকাবেলা করতে পারতাম।

রাশেদ খান মেনন বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের বিকাশে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, এ খাতের উন্নয়নে সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। ২০১৮ সালের মধ্যে পর্যটন খাতে সাড়ে ৩ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

দেশে পর্যটক আকৃষ্ট করতে আগামী মাস থেকে দেশে ও দেশের বাইরে প্রচার চালানোর কথা উল্লেখ করেন তিনি।

মেনন বলেন, একজন পর্যটক আসলে ১১ জন মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হয়। আমরা চীন, থাইল্যান্ড, ভুটান, ভারত, মায়ানমার, মালয়েশিয়া থেকে পর্যটক আকৃষ্ট করতে চাই। সম্ভাবনার দিক পোশাক শিল্পের পরই আমাদের পর্যটন খাত হতে পারে। যদিও বাংলাদেশ এখনও পর্যটনের দেশ হিসেবে পরিচিতি পায়নি। মালয়েশিয়া, থাইদের সঙ্গে পর্যটন বিষয়ে সমঝোতা স্মারক (এমইউ) স্বাক্ষর হয়েছে।

এদিকে বাংলাদেশ বিমান বর্তমানে লাভজনক প্রতিষ্ঠান উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, বিমানকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি করার পর ৬ বছর ক্রমাগত লোকসান হচ্ছিল। গত বছর থেকে বিমান লাভের মুখ দেখছে। এ বছরও আমরা লাভ করবো। লোকসানের মূল কারণ ছিলো বিমানের জাহাজগুলো পুরোনো। সে কারণে অনেকগুলো রুট বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এখন অভ্যন্তরীণ রুটে দিনে দু’টি করে ফ্লাইট চলছে।

তিনি মত দেন, ২০১৮ সালের মধ্যে কক্সবাজার বিমানবন্দর আন্তর্জাতিকে উন্নীত হবে। সেই সঙ্গে পদ্মার ওপারে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নামে দেশের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। এ জন্য চারটি স্থানে প্রাক সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৬
এসকে/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।