ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

বিএনপিপন্থী ভুঁইফোড় সংগঠনের দৌরাত্ম্য, ক্ষুব্ধ হাই কমান্ড

মহসিন হোসেন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২০
বিএনপিপন্থী ভুঁইফোড় সংগঠনের দৌরাত্ম্য, ক্ষুব্ধ হাই কমান্ড

ঢাকা: করোনাকালে ভার্চ্যুয়াল জগতে দেশে ও বিদেশে বিএনপিপন্থী ভুঁইফোড় সংগঠনের দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ায় দলের হাই কমান্ড ব্যাপক ক্ষুব্ধ বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, গত মার্চ মাসে দেশে প্রথম করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার পর প্রায় ৫ মাস বিএনপির সব সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড নোটিশ দিয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে।

সবশেষ ১৬ আগস্ট দলীয় নোটিশে জানানো হয়েছে, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দলীয় সব কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকবে। তবে এই সময়ের মধ্যে মোবাইল ফোন ও ভার্চ্যুয়াল যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় ৫ মাস দলীয় কর্মসূচি না থাকায় বিভিন্ন ভুঁইফোড় সংগঠনের ব্যানারে ভার্চ্যুয়াল আলোচনা ও টকশো চলছে। এসব আলোচনা ও টকশোতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা যারা দেশে ও বিদেশে অবস্থান করছেন তারা বিভিন্ন সময় তাদের মতামত তুলে ধরছেন। কারও কারও এসব বক্তব্যে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয়। এ সময় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। দলীয় অনুমোদন নেই এমন কোনো সংগঠনের আলোচনা সভায় কেউ যেন কথা না বলে সে বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশ দেন।

তার নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৪ আগস্ট বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদকদের বরাবরে একটি চিঠি পাঠান। ওই চিঠিতে বলা হয়, এই মর্মে সিদ্ধান্তক্রমে আপনাকে অবহিত করা যাচ্ছে যে, বহির্বিশ্বে কেন্দ্রের অনুমোদিত কমিটি ব্যাতিরেকে দলের নাম ব্যবহার করে কোনো সংগঠন বা ব্যক্তির কোনো ভার্চ্যুয়াল সভাসমাবেশ বা টেলিফোনে বক্তব্য প্রদানে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে অংশগ্রহণ না করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। দলের সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে অবগত করার জন্য আপনাদের অনুরোধ করা হলো। বিষয়টি অতীব জরুরি।

সোমবার (১৭ আগস্ট) রাতে এ বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ আহম্মেদ তালুকদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ওই চিঠির বিষয়ে আমার সঙ্গে সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি আমাকে জানিয়েছেন, চিঠির ভাষা সংশোধন করে দুই/একদিনের মধ্যে আর একটি চিঠি দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, রিজভী আহমেদ আমাদেরকে যে চিঠিটি দিয়েছেন তাতে ভুঁইফোড় সংগঠনের অনুষ্ঠানে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্য প্রদানে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। এটা দলের হাই কমান্ডের সিদ্ধান্ত। এটি যথার্থ বলে আমি মনে করি। কারণ দলের সঙ্গে সম্পর্ক নেই এমন অনেক ভুঁইফোড় সংগঠনের অনুষ্ঠানে দলের কেউ কেউ বক্তব্য দিয়ে থাকেন। এটা যাতে ভবিষ্যতে কেউ না দেন সেজন্যই এই নির্দেশনা।

বিগত দিনে কারা এ ধরণের বক্তব্য দিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সুনির্দিষ্টভাবে কারও নাম বলা সম্ভব নয়। তবে অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে কথা বলতে গিয়ে দলের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ান। তাদের বিরত রাখতেই এই প্রচেষ্টা।

তিনি বলেন, পরবর্তী চিঠি পাওয়ার পরে আমরা কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের বিষয়টি অবহিত করবো, যাতে এ ধরনের কাজ ভবিষ্যতে আর কোনো নেতা না করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২০
এমএইচ/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।