ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সরকারের ব্যর্থতায় সবখানে বিপর্যয়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০২১
সরকারের ব্যর্থতায় সবখানে বিপর্যয়

ঢাকা: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, জনসমর্থনহীন সরকারের ব্যর্থতায় দেশের সর্বত্র বিপর্যয় চলছে। হাজার বছর ধরে হিন্দু-মুসলিম পাশাপাশি বসবাস করে আসছে।

কুমিল্লার একটি মন্দিরে পবিত্র কোরআন পাওয়াকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন জেলায় যে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে, আমরা এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিচার চাই।

শনিবার (২৩ অক্টোবর) দেশের চলমান সঙ্কটময় পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রেজাউল করীম বলেন, বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস এবং মুসলমানদের ধর্মীয় শিক্ষা এ ধরনের ঘটনাকে সমর্থন করে না। ঘটনার সূত্রপাত থেকে পরবর্তী প্রত্যেকটি ঘটনায় প্রশাসনের ব্যর্থতার ছাপ স্পষ্ট। ৫০ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একটি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে এ ধরনের ব্যর্থতা কল্পনাতীত। জন প্রশাসনে অতিমাত্রায় রাজনীতি প্রবেশের কারণে সামগ্রিকভাবে দেশের প্রশাসন ব্যবস্থায় এক ধরনের অদক্ষতা তৈরি হয়েছে। যার খেসারত এসব ঘটনা।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি ১০ দফা প্রকাশ করে রেজাউল করীম বলেন, ১. কুমিল্লার ঘটনা ও তৎপরবর্তী ঘটনা তদন্তে বিচার বিভাগীয় কমিটি করতে হবে। কোরআন অবমাননা, বিভিন্ন স্থানে মন্দির ও মূর্তি ভাঙা, রংপুরে আগুন দেওয়া এবং চাঁদপুরে বিক্ষোভে গুলি করে হত্যা করার বিষয়টি তদন্ত করতে হবে ও রিপোর্ট প্রকাশ করতে হবে। ২. ধর্ম অবমাননার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট আইন করতে হবে এবং সেই আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। তাহলে কোনো ধরনের ধর্ম অবমাননার ঘটনা ঘটলে জনতা আর সহিংস হয়ে উঠবে না। ৩. রাজনৈতিক নেতা ও মন্ত্রীদের অতি বাচাল প্রবণতা বন্ধ করতে হবে। ৪. দেশের স্বাভাবিক রাজনৈতিক পরিবেশ ফেরাতে বিরোধী দলগুলোর ওপরে দমন-পীড়ন বন্ধ করতে হবে। আটক রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দিয়ে সুস্থ স্বাভাবিক রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। ৫. শাসন ব্যবস্থায় জনতার মতামতের প্রতিফলন ঘটাতে এবং সহনশীল, বহুদলীয়, মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। ৬. বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর রাজনৈতিক ব্যবহার বন্ধ করে এবং তাদের নিয়োগে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করে বাহিনীগুলোকে পেশাদারিত্বের ভিত্তিতে গড়ে তুলতে হবে। ৭. গণবিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে গুলি করার মতো চরমপন্থা অবলম্বন করার প্রবণতা সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে। ৮. ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির ও সংখ্যালঘুদের ঘর-বাড়ি সরকারিভাবে নির্মাণ করে দিতে হবে এবং চাঁদপুরে পুলিশের গুলিতে যারা নিহত হয়েছেন, তাদের পরিবারসহ ক্ষতিগ্রস্তদের ও পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ৯. দেশের একশ্রেণির মিডিয়া, রাজনৈতিক সংগঠন ও তথাকথিত সুশীল সমাজ এই ধরনের ঘটনায় যেভাবে ধর্মকে কেন্দ্র করে একচোখা বয়ান দাঁড় করায়, তা বন্ধ করতে হবে। ১০. প্রতিবেশী দেশকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলাতে সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর বার্তা দিতে হবে।

রেজাউল করীম আগামী ২৭ অক্টোবর দেশের চলমান সংকট ও তা থেকে উত্তরনের লক্ষ্যে দেশের সর্ব-মহলের শীর্ষস্থানীয় পীর-মাশায়েখ, বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিবিদ, পেশাজীবী ও সমাজকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার ডাক দেন।

দলের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য আলহজ্ব খন্দকার গোলাম মাওলা, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব আলহাজ্ব আমনিুল ইসলাম,  ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আবদুল কাদের, মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, কেএম আতিকুর রহমান, অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা খলিলুর রহমান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০২১
এমএইচ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।