ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

আবারও জনগণের সেবা করার সুযোগ চান শেখ হাসিনা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২২
আবারও জনগণের সেবা করার সুযোগ চান শেখ হাসিনা শেখ হাসিনা

ঢাকা: আগামী নির্বাচনেও নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে দেশ ও জনগণের সেবা করার সুযোগ চেয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) বিকেলে যশোর জেলা স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি এ আহ্বান জানান।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদের জয়যুক্ত করে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। আগামী নির্বাচনে আমি আপনাদের কাছে ওয়াদা চাই। আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন কিনা হাত তুলে ওয়াদা করেন।

এ সময় স্লোগানে মুখর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা হাত তুলে ওয়াদা করেন।

টানা তিনবারের সরকার প্রধান বলেন, আপনারা ভোট দিয়েছেন। আপনাদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে বার বার ক্ষমতায় এসেছি। আর ক্ষমতায় এসেছি বলেই আজকে দেশের উন্নয়ন করা সম্ভব হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, যতটুকু আমার সাধ্য আছে আমি আপনাদের পাশে থেকে সেবা করে যাবো। বার বার আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। অনেকের মনে থাকার কথা। যখন আমি সাতক্ষীরা থেকে কলারোয়া হয়ে যশোরে আমার সভায় যাচ্ছিলাম, তখন আমার গাড়িতে আক্রমণ করা হয়েছিল। আমি বেঁচে গেছি। গ্রেনেড হামলায়ও বেঁচে গেছি। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বার বার আঘাত থেকে আমাকে বাঁচিয়ে দিচ্ছেন। বোধ হয় আমার ওপর দায়িত্ব দিয়েছেন বাংলার জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করবার।

যশোরে জনসভায় উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ইনশাল্লাহ এ বাংলাদেশ দরিদ্র থাকবে না। এ বাংলাদেশ উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হবে, জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করবো। আজকে এ ওয়াদা দিয়ে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি।

সবার সহযোগিতা ও দোয়া চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে ইনশাল্লাহ এ বাংলাদেশ উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বপ্ন আমরা পূরণ করে চলেছি। এ বাংলাদেশের একটি মানুষও না খেয়ে থাকবে না। একটি মানুষ গৃহহীন থাকবে না। প্রত্যেকটা মানুষের জীবন মান উন্নত হবে, সমৃদ্ধশালী হবে। আমরা সেই পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। তা বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে যেতে হবে। আপনাদের সহযোগিতা চাই, আপনাদের দোয়া চাই।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ যেন পৃথিবীর বুকে সম্মান নিয়ে চলতে পারে, বাংলাদেশকে আমরা সেভাবে গড়ে তুলেছি। ২০০৮ সালে নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা দিয়েছিলাম, রূপকল্প ২০২১ এর মধ্যে বাংলাদেশকে আমরা উন্নত করবো। আজকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করেছি, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশ।

 

বিএনপি আমলের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, যে বাংলাদেশকে ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করেছিল, বিদেশ থেকে পুরোনো কাপড় এনে এদেশের মানুষকে পরানো হয়েছিল। মানুষের পেটে খাবার ছিল না। মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না। রোগে চিকিৎসার ব্যবস্থা ছিল না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সব পরিবর্তন করেছে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক করেছি। যেখানে বিনা পয়সায় ৩০ ধরনের ওষুধ পাওয়া যায়।

তিনি বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। যেখানে কর্মসংস্থান হয়েছে অনেক মানুষের। সবার হাতে মোবাইল ফোন। এটা আওয়ামী লীগ সরকারই আপনাদের হাতে তুলে দিয়েছে। আর বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকতে কি দিয়েছে। দিয়েছে অস্ত্র, দিয়েছে খুন, দিয়েছে হত্যা।

বিএনপি লুটপাট-খুন ছাড়া জাতিকে কিছুই দিতে পারেনি মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এ যশোরে শামসুর রহমান, মুকুলকে হত্যা করা হয়েছে। খুলনায় মঞ্জুরুল ইমাম, মানিক শাহ, বালু, সাংবাদিকদের একে একে হত্যা করা হয়েছে। শুধু রক্ত আর হত্যা ছাড়া বিএনপি তো আর কিছু দিতে পারেনি দেশের মানুষকে।  নিজেরা লুটপাট করেছে। নিজেরা মানুষের অর্থ পাচার করেছে। মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। মানুষের মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়ে নিজেদের উদরপূর্তি করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, জিয়া যখন মারা যায় তখন বলা হয়েছিল- কিচ্ছু রেখে যায়নি জিয়া। ভাঙা স্যুটকেস, ছেঁড়া গেঞ্জি ছাড়া। সেই ছেঁড়া গেঞ্জি হয়ে গেল ফেঞ্চ শিফন আর ভাঙা বাকশো হয়ে গেল জাদুর বাকশো, যা দিয়ে কোকো-তারেক হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। দেশের টাকা বিদেশে পাচার করেছেন আর পাচার করেছেন বলেই তারা শাস্তি পেয়েছেন। আজকে সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক জিয়া।

তিনি বলেন, অস্ত্র চোরাকারবারি করতে গিয়ে তারেক জিয়া ধরা খেয়েছে। ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় তার সাজা হয়েছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আমাকেসহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হত্যা করতে চেয়েছিল। বারবার এ ধরনের মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছি। আর খালেদা জিয়া শুধু জনগণের অর্থ না, এতিমের অর্থ মেরে দিয়েছে। জিয়া অরফানেজের অর্থ মেরে তিনিও আজ সাজাপ্রাপ্ত। আর সাজাপ্রাপ্ত যে দলের নেতা, সে দল জনগণকে কী দেবে বলেন! তারা কিছুই দিতে পারে না, তারা শুধু মানুষের রক্ত শুষে খেতে পারে। এটাই হলো বাস্তবতা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২২
এমইউএম/এসকে/জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।