ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

বিদ্যুৎ-ব্যান্ডউইথ বিনিময় উদ্বোধন

‘আরেক মাইলফলক’, ‘ঐতিহাসিক’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৬
‘আরেক মাইলফলক’, ‘ঐতিহাসিক’ শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি

ঢাকা: ত্রিপুরা ‍থেকে বিদ্যুৎ আমদানি এবং বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ রফতানি দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে আরেকটি মাইলফলক স্থাপন করলো বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একে ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করেন।



বুধবার (২৩ মার্চ) সকালে ত্রিপুরা থেকে ১শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির আনুষ্ঠা‌নিক উ‌দ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তারা। এ সময় বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ রফতানি কার্যক্রমেরও উদ্বোধন করা হয়। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যৌথভাবে ত্রিপুরা-কু‌মিল্লা আন্তঃ‌দেশীয় গ্রি‌ডের উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি। এ সময় ভিডিও কনফারেন্সে ত্রিপুরা থেকে সংযুক্ত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার।

শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে বলেন, বিদ্যুৎ আমদানি আমাদের জ্বালানির চাহিদা পূরণ হবে। বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ রফতানিতে ত্রিপুরাসহ এ অঞ্চলের বিকাশে ভূমিকা রাখবে। ২০০৯ সাল থেকে ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক গভীর হয়। বিদ্যুৎ-ব্যান্ডউইথ বিনিময় সে সম্পর্কের ক্ষেত্রে আরেকটি মাইলফলক স্থাপন করলো।

‘আমরা চাই, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান। এ অঞ্চলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এক নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে’- বলেন প্রধানমন্ত্রী।

অন্যদিকে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ঐতিহাসিক এ ঘটনায় আজ আমাদের মধ্যে এমন এক গেটওয়ে খুলছে, যা আমাদের আরো সামনে অগ্রসর হতে সহায়তা করবে। বাংলাদেশের সঙ্গে ডিজিটাল বিশ্বের এ গেটওয়ে খুলছে।

তিনি বলেন, আসাম, ত্রিপুরাসহ এ অঞ্চলের জন্য যে ট্রান্সমিশন লাইন স্থাপন করা হয়েছে, তার ধারণক্ষমতা আমরা প্রথম থেকেই বেশি রেখেছি। আসছে দিনগুলোয় প্রয়োজন হলে আমরা আরো বেশি বিদ্যুৎ রফতানি করতে পারবো।
 
ঢাকায় গণভবন থেকে শেখ হাসিনা ও দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নরেন্দ্র মোদির ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একযোগে উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গেই ভারত-বাংলাদেশ ৪শ’ কেভি ডাবল সার্কিট লাইনটিতে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সঞ্চালন শুরু হয়েছে।

এ লাইন দিয়ে ত্রিপুরার পালাটানা গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আনা হবে। বিদ্যুৎ আনতে বাংলাদেশ অংশে ২৭.৮ কিমি ও ভারতে অংশে ২৪ কিমি সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। লাইনটি বাংলাদেশে কুমিল্লার কসবা দিয়ে প্রবেশ করেছে। সব মিলিয়ে গ্রিড লাইন‌টির মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৫২ কি‌লো‌মিটার।

তবে ত্রিপুরা থেকে পরীক্ষামূলকভাবে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হয়েছে গত ১৬ মার্চ থেকে। আনুষ্ঠানিকভাবে আমদানি শুরু হলো বুধবার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সে বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, আঞ্চলিক আন্তঃসংযোগে। যৌথ উদ্যোগে ভারতের সঙ্গে রামপালে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র ছাড়াও  ভুটান ও নেপালে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য কাজ চলছে। খুব দ্রুত এ কাজগুলো সম্পন্ন হচ্ছে।

নরেন্দ্র মোদি তার বক্তব্যে আরও বলেন, বাংলাদেশ আর ভারত যুক্ত হয়েই চলেছে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সামনে বাড়ছে। এবার মহাশূন্যেও আমরা একসঙ্গে সামনে বাড়বো। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে আমরা সহযোগিতা দেবো।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আধুনিক বিজ্ঞানের কল্যাণে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী ও একজন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এভাবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগাযোগ সম্ভব হচ্ছে।

তিনি শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু সব সময়ই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক অটুট রেখেছেন। আপনিও সে সঙ্কটকালীন সময়ে আকুণ্ঠ সমর্থন দিয়েছেন। একটা সময় ছিল বাংলাদেশ দুঃখ-দুর্দশাগ্রস্ত ছিল। আজ বাংলাদেশ সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। ক্রান্তিকালে যেমন আমরা পাশাপাশি যেমন ছিলাম, এখনো আছি।

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান নরেন্দ্র মোদি। আগামী ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষেও সমস্ত ভারতবাসীর পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানান। বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট বিনিময়ের শুভ উদ্বোধন উপলক্ষেও ছিল তার অভিনন্দন।

অন্যদিকে হোলি উৎসব উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও জনগণকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান শেখ হাসিনা।

বিদ্যুৎ দেওয়ায় নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ২০১২ সালে আমি যখন ত্রিপুরা সফরে যাই, সে সময় এ ব্যাপারে কথা হয়েছিল। আজ তা সফল হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৬
এমইউএম/আরএইচ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।