ড. পৃথ্বীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ইতোমধ্যে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘নাইট’ উপাধি এবং বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ‘মৈত্রী সম্মাননা’ পেয়েছেন।
ফ্রান্স প্রবাসী নির্মাতা প্রকাশ চন্দ্র রায় 'ইলুসো দু’উন প্রমনাদ' নামে একটি তথ্যচিত্রের মাধ্যমে তার জীবনের চুম্বকাংশ তুলে ধরেছেন।
তথ্যচিত্রে প্রকাশ রায় ফুটিয়ে তুলেছেন বর্তমান সময় পর্যন্ত ড. মুখোপাধ্যায়ের জীবনের নানা দিক।
ড. পৃথ্বীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় কলকাতায় জন্মগ্রহণ করলেও ১০ বছর বয়সে পণ্ডীচেরি চলে যান। সেখানে ২০ বছর বসবাস করেন। তবে বুকের মধ্যে বাংলাকে প্রবলভাবে ধারণ করে চর্চা অব্যাহত রাখেন। বিদেশি ভাষার ব্যবহার বাংলার মাধুর্যকে যেন নষ্ট না করে সেদিকে নজর রাখেন। বাংলার প্রতি তার এই ভালবাসা আরও প্রগাঢ় হয় পণ্ডীচেরি গিয়ে।
১৯৬৬ সালে ড. পৃথ্বীন্দ্রনাথ ভারত থেকে ফ্রান্স যান। ফ্রান্সে পড়াশুনাসহ নানা বিষয়ে গবেষণা কাজে নিজেকে মগ্ন রাখেন। বাংলা ভাষার মতো ফরাসি ও ইংরেজিতে তার দক্ষতা মৌলিক রচনার পাশাপাশি একজন বিদেশি গ্রন্থের অনুবাদক হিসেবে খ্যাতি এনে দিয়েছে। তিনি প্রায় ৬০টি প্রসিদ্ধ গ্রন্থের অনুবাদ করেছেন। তাছাড়া কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১০৮টি কবিতা ফরাসি ও ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করে একই গ্রন্থে তা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ফরাসি জনপ্রিয় ‘ল্য মণ্ড’ পত্রিকাসহ বিভিন্ন পত্রিকায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কবিতা লিখেন। মুক্তিযুদ্ধের উৎসাহব্যঞ্জক রচিত বাংলা কবিতার অনুবাদ করে ফরাসি বিভিন্ন পত্রিকার সাহিত্যপাতা ও সংকলনে প্রকাশ করেন।
প্রদর্শনী শেষে ড. পৃথ্বীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, বাংলা আমার মায়ের ভাষা, প্রাণের ভাষা। এ ভাষা আমার প্রেরণার উৎস। আমি বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রচার, প্রসার ও মানুষের জন্য শেষদিন পর্যন্ত কাজ করে যেতে চাই।
নির্মাতা প্রকাশ রায় তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, অনেক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও যে কাজগুলো করে যাচ্ছি তা সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে।
উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে প্রকাশ রায় নির্মাণ করেছেন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক তথ্যচিত্র ‘একটি পতাকার জন্ম’ এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের নিয়ে নির্মিত ‘অনিশ্চিত যাত্রা দেশ’।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৪২ ঘণ্টা, মে ০২, ২০১৮
আরআর