ঢাকা: সৌদি প্রবাসীদের বৈধ পথে তথা ব্যাংকিং চ্যানেলে তাদের কষ্টার্জিত অর্থ (রেমিট্যান্স) দেশে পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। রিয়াদের বাংলাদেশ দূতাবাসে 'বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণের প্রয়োজনীয়তা, প্রতিবন্ধকতা ও সমাধানের উপায়' শীর্ষক সেমিনারে এই আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত বলেন, সৌদি আরবে বসবাসরত প্রায় ২৬ লাখ বাংলাদেশি বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠালে দেশে ডলারের রিজার্ভ আরও বাড়বে।
তিনি বলেন, রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করে তা আরও সহজ করতে সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বিগত অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স গেছে প্রায় ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যার মধ্যে সৌদি প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন ডলার। দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোয় সৌদি প্রবাসীরাই সর্বোচ্চ। এজন্য তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান রাষ্ট্রদূত।
তিনি বিদেশে আসার আগে সবাইকে অবশ্যই একটি ব্যাংক একাউন্ট খোলার আহ্বান জানান। বলেন, তাহলে সহজেই যার যার নিজস্ব একাউন্টে টাকা পাঠানো ও তার হিসাব রাখা সহজ হয়। প্রবাসীদের সময়মত নিজের পাসপোর্ট ও ইকামার মেয়াদ হালনাগাদ রাখার পরামর্শ দেন রাষ্ট্রদূত। কারন ইকামার মেয়াদ না থাকলে বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠানো সম্ভব হয় না। তাই এ বিষয়ে প্রবাসীদের সচেতন হতে হবে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বাড়ায় আমাদের আমদানি ব্যয়ও বেড়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের আমদানি ব্যয় মেটানো ও দেশের অর্থনীতি গতিশীল রাখার লক্ষ্যে বৈধ পথে তথা ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে অর্থ পাঠানোর সব প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানাই।
তিনি বলেন, বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠালে পরিবারের প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি দেশের উন্নয়নে আপনার অবদান নিশ্চিত হয়। এছাড়া দেশে আপনার আয় বৈধ বলে বিবেচিত হয়। সেই সঙ্গে সরকার ঘোষিত ২.৫ শতাংশ হারে প্রণোদনাও পাওয়া যায়। প্রবাসী আয়ে সম্পূর্ণ করমুক্ত সুবিধাও পাওয়া যায়। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে ও প্রধানমন্ত্রীর ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নে আসুন সবাই বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাই।
সেমিনারে রিয়াদের ব্যবসায়ী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ নানা শ্রেণি-পেশার প্রবাসী বাংলাদেশিরা উপস্থিত দেন। এছাড়া জেদ্দা, দাম্মাম, তাবুকসহ বিভিন্ন শহরে বসবাসরত বাংলাদেশিরা জুমের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
২৬ জন প্রবাসী সেমিনারে তাদের বিভিন্ন মতামত, প্রশ্ন ও সুপারিশ তুলে ধরেন। তারা প্রবাসীদের সরকারের পেনশনের আওতায় আনার দাবি জানান। দূতাবাসের কর্মকর্তারা এ সময় প্রবাসীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ও তাদের সুপারিশগুলো যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেন।
অনুষ্ঠানে রেমিট্যান্স বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেন দূতাবাসের সোনালী ব্যাংক প্রতিনিধি মো. জসীম উদ্দিন খান, শ্রম কাউন্সেলর রেজায়ে রাব্বি, ইকোনমিক কাউন্সেলর মুর্তুজা জুলকার নাঈন নোমান ও মিশন উপপ্রধান আবুল হাসান মৃধা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দূতাবাসের কাউন্সেলর মো. বেলাল হোসেন।
দূতাবাসের ডিফেন্স অ্যাটাশে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম ফারুক অনুষ্ঠানে প্রবাসীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
এছাড়া্ অনলাইনে যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলার জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল হক।
বাংলাদেশ সময়: ০১৫৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২২
টিআর/এমএমজেড