ঢাকা: চলতি বছর বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের শীর্ষ নেতাদের পদচারণা ছিল ঢাকায়। এ নেতাদের সফরে দেশগুলোর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে।
২০২৩ সালে বিশ্বের বেশ কয়েকজন প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ঢাকা সফর করেছেন। এর মধ্যে রয়েছেন- ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, মরিশাসের প্রেসিডেন্ট পৃথ্বীরাজ সিং রূপণ, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া, সৌদি বিনিয়োগবিষয়ক মন্ত্রী খালিদ আল ফালিহ, মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুতিন বিন ইসমাইল প্রমুখ।
চলতি বছর ১০ সেপ্টেম্বর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ঢাকা সফরে আসেন। সে সময় ঢাকা-প্যারিসের মধ্যে বঙ্গবন্ধু-২ স্যাটেলাইট ও নগর অবকাঠামো উন্নয়ন বিষয়ে দুটি সমঝোতা সই হয়। এটি ছিল তিন দশক পর ফ্রান্সের কোনো প্রেসিডেন্টের ঢাকা সফর। এর আগে ১৯৯০ সালে ফ্রান্সের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া মিতেরা ঢাকা সফর করেছিলেন।
মরিশাসের প্রেসিডেন্ট পৃথ্বীরাজ সিং রূপণ চলতি বছর ১১ মে ষষ্ঠ ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্সে যোগ দিতে ঢাকায় আসেন। ওশান কনফারেন্সে এলেও তিনি বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেন। এটি ছিল বাংলাদেশে মরিশাসের কোনো প্রেসিডেন্টের প্রথম সফর।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ গত ৭ সেপ্টেম্বর দুদিনের সফরে ঢাকায় আসেন। স্বাধীনতার ৫২ বছরে মধ্যে রাশিয়ার কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই প্রথমবার ঢাকা সফর করেন। বৈশ্বিক রাজনীতিতে পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে কোণঠাসা হয়ে পড়া রাশিয়া বাংলাদেশের পুরনো বন্ধু হিসেবে দুই দেশের মধ্যে গভীর সম্পর্কের বার্তা দেন।
ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলনে যোগ দিতে ১১ মে ঢাকায় আসেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সে সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন।
চলতি বছর ১০ জানুয়ারি আফ্রিকা যাওয়ার পথে ঢাকায় দুই ঘণ্টা যাত্রাবিরতি করেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং। সে সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকজন শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা ঢাকা সফরে আসেন। সফরকালে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের তাগিদ দেন তারা।
চলতি বছর ১১ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া, পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু এবং যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) উপ-সহকারী প্রশাসক অঞ্জলী কৌর ঢাকা সফর করেন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তার গত ১৬ অক্টোবর ঢাকা সফর করেন।
সৌদি বিনিয়োগবিষয়ক মন্ত্রী খালিদ আল ফালিহর নেতৃত্বে ৪০ সদস্যদের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল ৬ ডিসেম্বর ঢাকা সফরে আসে। তখন সৌদি আরবের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল অপারেটর আরএসজিটিআই ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মধ্যে পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার চুক্তি সই হয়। এ ছাড়া সৌদি আরবের সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহমন্ত্রী তাওফিক আল-রাবিয়া ঢাকা সফর করেন।
চলতি বছর আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সান্তিয়াগো আন্দ্রেস ক্যাফিয়েরো, মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুতিন বিন ইসমাইল ঢাকা সফর করেন। এ ছাড়া ভুটানের ‘কুইন মাদার’ দরজি ওয়ানমগমো ওয়াংচুকান্দ ঢাকায় যাত্রাবিরতি দেন।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ২০২৩ সালে বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা ঢাকা সফর করেছেন। এর মধ্যে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, মরিশাসের প্রেসিডেন্ট পৃথ্বীরাজ সিং রূপণ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের মন্ত্রীরা ঢাকায় আসেন। এর মধ্যদিয়ে এসব দেশের সঙ্গে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক শক্তিশালী হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২৩
টিআর/আরএইচ