মঙ্গলবার (৬ নভেম্বর) পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বন্ড ছেড়ে ৭শ’ কোটি টাকার ফান্ড সংগ্রহ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এই টাকা বুধবার থেকে বাজারে দীর্ঘমেয়াদে বাজারে তালিকাভুক্ত ভালো কোম্পানি দেখে বিনিয়োগ করা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন আইসিবি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কাজী ছানাউল হক।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, খারাপ সময়ে পুঁজিবাজারকে সার্পোট দেওয়ার জন্য আইসিবিকে ২ হাজার কোটি টাকার ফান্ড গঠনের অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ফান্ডের নামে বন্ড ছেড়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৭শ’ কোটি টাকার এই অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহে বাকি ১ হাজার ৩শ’ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে।
আইসিবি’র এমডি কাজী ছানাউল হক বলেন, পুঁজিবাজারে ৭৫ শতাংশ অর্থ বিনিয়োগের শর্তে অনুমোদন দেওয়া এই ফান্ডের অর্থ বুধবার থেকে বিনিয়োগ করা হবে। এখন বাজারে ভালো কোম্পানির শেয়ার কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। ফলে দীর্ঘমেয়াদে চিন্তা করে ভালো কোম্পানির শেয়ারের বিনিয়োগ করা হবে। আর যখন বাজার ভালো হবে তখন এই শেয়ারগুলোর দামও বাড়বে, বিক্রি করলে ভালো মুনাফাও হবে। তবে দুর্বল শেয়ারে বিনিয়োগ করবো না।
উল্লেখ, গত ১১ অক্টোবর ৭৫ শতাংশ অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের শর্তে আইসিবিকে দুই হাজার কোটি টাকার বন্ড অনুমোদন দেয় বিএসইসি। এতে বলা হয়, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিনেন্স, ১৯৬৯ সালের সেকশন ২ সিসি’র শর্তানুযায়ী প্রতিষ্ঠানটিকে বন্ড ছেড়ে পুঁজিবাজার থেকে টাকা উত্তোলনের জন্য অনুমোদন দেওয়া হলো।
আইসিবি ২ হাজার কোটি টাকার নন-কনভার্টেবল ফিক্সড রেট সাব-অর্ডিনেটেড বন্ড ইস্যু করবে। যা বিদ্যমান করপোরেট শেয়ারহোল্ডারের পাশাপাশি অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ইস্যু করবে।
তার প্রায় ১ মাস পর ফান্ড গঠন করে আনুষ্ঠানিকভাবে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ শুরু করছে আইসিবি। প্রতিষ্ঠানটি এমন সময় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ শুরু করেছে যখন আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে চলমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা রয়েছে বিনিয়োগকারীদের। এর মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা হাত গুটিয়ে বসে আছে। অন্যদিকে বাজার আরও খারাপ হবে শঙ্কায় শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
ফলে সর্বশেষ লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসেই পুঁজিবাজারে দরপতন হয়েছে। এই দরপতনে লেনদেন, সূচক ও বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। আর এসবের ফলে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি কমেছে হাজার হাজার কোটি টাকা।
এই পরিস্থিতি আইসিবি’র ফান্ডের অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হলে ‘বাজারের চেহারার কিছুটা পরিবর্তন হবে’ বলে মনে করেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান। তিনি বলেন, বাজারকে তারল্য সংকট থেকে উত্তোলনে আইসিবিকে দুই হাজার কোটি টাকার ফান্ড দেওয়া হয়েছে। এই ফান্ডের টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ শুরুর পাশাপাশি চীনা কনসোটিয়ামের অর্থও পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ শুরু হয়েছে। এই দু’ধরনের বিনিয়োগ আতঙ্ক কাটাতে সহায়তা করবে। পাশাপাশি বাজারকে ইতিবাচক ধারায় ফেরাতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০১৮
এমএফআই/আরআর