এএফসি কাপের জোনাল সেমিফাইনালে খেলা হলো না বসুন্ধরা কিংসের। আজ ভারতের ক্লাব ওড়িশা এফসির বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরে গ্রুপের দ্বিতীয় স্থানে থেকে আসর শেষ করতে হয়েছে কিংসকে।
প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে রেফারির নেওয়া বিতর্কিত সিদ্ধান্তই মূলত কপাল পুড়িয়েছে কিংসের। কিংসের অর্ধে মাঝমাঠে বল দখলের লড়াইয়ে খানিকটা পেছনে থেকে দৌড়ে এসে ট্যাকল করেন আসরর গফুরভ। খুব ভয়ঙ্কর বা বিপজ্জনক ট্যাকেল ছিল না। কিন্তু সেই ফাউলেই ভিয়েতনামের রেফারি লাল কার্ড দেখান সরাসরি।
কিংসের ফুটবলার ও ডাগআউট এই সিদ্ধান্ত মেনেই নিতে পারেনি। বিশেষ করে গফুরভ মাঠ ছেড়েছেন অশ্রুসিক্ত নয়নে। কিংসের স্প্যানিশ কোচ টাচলাইনে দাড়িয়ে প্রতিবাদ করেছেন। এজন্য তাকেও একটি হলুদ কার্ড দেখিয়েছেন রেফারি। বিরতির সময়ও কিংস কোচ প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছিলেন।
ম্যাচে এমন কিছুর আশঙ্কা আগেই করেছিলেন বসুন্ধরার কোচ অস্কার ব্রুজন। এর আগেও কিংসকে ডু অর ডাই ম্যাচে ভারতের ক্লাব মোহনবাগানের বিপক্ষে বাজে রেফারিংয়ের শিকার হতে হয়েছিল। ২০২১ সালে মালদ্বীপে মোহনবাগানের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ শেষ ম্যাচে কিংসের ডিফেন্ডার সুশান্ত ত্রিপুরাও একটি বিতর্কিত লাল কার্ড দেখে মাঠ ছেড়েছিলেন। এতে ফলাফল কিংসের বিপক্ষে যায় এবং ভারতের মোহনবাগান গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়। এই ম্যাচের আগে প্রেস কনফারেন্সে রেফারিং যেন সুষ্ঠু হয় সেই কথা বলেছিলেন ব্রুজন। তবে তেমনটাই হলো যেটা শঙ্কা ছিল।
ম্যাচের শুরু থেকই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে স্বাগতিক ওড়িশা। একের পর এক আক্রমণ করে কিংসের রক্ষণকে ব্যস্ত রাখে ওড়িশা। তবে তাদের আক্রমণ শক্তহাতে প্রতিহত করতে থাকেন কিংসের গোলরক্ষক মেহেদি হাসান শ্রাবণ এবং ডিফেন্ডাররা। ম্যাচের সাত মিনিটে আহমেদ জাহুর ফ্রি-কিক থেকে রয় কৃষ্ণার নেয়া শট সহজেই তালুবন্দী করেন কিংসের গোলরক্ষক মেহেদি হাসান শ্রাবণ। ম্যাচের ১০ মিনিটে গোল পেতে পারত ওড়িশা। জেরির বাড়ানো বল ডি বক্সের ভেতর পেয়ে যান গোদার্দ। তার ক্রস ফিরিয়ে দেন মেহেদি হাসান শ্রাবণ।
২৯ মিনিটে প্রথম গোলে শট নেয় বসুন্ধরা কিংস। মাঝ মাঠে বল পেয়ে ডান প্রান্ত দিয়ে কাউন্টার অ্যাটাকে ওঠেন রাকিব হোসেন। তবে তার শট সহজেই তালুবন্দী করেন ওড়িশার গোলরক্ষক অমরেন্দ্র সিং। এরপর থেকেই নিজেদের খেলাটা খেলতে শুরু করে বসুন্ধরা কিংস। রক্ষণ সামলে আক্রমণে উঠতে থাকে কিংস।
প্রথমার্ধের আসরর গফুরভকে লঘু পাপে গুরু দণ্ড দেন রেফারি। ছোট ফাউলের জন্য লাল কার্ড দেখতে হয় তাকে। তবে ফাউলের পর ওড়িশার ফুটবলার জেরি চড়াও হন গফুরভের উপর। সেই ভুল যেন চোখেই দেখলেন না রেফারি। এমন কিছুর আশঙ্কা ম্যাচের আগেই করেছিলেন বসুন্ধরার কোচ অস্কার ব্রুজন। এর আগেও কিংসকে ডু অর ডাই ম্যাচে ভারতের ক্লাব মোহনবাগানের বিপক্ষে বাজে রেফারিংয়ের শিকার হতে হয়েছিল।
দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার বাড়ায় দুই দলই। ৪৯ মিনিটে মরিসিও বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট সহজেই রুখে দেন কিংসের গোলরক্ষক মেহেদি হাসান শ্রাবণ।
৫৫ মিনিটে দারুণ এক গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন দোরিয়েলতন গোমেজ। রবসনের থ্রু বল থেকে কাউন্টার অ্যাটাকে ওঠেন তিনি। ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে বক্সে ঢুকে গেলেও লক্ষ্যে রাখতে পারেননি শট।
৬১ জাহুর নেয়া কর্নার থেকে হেড করে ওড়িশাকে এগিয়ে দেন মুরতাদা ফল। গোল হজমের পর আক্রমণের ধার বাড়ায় কিংস। তবে শেষ পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা মেলেনি। পুরো ম্যাচে কিংসের গোলরক্ষক শ্রাবণের পারফরম্যান্স ছিল প্রশংসার দাবিদার। শেষ পর্যন্ত ১-০ ব্যবধানে জয় নিয়ে ইন্টার জোনাল সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ওড়িশা। আরও একবার স্বপ্নভঙ্গ হলো কিংসের।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২৩
এআর