ঢাকা: পর্যটন শিল্পে যেসব হুমকি রয়েছে সেগুলো নিরসনের পথ খুঁজতে হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। পাশাপাশি পর্যটন স্থানগুলো পর্যটকদের জন্য নিরাপদ করতে হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) এর অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা জানান।
‘এসডিজি অর্জনের জন্য পর্যটন: বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারটি আয়োজন করে বিআইআইএসএস।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে আমাদের পর্যটন শিল্প সম্পদ বাড়ানো এবং কর্মক্ষেত্র তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। যা পরবর্তীতে অর্থনীতি বাড়ানো এবং দারিদ্র্য নিরসনে কাজ করছে। প্রকৃত পক্ষে ভালো পরিকল্পিত ম্যানেজেবল পর্যটন পরিবেশগত কালচারাল হেরিটেজ সংরক্ষণ, বাণিজ্য সুযোগ বাড়ানো ও আন্তঃসাংস্কৃতিক সম্পর্ক তৈরি করতে সাহায্য করে।
প্রতি বছর পর্যটকদের সংখ্যা বাড়ছে জানিয়ে উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন আরও বলেন, বৈশ্বিক জিডিপির এক চতুর্থাংশ অবদান রাখে পর্যটন শিল্প। পর্যটন শিল্প শুধু এসডিজি ৪, ৮, ১২ তেই কাজ করছে না। অন্য লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়নে সরাসরি প্রভাব ফেলছে। দারিদ্র্য দূরীকরণ, লিঙ্গ বৈষম্য, পরিবেশ রক্ষায় এর ভূমিকা রয়েছে। তাই এ সেক্টরে অধিক পরিমাণে বেসরকারি বিনিয়োগ এবং অর্থপ্রবাহ প্রয়োজন। এছাড়াও এ সেক্টরে দীর্ঘ প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরি করতে বাৎসরিক ১০০ বিলিয়ন বিনিয়োগ করা হচ্ছে। পর্যটন ব্যবসার স্থায়ীত্বের জন্য ভর্তুকি সুবিধাসহ বেসরকারি বিনিয়োগ প্রয়োজন। যে ছোট ছোট পর্যটনের বেসরকারি সংস্থা আছে তাদের ভর্তুকি দিয়ে তা বুমিং করতে হবে। যেখানে ভলিয়ান্টিরি সুযোগ কম, সেখানে সরকারি প্রতিষ্ঠান পলিসি তৈরি করে, টেকনোলোজি বাড়িয়ে ব্যবসার প্রসার ঘটাতে হবে। এতে টেকসই উন্নয়নে পর্যটন একটি অন্যতম ক্ষেত্র হবে।
বাংলাদেশ একটি পর্যটন সমৃদ্ধ দেশ জানিয়ে উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, আপনারা জানেন বিভিন্নভাবে বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন দেশের বর্ডারে অস্থিরতা চলছে। এতে শান্তিতে পর্যটকরা ঘুরতে পারছে না। কিন্তু ট্যুরিজমের প্রত্যক্ষ উপকারিতার কথা অস্বীকার করা যায় না। এটি কর্ম তৈরি, আঞ্চলিক উন্নয়ন, এবং গঠনমূলক উন্নয়নে কাজ করছে। একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি এর প্রক্রিয়াকে চলমান রাখতে পারে। তার সঙ্গে সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তৈরি করে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহান বলেন, আমাদের স্বল্পমেয়াদ থেকে দীর্ঘমেয়াদে চিন্তা করতে হবে। সরকারি এবং বেসরকারি সহযোগিতার মাধ্যমে আমাদের স্বল্প এবং দীর্ঘ পরিকল্পনা করতে হবে। স্বল্পমেয়াদে আমি ট্যুরিজম বোর্ড, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন এবং বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট পুলিশের সহায়তায় কীভাবে পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা যায়, সে বিষয়ে নিরীক্ষা করবো। আমরা একটি কমিটি গঠনের মাধ্যমে কীভাবে দ্রুত অ্যাকশনে যেতে পারি এবং পরবর্তীতে তার নিরীক্ষার ব্যাপারটি নিশ্চিত করতে পারি সেটি দেখবো।
পাশাপাশি ভিসা জটিলতা, ইমিগ্রেন্টস অ্যাপ বাস্তবায়ন, বাজেটে পর্যটন জিডিপি রেশিও এবং সহজ বিদেশি বিনিয়োগের ব্যবস্থার চেষ্টা করা হবে বলেও জানান তিনি।
বিআইআইএসএস এর চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত এ এফ এম গওসোল আযম সরকারের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে ট্যুরিজম রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক আবু সুফিয়ান। এছাড়া বিআইআইএসএস এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইফতেখার আনিসের স্বাগত বক্তব্যে সেমিনারে আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিআইআইএসএস এর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. সুফিয়া খানম, ট্যুরিস্ট পুলিশের ডিআইজি মো. আবু কালাম সিদ্দিক, এফবিসিসিআই এর ডিরেক্টর ইনচার্জ ড. মুনাল মাহবুব।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৪
এসসি/আরআইএস