তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে রাঙ্গামাটির একটি বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে পর্যটনপ্রেমী মানুষের কাছে। কেননা পার্বত্য এই জেলাটিতে রয়েছে বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র।
সাধারণত যে সব পর্যটক রাঙ্গামাটিতে আসেন তারা ঝুলন্ত সেতুটি না দেখে ফেরত যান না। কাপ্তাই হ্রদের একাংশে ৩৩৫ ফুট লম্বা এই ব্রিজটি পর্যটকদের কাছে রাঙ্গামাটির মূল আকর্ষণ। এ সেতুকে বলা হয় ‘সিম্বল অফ রাঙ্গামাটি’। নয়নাভিরাম বহুরঙা এই ঝুলন্ত সেতু দু’টি বিচ্ছিন্ন পাহাড়ের মধ্যে গড়ে দিয়েছে সম্পর্ক। সেতুটি পারাপারের সময় সৃষ্ট কাঁপুনি পর্যটককে দেয় ভিন্ন দ্যোতনা।
সেতুটি দেখতে প্রতিদিন কয়েকশ দর্শনার্থী রাঙ্গামাটিতে ভিড় জমান। তবে এটি দেখতে হলে পর্যটন কর্পোরেশনকে দিতে হবে ২০ টাকা। এছাড়াও এখানে আছে সময় কাটানোর অনেক উপকরণ। আছে অডিটোরিয়াম, পার্ক, পিকনিক স্পট।
রাজধানী ঢাকা থেকে আগত দর্শনার্থী সজীব আহমেদ তিন পার্বত্য জেলায় ঘুরতে ভ্রমণ শুরু করেছেন রাঙ্গামাটি দিয়ে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, পার্বত্য জেলাগুলোতে ঘুরতে এসে ঝুলন্ত সেতু না দেখলে মনে হবে কিছুই দেখিনি।
রাজশাহী থেকে আগত আরেক দর্শনার্থী তিথি রহমান বলেন, সেতুর নিচ দিয়ে কাপ্তাই হ্রদের পানি ও চারপাশের সুন্দর সুন্দর পাহাড় দেখে আমি মুগ্ধ! বাংলাদেশে এত সুন্দর জায়গা আছে তা এখানে না এলে বিশ্বাস হতো না। এত সুন্দর দৃশ্য পেয়ে অনেক সেলফি তুলেছি।
সেতুর উপর দাঁড়ালেই দেখা যাবে কাপ্তাই হ্রদের মনোরম দৃশ্য। এছাড়া সেতুর অপর দিকের পাহাড়েই রয়েছে উপজাতিদের গ্রাম। ইচ্ছে হলেই দেখতে পাওয়া যাবে তাদের জীবন-যাপন ও আচার অনুষ্ঠান।
এছাড়া সেতুর নিচে কাপ্তাই হ্রদের দর্শনার্থীদের ঘোরার জন্য রয়েছে ইঞ্জিন চালিত বোটের ব্যবস্থা। দর্শনার্থীরা এ সব বোটে ঘণ্টায় ২০০-৩০০ টাকা ভাড়ায় কাপ্তাই হ্রদের পানির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।
রাঙ্গামাটি জেলার আকর্ষণীয় ও দর্শনীয় স্থানগুলো হলো- উপজাতীয় জাদুঘর, পেদা টিং টিং, টুকটুক ইকো ভিলেজ, যমচুক, রাইক্ষ্যং পুকুর, নির্বাণপুর বন ভাবনা কেন্দ্র, রাজবন বিহার, ঐতিহ্যবাহী চাকমা রাজবাড়ি, উপজাতীয় টেক্সটাইল মার্কেট, ফুরমোন পাহাড়, নৌ-বাহিনীর পিকনিক স্পট, রাজস্থলী ঝুলন্ত সেতু, সাজেক ভ্যালি, আর্যপুর ধর্মোজ্জ্বল বনবিহার, ন-কাবা ছড়া ঝর্না, ডলুছড়ি জেতবন বিহার, বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র ও কাট্টলী বিল।
রাঙ্গামাটির এই আকর্ষণীয় স্থানগুলোতে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের জন্য থাকা-খাওয়ার রয়েছে সুব্যবস্থা। সরকারি-বেসরকারিভাবে তৈরি হয়েছে অসংখ্য হোটেল, মোটেল। খুব সহজেই দর্শনার্থীরা এ সব হোটেল ও মোটেলে বুকিং দিতে পারবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৭
এমএ/এসআরএস/এমজেএফ