বাংলানিউজকে দেওয়া একান্ত স্বাক্ষাৎকারে কলকাতার সৌহার্দ্য শ্যামলী পরিবহনের স্বত্বাধিকারী অবনি কুমার ঘোষ এ কথা জানান।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) কলকাতার পশ্চিমবঙ্গ পরিবহন নিগমের দপ্তরে বাস সার্ভিস চালু সংক্রান্ত সভা শেষে তিনি বাংলানিউজকে এ সাক্ষাৎকার দেন।
এ সময় তিনি বলেন, পরিবহন দপ্তরের সচিবের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। খুলনা থেকে সরাসরি কলকাতার বাস সার্ভিস চালু করলে তাদের কোন আপত্তি নেই। যাত্রীদের দীর্ঘ দিনে দাবি ও স্বপ্ন পূরণ করতে ১ আগস্ট থেকে খুলনা থেকে সরাসরি কলকাতার বাস চালু করা হবে।
অবনি কুমার ঘোষ বলেন, ঢাকা-খুলনা-কলকাতা বাস সার্ভিস চালু হওয়ার পর ঢাকার যাত্রীর চেয়ে খুলনার যাত্রী বেশি থাকলেও বাসে ৮-১০টি টিকিট খুলনার জন্য নির্ধারিত থাকতো। এতে খুলনার সব যাত্রীকে টিকিট দেওয়া সম্ভব হতো না। এছাড়া ঢাকা থেকে কলকাতাগামী বাস অনেক সময় ফেরি ও যানজটের কারণে খুলনায় আসতে দেরি করতো। এতে খুলনার যাত্রীরা ক্ষুব্ধ হতো। সরাসরি সার্ভিস চালু হলে পুরো বাসের ৪৫টি টিকিটই খুলনার যাত্রীদের জন্য নির্ধারিত থাকবে।
তিনি জানান, খুলনা থেকে সরাসরি বাস যোগাযোগ চালু হওয়ার মধ্য দিয়ে নিরাপদে ও স্বাচ্ছন্দে রোগী, পর্যটক, ব্যবসায়ীরা কলকাতায় পৌঁছুতে পারবেন। এর মাধ্যমে দুই দেশের বাণিজ্যে আরো বেশি সম্প্রসারণ ঘটবে।
এ বাসের সুবিধা সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রথম পর্যায়ে একটি বাস চালু করা হবে। পরবর্তীতে বাসের সংখ্যা বাড়ানো হবে। একদিন পর একদিন বাসটি সকাল ৮টায় খুলনা কাউন্টার থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে। এ বাসটিতে যাত্রীদের নাস্তা ও পানি দেওয়া হবে। ক্রমান্বয়ে বায়ো টয়লেট বাস চালু করা হবে এ রুটে। যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখে এই পরিষেবা চালু হবে।
সৌহার্দ্য শ্যামলী পরিবহনের খুলনা কাউন্টার ইনচার্জ শেখ ইফতেখার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকা-খুলনা-কলকাতা বাস সার্ভিস চালু হলেও এর ৯০-৯৫ ভাগ যাত্রী খুলনার। কিন্তু খুলনার যাত্রীর জন্য নির্ধারিত কোটায় যেতে হবো। খুলনার মানুষের দাবি অনুযায়ী, মালিকপক্ষকে বিষয়টি জানালে তারা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বৈঠক করে খুলনা থেকে সরাসরি কলকাতার বাস চালুর সিদ্ধান্ত নেয়।
তিনি জানান, ১ আগস্ট খুলনা-কলকাতা বাস সার্ভিস চালুর প্রথম দিন উদ্বোধন উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর জন্মস্থান গোপালগঞ্জ থেকে বাসটি খুলনা হয়ে কলকাতায় যাবে। এরপর থেকে খুলনা থেকে কলকাতায় যাওয়া আসা করবে। টিকিটের ভাড়া ৮০০ টাকা।
বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) রেজাউল করিম মোবাইলে বাংলানিউজকে বলেন, বেনাপোল স্থলবন্দর ১ আগস্ট থেকে সপ্তাহের সাত দিন ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা শুরু হলে বাংলাদেশের মানুষ আরও বেশি ভারত যাবেন। ভারতের নাগরিকরাও এ দেশে আসবেন। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, বাণিজ্য সম্প্রসারণ তথা আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সহজ ও উন্নত হবে।
উল্লেখ্য, গত ২২ মে গ্রিন লাইন পরিবহনের বাস দিয়ে কমলাপুর বিআরটিসি আন্তর্জাতিক বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকা-খুলনা-কলকাতা রুটে যাত্রা শুরু হয়। ওই দিন কলকাতা থেকে ছেড়ে আসা সৌহার্দ্য শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস যাত্রী নিয়ে খুলনা হয়ে ঢাকায় যায়।
এর আগে ৮ এপ্রিল নয়া দিল্লি থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে খুলনা-কলকাতা রুটে বাস ও ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৭
এমআরএম/জেডএম