ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পর্যটন

দৃষ্টিনন্দন কাঠের সেতু পর্যটক টানবে দিনাজপুরে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৭ ঘণ্টা, জুন ২, ২০১৯
দৃষ্টিনন্দন কাঠের সেতু পর্যটক টানবে দিনাজপুরে শেখ ফজিলাতুননেছা কাঠের সেতু

দিনাজপুর: দৃষ্টিনন্দন কাঠের সেতুটিকে দিনাজপুরবাসীর জন্য ঈদ উপহারই বলা যায়। নবাবগঞ্জ উপজেলার আশুড়ার বিল জাতীয় উদ্যানের ৯০০ মিটার দীর্ঘ আঁকাবাঁকা সেতুটি ঈদে ব্যাপক পর্যটক টানবে বলেই ধারণা সংশ্লিষ্টদের। এলাকাবাসীকে আনন্দে ভাসাতে তাই ঈদের আগেই উদ্বোধন করা হলো ‘শেখ ফজিলাতুননেছা কাঠের সেতু’।

নবাবগঞ্জ উপজেলার শেখ রাসেল জাতীয় উদ্যানে (আশুড়ার বিল) দৃষ্টিনন্দন শেখ ফজিলাতুননেছা কাঠের ব্রিজটির উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক। নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান ও স্থানীয় সংসদ সদস্য শিবলী সাদিকের প্রচেষ্টায় এ কাঠের সেতুটি তৈরি হয়েছে।

জানা যায়, দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার আশুড়ার বিল শেখ রাসেল জাতীয় উদ্যান হিসেবে ২৪ অক্টোবর ২০১০ সালে গেজেট প্রকাশিত হয়। এই জাতীয় উদ্যানের আয়তন ৫১৭.৬১ হেক্টর বা ১২৭৮.৪৯ একর। জাতীয় উদ্যানের ভিতরে বিশাল শালবন ছাড়াও আশুড়ার বিল, সীতার কোট বিহার ও বাল্মিকী মুনির থান অবস্থিত। জাতীয় উদ্যানকে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য আশুড়ার বিলের পরিচর্যার উদ্যোগ হাতে নেন ইউএনও মশিউর রহমান। বর্ষা মৌসুমে এই বিল হয়ে ওঠে অপরূপ।

ব্রিজটি তৈরি হয়েছে এই বনের শাল কাঠ দিয়ে। ব্যয় হয়েছে প্রায় ১২ লাখ টাকা। দেখতে অনেকটা ইংরেজি অক্ষর জেড এর মতো।

শেখ ফজিলাতুননেছা কাঠের সেতুতিনি এই আশুড়া বিলে নিজে অন্যদের নিয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করেছেন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর মনমাতানো নান্দনিক এই বিলটিতে বর্ষা মৌসুমে দেশি প্রজাতির মাছ, হারিয়ে যাওয়া জাতীয় শাপলা ফুলের বিস্তার- সব মিলিয়ে পর্যটকরা এখানে বারবার আসতে চাইবেন।

বিলটির গুরুত্ব তুলে ধরতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নেন একের পর এক উদ্যোগ। শাপলা ফুলের বংশবিস্তারে ফুলের চারা রোপণ, বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের চারা লাগানো, জাতীয় উদ্যানের শাল গাছে পাখির অভয়াশ্রমের জন্য মাটির হাড়ি ঝুলিয়ে পাখির আবাসস্থানের ব্যবস্থাসহ আধুনিকায়নে নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন উদ্যোগ।  

পর্যটক আকর্ষণে কাঠের আঁকাবাঁকা সেতুটি নির্মাণ থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারে মুগ্ধ স্থানীয় ও দেশের বিভিন্ন এলাকার পর্যটকরা।  

দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগের চরকাই রেঞ্জ কর্মকর্তা নিশিকান্ত মালাকার বলেন, সেতুটির নির্মাণ কাজের জন্য সহযোগিতার চেষ্টা করেছি। ঈদআনন্দ ছাড়াও পর্যটকরা এখানে দলে দলে আসবেন এতে কোনো সন্দেহ নেই।

নবাবগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত কুমার সরকার বলেন, সারাদেশের পর্যটক নিরাপদে এখানে আসতে পারবেন। দেশের যে কোনো জেলা থেকে বিরামপুরের ঢাকা মোড় এসে নবাবগঞ্জ রোডে শগুনখোলা গ্রামের আদর্শ কাব থেকে উত্তর দিকে আড়াই কিলোমিটার জাতীয় উদ্যান শালবনের ভিতরের রাস্তা দিয়ে যেতে হবে। আশুড়ার বিল থেকে আবার শালবনের মধ্য দিয়ে নবাবগঞ্জ সদরে তিন কিলোমিটার অতিক্রম করে উপজেলা সদরে আসা যাবে।

নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মশিউর রহমান বলেন, এই বিলের সৌন্দর্য বাড়াতে সামান্য খরচে কাঠের আকাঁবাকাঁ সেতুটি তৈরি করতে চেষ্টা করেছি। এছাড়া বন কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় বনে বিভিন্ন জাতের গাছ রোপণ করে হারিয়ে যাওয়া প্রজাতির পাখির আবাস তৈরির চেষ্টা করেছি, যা ভালো ভূমিকা করবে বলে আশাকরি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬, জুন ০২, ২০১৯
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।