ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পর্যটন

তিস্তা-ধরলার তীরে মানুষের ঢল

খোরশেদ আলম সাগর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০২ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৯
তিস্তা-ধরলার তীরে মানুষের ঢল

লালমনিরহাট: বিনোদন কেন্দ্রহীন লালমনিরহাটে তিস্তা ও ধরলা নদীর তীরে নামে বিনোদন প্রেমীদের ঢল। দুই নদীর ওপর গড়ে ওঠা পাঁচটি সেতু ও ব্যারেজেই নির্মল বিনোদন খুঁজে নেন জেলাবাসী। 

জানা যায়, দৈর্ঘ্য প্রায় শতাধিক কিলোমিটারের জেলা লালমনিরহাটের দক্ষিণ-পশ্চিমে তিস্তা ও উত্তর পুর্ব সীমান্ত দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে খরস্রোতা ধরলা নদী। দুই নদীর চিরাচরিত দৃশ্য আর নদীর বুকে জেগে ওঠা চর ও কাশবন মুগ্ধ করে জেলার প্রকৃতি প্রেমীদের।

এছাড়াও নদীর ওপর নির্মিত সেতু ও সেচ প্রকল্পে ঈদসহ বিভিন্ন অবসর সময়ে বিনোদন প্রেমীদের ঢল নামে এসব স্থানে। ঈদুল আজহার দিনেও এর কমতি হয়নি।

জেলাবাসীর বিনোদন প্রেমীদের বর্তমানে তালিকার শীর্ষে রয়েছে রংপুর লালমনিরহাটের সংযোগ স্থল রংপুরের গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতু। প্রতি ঈদসহ যেকোনো ছুটির দিনে বিনোদনপ্রেমী মানুষের ঢলে মুখর হয়ে ওঠে এ সেতু প্রাঙ্গণ। ঈদের দিন থেকে বিভিন্ন এলাকার শত শত মানুষ প্রতিদিন আসছে এখানে। সব বয়সের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ সেতুতে এসে নিজের মতো করে আনন্দ করছে।

বিনোদন প্রেমীদের জন্য রয়েছে নৌকা ভ্রমণসহ তিস্তার তীরে মুক্ত বাতাসে আবগাহনের অবারিত সুযোগ। প্রিয়জনকে ঈদে বাড়তি আনন্দ দিতে প্রেমিক-যুগলদের পছন্দের স্থান এ সেতু। একই রকম মনোরম দৃশ্য অবলোকনে বিনোদন প্রেমীদের ভিড় জমে কুড়িগ্রামের সঙ্গে লালমনিরহাটকে যুক্ত করা শেখ হাসিনা ধরলা সেতু। কমতি নেই তিস্তা সড়ক ও রেলসেতু এলাকায়। পর্যটন কেন্দ্র না হলেও মিনি পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয় তিস্তা ও ধরলা নদীর তীর। স্থানীয়দের ভাষায় এটাই এ এলাকার কক্সবাজার।

জেলার হাতীবান্ধা উপজেলায় অবস্থিত দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজেও বিনোদন প্রেমীদের ঢল নেমেছে। প্রচণ্ড গরমে একটু মানসিক প্রশান্তি পেয়ে যেকোনো বয়সী মানুষের কাছে এটি পছন্দের শীর্ষে। ব্যারেজের দু’পাড়ে রয়েছে বিশাল বিশাল গাছের বনায়ন, রয়েছে স্পিডবোটে তিস্তা নদী ঘুরে বেড়ানো। রয়েছে সাঁজ আকাশের পাখির কলকাকলি। সব মিলে বিনোদনের দারুণ উপভোগ্য জায়গা তিস্তা ব্যারেজ।
তিস্তা ও ধরলা নদীর তীরে বিনোদন প্রেমীদের ঢল।  ছবি: বাংলানিউজ
হাতীবান্ধা উপজেলার গোতামারী এলাকার শালবনেও প্রতি বছরের মতো বিনোদন প্রেমীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে। তবে বৃক্ষ প্রেমীদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে এ শালবন। সারি সারি বিশাল আক্রতির শাল গাছ, গোলপাতাসহ নানা প্রজাতি গাছের সুবিশাল স্নিগ্ধতা যে কারোরই মন কাড়ে।  

জেলাবাসীর বিনোদনের অভাব পূরণ করছে ভারতের ভেতরে থাকা এক টুকরো বাংলাদেশ খ্যাত দহগ্রাম আঙ্গোরপোতা তিন বিঘা কড়িডোর। যার পাশেই রয়েছে বুড়িমারী জিরোপয়েন্ট। জেলা শহরেই রয়েছে শেখ রাসেল শিশুপার্ক। জেলা পরিষদের অর্থায়নে পার্কটির চার দিকে দেয়াল প্রাচীর দেওয়ায় আর শিশুপার্ক হিসেবে নেই। এখন কপত-কপতিদের আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে এ শিশুপার্কটি।  

গঙ্গাচওড়া শেখ হাসিনা সেতুতে বেড়াতে আসা বেলাল হোসেন, সাকিল ও হৃদয় বাংলানিউজকে বলেন, নদীর কুল কুল ধ্বনি বেশ উপভোগ্য। এছাড়াও একমাত্র নির্মল বিনোদন চাইলে তিস্তা ও ধরলা নদীর তীরে আসতে হয়। জেলা শহরে একমাত্র শেখ রাসেল শিশুপার্ক এখন শিশুদের দখলে নেই। সুস্থ বিনোদনের জন্য আমাদের প্রথম পছন্দ তিস্তা বা ধরলা নদীর তীর।

পরিবার নিয়ে তিস্তা ব্যারেজে বেড়াতে আসা আকমল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, নদীর কুল কুল ধ্বনি ও পানির ছুটে চলা স্রোত আর নদীর বুকে স্পিডবোটে ছুটে বেড়াতেই ছুটির দিনে চলে আসি এখানে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৯
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।