ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

‘কুঁড়ে ঘরে’ চলছে আখাউড়া শুল্ক স্টেশনের কাজ

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩১১ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৭
‘কুঁড়ে ঘরে’ চলছে আখাউড়া শুল্ক স্টেশনের কাজ ‘কুঁড়ে ঘরে’ চলছে আখাউড়া শুল্ক স্টেশনের কাজ

আগরতলা (ত্রিপুরা) থেকে: ছাদ থেকে খসে পড়ছে সিমেন্ট। স্যাঁত স্যাঁতে দেয়াল। বৃষ্টির পানি পড়ছে চুঁইয়ে চুঁইয়ে। কোথাও দেয়ালের আস্তরে বিস্তর ফাটা। ছাদের অবস্থা দেখে মনে হয়, এই বুঝি ভেঙে পড়লো মাথায়। এমন অবস্থা আখাউড়া শুল্ক স্টেশনের।

বাইরে থেকে দেখলে মনে হয়, কোনো ‘পরিত্যক্ত ভবন’। ভবনের বাইরের অবস্থা জানান দেয় ভেতরের দুর্দশা।

সৌন্দর্য বর্ধন বলতে কয়েকটি পাতা সুন্দরী গাছ, দিক নির্দেশক লেখাগুলো যেনো সেই জন্মলগ্নের।  

ঠিক উল্টো চিত্র ভারতের আগরতলা কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনে। সেখানে অত্যাধুনিক অবকাঠামো, প্রযুক্তির মিশেলে চলছে কার্যক্রম। বর্ডার স্পেশাল ফোর্স (বিএসএফ) ছাড়াও শুল্ক স্টেশনে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা সুশৃঙ্খলভাবে পোশাক পরিহিত অবস্থায় চালাচ্ছেন নিজেদের কার্যক্রম।  

তুলনামূলক বিচারে দেখা যায়, বাংলাদেশের দিকটা অবকাঠামো দিক দিয়ে যেমন পিছিয়ে, তেমনি ইমিগ্রেশন ও শুল্ক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কার্যক্রমের ধরনেও। কাজের ক্ষেত্রে সার্বিক সাপোর্ট থাকলেও নেই শৃঙ্খলা। সরেজমিন এমন চিত্রই দেখা গেছে।  

স্যাঁত স্যাঁতে দেয়াল

একটি দেশের শুল্ক স্টেশনের অবকাঠামোগত দৈন্যদশা, কর্মকর্তাদের শৃঙ্খলা না থাকায় দেশের মান ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন এই শুল্ক স্টেশন দিয়ে যাতায়াতকারী পর্যটকরা।  

এ সীমান্ত দিয়ে ভারতে যাতায়াতকারী বাংলাদেশীরাও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।  

কয়েকজন বাংলাদেশি হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, আমাদের দেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশের দিকে যাচ্ছে। উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে রোল মডেল হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। কিন্তু একটি দেশের প্রবেশদ্বার, হোক বিমানবন্দর, শুল্কবন্দর কিংবা শুল্ক স্টেশন। তা দেশের মুখচ্ছবি।  

ছাদ থেকে খসে পড়ছে সিমেন্ট

ওপারে ভারতের শুল্ক স্টেশনের সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা করতে গিয়ে একাধিক পর্যটক বলেন, যেনো ‘কুঁড়ে ঘরে’ শুল্ক স্টেশনের কাজ চালানো হচ্ছে। ভারতে বেড়াতে আসা আগন্তকরা সীমান্ত দিয়ে সুবিধা থাকায় বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। কিন্তু দেশের শুল্ক স্টেশনের অবস্থা দেখেই অনেকের চোখ কপালে ওঠে।  

শামীম আহমদ নামের এক পর্যটক অনেকটা ক্ষুব্ধ স্বরে বলেন, আমাদের দেশ মধ্যম আয়ের দিকে যাচ্ছে। অথচ শুল্ক স্টেশন দেখেই অনুমান করা যায়, আমরা কতখানি গরিব। অবকাঠামোগত দুর্বল অবস্থাই নয়, কয়েকটি কম্পিউটার ছাড়া ব্যাগেজ তল্লাশির কোনো মেশিন নেই। কিন্তু ওপারে (ভারতে) বিমানবন্দরের মতো স্ক্যানার মেশিনে ব্যাগেজ তল্লাশি করা হয়।  

শুল্ক বন্দরের পাশের এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিভিন্ন সময় বেসরকারিভাবে অনেক প্রতিষ্ঠান অবকাঠামো উন্নয়নে এগিয়ে আসতে চেয়েছে, কিন্তু সরকারি আমলাদের অনাগ্রহ ও অসহযোগিতার কারণেই তা হয়ে ওঠেনি।  

এ ব্যাপারে আখাউড়া স্থল বন্দরেরর শুল্ক কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, শুল্ক স্টেশন ভবন ও ইমিগ্রেশন ভবন নির্মাণে কাজ প্রক্রিয়াধীন। এ বিষয়ে কুমিল্লা কার্যালয়ের কমিশনারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯১২ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৭
এনইউ/এসএনএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।