রিয়াদ: সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ দাম্মামের সাদ কোম্পানি দিউলিয়া হয়ে যাওয়ায় দীর্ঘদিন থেকে বেকার ১৬৬জন বাংলাদেশি শ্রমিকের মধ্যে আগামী সপ্তাহে দেশে ফিরছেন ৫৪জন।
দাম্মামে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের আইন সহায়তাকারী ফায়সাল আহমেদ বাংলানিউজকে বিষয়টি জানিয়েছেন।
তিনি জানান, সাদ কোম্পানিতে ১৬৬ বাংলাদেশি শ্রমিক কর্মরত ছিলেন। এর মধ্যে ১০৪ জন্য অন্য কোম্পানিতে স্থানান্তরিত হয়েছেন। বাকি ৬২জন বাংলাদেশির মধ্যে আটজন গত সপ্তাহে ঢাকায় ফিরে গেছেন।
‘আগামী ১১ নভেম্বর ১৮জনের টিকিট কনফার্ম ও বাকি ৩৬জনকে দ্রুত দেশে পাঠানো যাবে,’ যোগ করেন ফায়সাল।
তিনি জানান, কোম্পানি দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার কারণে প্রতিষ্ঠানের কাছে বেতন-ভাতা ও সার্ভিস বেনিফিট কিছু সঙ্গে নিতে পারছেন না। কোম্পানির কাছ থেকে তাদের যাবতীয় পাওনা আদায়ের জন্য দূতাবাসের সহায়তায় সৌদি শ্রম আদালতে মামলা করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকরা।
সৌদি সরকারের খরচে দুইজন আইনজীবী শ্রমিকদের পক্ষে মামলা পরিচালনা করবেন। মামলার রায়ে পাওনা উঠে এলে দূতাবাসের মাধ্যমে প্রবাসীদের কাছে তা পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানান ফায়সাল আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘যেহেতু কোম্পানিটি দেউলিয়া হয়ে গেছে তাই শ্রমিকদের ফাইনাল এক্সিট ও প্লেন টিকেট সৌদি সরকার বহন করছে। শুধু তাই নয় দেশে ফেরত যাওয়া বাংলাদেশিদেরে ঢাকায় পৌঁছার পর সেখান থেকে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে দিচ্ছে ওয়েজ অনার্স বোর্ড। ’
দূতাবাসের একটি সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকার পর খালি হাতে দেশে ফেরা বাংলাদেশিদের পুনর্বাসনের বিষয়টি বিবেচনার জন্য দূতাবাসের কাউন্সিলর (শ্রম) সারওয়ার আলম প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে একটি সুপারিশ পাঠিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ক্রমাগত পড়তে থাকায় সৌদিতে বহু কোম্পানির কাজ বন্ধ হতে শুরু করেছে গতবছর থেকেই। অনেক প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের হঠাৎ করেই ছাঁটাই করা হয়েছে।
আবার অনেক প্রতিষ্ঠান মাসের পর মাস বেতন দিতে না পারায় নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করছে। শ্রমিকদের জন্য নির্মিত ক্যাম্পগুলোতে দিন কাটছে প্রায় অভুক্ত অবস্থায়।
সৌদি কর্তৃপক্ষ বলছে, এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে আসা শ্রমিক, যারা সে দেশে বেকার হয়ে পড়েছেন। তাই তারা যাতে অন্য চাকরিতে যোগ দিতে পারে বা দেশ ত্যাগ করতে পারে সেজন্যে বিধি নিষেধও শিথিল করা হবে।
এদিকে কাজ না থাকা ও স্পন্সরের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই অবৈধ হয়ে যাচ্ছেন অনেক শ্রমিক। আর সেখানে প্রতিদিনই বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ পুলিশের অভিযান চলে। তখন পুলিশের হাতে আটক হন অবৈধভাবে বসবাস করা বিপুল সংখ্যক প্রবাসী।
এর মধ্যে ভারতীয়,পাকিস্তানি ও বাংলাদেশিদের সংখ্যাই বেশি। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী আছেন, যাদের কাছে প্লেন টিকিট কেনারও টাকা নেই। যারা স্বেচ্ছায় পুলিশের কাছে ধরা দিচ্ছেন।
আর বড় ধরনের কোনো মামলা বা অভিযোগ না থাকলে দূতাবাসের অনুমোদন সাপেক্ষে আটক প্রবাসীদের ১/২ সপ্তাহের মধ্যে সৌদি সরকারের নিজস্ব খরচে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১০২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৬
এমএ/