ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সালতামামি

অ্যাভিয়েশন খাতের সঙ্কটের বছর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২০
অ্যাভিয়েশন খাতের সঙ্কটের বছর

ঢাকা: বৈশ্বিক মহামারি করোনায় ক্ষত-বিক্ষত অ্যাভিয়েশন শিল্প। গেল বছরের শুরুর দিকেই সারা বিশ্বে প্লেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে সারা পৃথিবী। নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে পৃথিবীর ব্যস্ততম শহরগুলো। প্লেন চলাচল বন্ধ হওয়ায় থেমে যায় পৃথিবীজুড়ে ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটকদের পদচারণা। আঘাত আসে উড়োজাহাজ উৎপাদন শিল্পেও। ব্যাপক লোকসানের মধ্যে পড়ে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো। এ ক্ষত কাটিয়ে উঠতে এখনও হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশের এয়ারলাইন্সগুলো। কয়েক শতাব্দীর মধ্যে এ ধরনের ঘটনা নজিরবিহীন। ফলে স্মরণীয় হয়ে থাকবে ২০২০ সাল।  

তথ্য মতে, করোনার থাবায় ২০২০ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশও পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। করোনার সংক্রমণ রোধে ওইদিন বাংলাদেশও প্লেন চলাচল বন্ধ করে দেয়। চীনের গুয়াংজু ছাড়া পৃথিবীর সব দেশের সঙ্গে প্লেন চলাচল বন্ধ ছিল। ফলে কার্যত বাংলাদেশও পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।  

করোনার কারণে দুই মাস পাঁচদিন বাংলাদেশে পুরোপুরি প্লেন চলাচল বন্ধ থাকে। ২৬ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত বাংলাদেশে যাত্রীবাহী প্লেন চলাচল বন্ধ থাকে। দুই মাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর গেল বছরের ১ জুন থেকে বাংলাদেশের আকাশ উন্মুক্ত করে দেয় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘদিন পর ১ জুন থেকে অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চলাচল শুরু হলেও যাত্রীর অভাবে অনেক ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যায়।  

পরবর্তীতে ১৬ জুন থেকে আন্তর্জাতিক রুটেও ফ্লাইট চলাচলের অনুমতি দেয় বেবিচক। ৭৫ শতাংশ যাত্রী নিয়ে শর্ত সাপেক্ষে ফ্লাইট চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। প্রথম কয়েক মাস যাত্রী ছিল হাতে গোনা।  

তথ্য বলছে, করোনায় বাংলাদেশের অ্যাভিয়েশন শিল্পে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। করোনার ধাক্কা সামলিয়ে উঠতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ও নভোএয়ার ফ্লাইট সংখ্যা বাড়িয়েছে। তবে করোনার ধাক্কা সামলিয়ে উঠতে পারেনি আরেক বেসরকারি উড়োজাহাজ সংস্থা রিজেন্ট এয়ারওয়েজ। গত মার্চে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হলে রিজেন্ট এয়ারওয়েজ তিন মাসের জন্য ফ্লাইট পরিচালনা করার ঘোষণা দেয়। কিন্তু তিন মাস পেরিয়ে প্রায় নয় মাস পার হতে চললেও পুনরায় ফ্লাইট অপারেশনে আসতে পারেনি এয়ারলাইন্সটি। এয়ারলাইন্সটি আদৌ কার্যক্রম শুরু করতে পারবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।  

সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনাকালীন সব এয়ারলাইন্সই বেতন-ভাতা কমিয়ে দেয়। পদ ভেদে ১০ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ বেতন কমানো হয় বিমান, ইউএস-বাংলা ও নভোএয়ারে। তবে সময়ের ব্যবধানে এয়ারলাইন্সের আয় বাড়ায় বেতন ভাতা আগের মতোই পাচ্ছেন কর্মকর্তারা।  

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উপ-মহাব্যবস্থাপক তাহেরা খন্দকার বলেন, করোনার ধাক্কা সামলিয়ে স্বাভাবিক হচ্ছে অ্যাভিয়েশন খাত। বিমানও ধীরে ধীরে বিভিন্ন রুটে পুনরায় ফ্লাইট শুরু করেছে। সব মিলিয়ে করোনায় বিমান যে ধাক্কা খেয়েছে, তা সামলিয়ে উঠতে বেশ সময় লাগবে।  

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক মো. কামরুল ইসলাম বলেন, করোনায় সারা পৃথিবীর মতো বাংলাদেশের অ্যাভিয়েশন খাতে ধাক্কা লেগেছে। এটা কাটিয়ে উঠতে শুরু করলেও পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে বেশ সময় লাগবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২০
টিএম/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।