ঢাকা: সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আরও তথ্য নির্ভর করা হলো দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইট। বিনিয়োগকারীদের সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সুবিধা করে দিতে তালিকাভুক্ত কোম্পানির প্রায় পুরো তথ্যভাণ্ডার নিয়ে ওয়েবসাইট সাজিয়েছে ডিএসই।
আগে বিনিয়োগকারীদের কাছে বিষয়টি অনেকটা গোপন ছিল। এখন থেকে ডিএসইর ওয়েবসাইটেই সব তথ্য পাওয়া যাবে। এতে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার পাশাপাশি এক নজরে কোম্পানির অতীত ও বর্তমান অবস্থা অর্থাৎ কোম্পানির ভালো-মন্দ সহজে জানা যাবে বলে জানিয়েছে ডিএসই কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (০৭ এপ্রিল) দুপুর ১টায় আনুষ্ঠানিকভাবে ‘আপডেট ভার্সন অব লিস্টেড সিকিউরিটিজ ইনফরমেশন অন ডিএসই’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এর উদ্বোধন করেন ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) স্বপন কুমার বালা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ডিএসইর সিআরও জিয়াউল হাসান খান, সিএফও আব্দুল মতিন পাটওয়ারি, ডিএসই কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, কামরুন নাহার, আফজাল আহমেদ প্রমুখ।
জানা গেছে, http://www.dsebd.org এ ওয়েবসাইটি’র কোম্পানি নেমের পেজটিতে টেবল মার্কেট ইনফরমেশনে দুই ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে কোম্পানিটি তালিকাভুক্ত হওয়ার সময় এবং সর্বশেষ সময়ের শেয়ারের দাম। আরেকটি হচ্ছে কোম্পানিটির প্রতিদিন কত টাকার লেনদেন হয় সে তথ্য।
বেসিক ইনফরমেশনের টেবিলে ‘ডিবেট ট্রেডিং ডেট’ সংযোজন করা হয়েছে। এছাড়াও ‘নেচারের’ জায়গায় ‘টাইপ অব ইনস্ট্রুমেন্ট’ ও বিজনেস সেগমেন্টের জায়গায় ‘সেক্টরে’ পরিবর্তন করা হয়েছে।
গ্রাফের টেবিলে নতুন করে টোটাল ভলিউম যোগ করা হয়েছে। এ গ্রাফটিতে আগে ২ বছর পর্যন্ত প্রতিদিনের শেয়ারের দামের চিত্র থাকতো। এখন সেখানে ৩ বছর পর্যন্ত কতো দামে শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা গ্রাফের মধ্য দিয়ে দেখা যাবে।
কোম্পানির এজিএম এ টেবিলে, নতুন করে নগদ লভ্যাংশ নামে অপশন যোগ করা হয়েছে। কোম্পানির অন্ন্যান্য সহযোগী প্রতিষ্ঠানের আয়ের পরিমাণও থাকছে। এছাড়াও রির্জাভ সারপ্লাসকে মডিফাই করা হয়েছে।
কোম্পানির অডিট রির্পোটের টেবিলে, আগের সব তথ্যের সঙ্গে নতুন করে প্রথম ও দ্বিতীয় প্রান্তিকের পাশাপাশি অর্ধেক অর্থবছরের রির্পোটের তথ্য আলাদা রাখা হয়েছে। একইভাবে ৯ মাসের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
এরপরের টেবিলে শেয়ারে বিনিয়োগ করলে ঝুঁকি বাড়বে কি-না তা বোঝার জন্য সর্বশেষ ৬ কার্যদিবসের আর্নিং পার শেয়ার (পিই রেশিও) রাখা হয়েছে। এছাড়াও কোম্পানির শেয়ার হোল্ডিংয়ে এজিএমের চিত্রের সঙ্গে প্রতি দুই মাস পরপর উদ্যোক্তা-পরিচালকসহ শেয়ারহোল্ডিংয়ের বিষয়টি আপলোড করা হয়েছে। সর্বশেষ টেবিলটিতে এক নজরে কোম্পানির বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে ডিএসইর এমডি বলেন, কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে কারা নিয়ে আসছে তাদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে বিনিয়োগ করলে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কোম্পানির নাম নয়, কাদের নেতৃত্বে সেটি বাজারে আসছে তা মূল্যায়ন করতে হবে। বিনিয়োগকারীদের সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সুবিধা করে দিতে সঠিক তথ্য দেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত সঠিক হলে বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবেন। কোম্পানির তথ্যে গড়মিল হলে অ্যাকাউন্টেটদের বিশ্বসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠবে।
নতুন করে সাজানো ওয়েবসাইটে তথ্য দিতে পারেনি ২৯টি কোম্পানি। কারণ হিসেবে ডিএসইর এমডি বলেছেন, এসব কোম্পানির প্রথম ও দ্বিতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদনে গড়মিল দেখা গেছে। এজন্য কোম্পানির অডিট ফার্ম দায় এড়াতে পারেন না। তাদেরকে বলা হয়েছে, দ্রুত তা ঠিক করে দেওয়ার জন্য।
জানানো হয়েছে, ওয়েবসাইটটির বাংলা ভার্সনও করা হয়েছে। বর্তমানে তালিকাভুক্ত ৫৬০টি সিকিউরিটিজের মধ্যে ২৯০টি কোম্পানি রয়েছে। আপাতত কোম্পানি ও সিকিউরিটিজের সব তথ্য ওয়েবসাইটে ডিএসই আপলোড করবে। কিন্তু শিগগিরই এ দায়িত্ব সব তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও সিকিউরিটিজকে দেওয়া হবে। তারা তাদের তথ্য নির্দিষ্ট সময়ে আপলোড করতে পারবে। কোন তথ্য কোন সময়ে দেওয়া হয়েছে তার সময়ও উল্লেখ থাকবে। এতে বিনিয়োগকারীরা কোম্পানি সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে পারবেন বলে মনে করছে ডিএসই কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০১৬/আপডেট: ১৬৩৪ ঘণ্টা
এমআই/জেডএস