ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

চলতি বছর নতুন বিনিয়োগকারী ৫৬ হাজার

মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৫ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৬
চলতি বছর নতুন বিনিয়োগকারী ৫৬ হাজার

ঢাকা: কোনোভাবেই পুঁজিবাজারে দৈন্যদশা কাটছে না। একদিন উত্থানের পর তিনদিনের পতন কেড়ে নিচ্ছে পুঁজি।

তারপরও চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে প্রায় ৫৬ হাজার নতুন বিনিয়োগকারী দেশের পুঁজিবাজারে প্রবেশ করেছেন। সেন্ট্রাল ডিপজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সেকেন্ডারি মার্কেটে মুনাফা না থাকায় প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) শেয়ারে কিছুটা মুনাফা হবে এমন প্রত্যাশায় বেশ কিছু বিনিয়োগকারী নতুন করে বেনিফিশিয়ারি অ্যাকাউন্ট (বিও) খুলেছেন। তবে একের পর এক উদ্যোগ নেওয়ার পরও বাজার ঘুরে না দাঁড়ানোয় বেশ হতাশ এ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই।

এদিকে, বাজারে নতুন বিনিয়োগকারী আকৃষ্ট করতে এবং পুঁজিবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে বাজারে নতুন নতুন ফান্ডের যোগান বৃদ্ধির আহ্বান জানান সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে গেছে। তাদের আস্থা বাড়াতে প্রয়োজন নতুন নতুন ফান্ড। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে সার্পোট দেওয়ার চেষ্ঠা করছি।

তবে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, দরপতনের বাজারেও এক শ্রেণির সুবিধাভোগী মুনাফা তুলে নিচ্ছেন। এদের ঠেকাতে না পারলে বাজার ভালো হবে না।

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি ২০১৬ থেকে ১৪ মে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সরকারি ছুটি বাদে মোট ৯৫ কার্যদিবস পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে ৬০ কার্যদিবস উভয় বাজারে দরপতন হয়েছে। এতে হাজার হাজার কোটি টাকার মূলধন হারিয়েছে বাজার।

বাজারের এ অবস্থা দেখে সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ না করে আইপিওতে বেশ কিছু বিনিয়োগকারী বিও হিসাব খুলেছেন। সিডিবিএলের তথ্য মতে, চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে ৫৫ হাজার ৮৩৭ বিও হিসাব খোলায় এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ লাখ ২২ হাজার ৮৯টিতে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সংখ্যা ছিল ৩১ লাখ ৬৬ হাজার ২৫২টি।

এদিকে বাজার সম্প্রসারণের পাশাপাশি বিনিয়োগকারী বাড়াত বেশ কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনসহ (বিএসইসি) বাজার সংশ্লিষ্টরা। বাজারের দরপতন ঠেকাতে সর্বশেষ ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত বিনিয়োগের (এক্সপোজার) সমন্বয়ের সময়সীমা পরোক্ষভাবে বাড়ানোর উদ্যোগ সত্ত্বেও গতি ফিরছে না পুঁজিবাজারে।

সর্বশেষ সপ্তাহে ডিএসই সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার (০৮ মে) লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৯৫৫ কোটি ১৫ লাখ ৫২ হাজার ৬৫১ টাকা। আগের সপ্তাহে যার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৭৪৫ কোটি ৯১ লাখ ৮২ হাজার ২২৯ টাকা।

অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ২০৯ কোটি ২৩ লাখ ৭০ হাজার ৪২২ টাকা। যা শতাংশের হিসেবে ১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ। এর মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির শেয়ারের লেনদেন হয়েছে ৯৪ দশমিক ১৯ শতাংশ, ‘বি’ ক্যাটাগরির শেয়ারে শূন্য দশমিক ৯১ শতাংশ , ‘এন’ ক্যাটাগরিতে ৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ এবং ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে ১ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ।

গত সপ্তাহে আগের সপ্তাহের চেয়ে বাজার মূলধনও সামান্য বেড়েছে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার বাজার মূলধন ছিল ৩ লাখ ৫ হাজার ৫৭৮ কোটি ৬৪ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। শেষ কার্যদিবসে (বৃহস্পতিবার) মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৫ হাজার ৬৪৩ কোটি ৯২ লাখ ১৯ হাজার টাকায়। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ৬৫ কোটি ২৭ লাখ  ৪০ হাজার টাকা। যা শতাংশের হিসেবে দশমিক শূন্য ২ শতাংশ।

একই সময়ে ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৮ দশমিক ১৫ পয়েন্ট বা দশমিক ১৯ শতাংশ, শরীয়াহ সূচক ডিএসইএস কমেছে ১ দশমিক শূন্য ৪ পয়েন্ট বা দশমিক ১০ শতাংশ। তবে ডিএস৩০ সূচক বেড়েছে ১ দশমিক ৯৬ পয়েন্ট বা দশমিক ১২ শতাংশ।

ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩২৯টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৪৭টির, কমেছে ১৫১টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৯টির।

দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএএসপিআই সূচক কমেছে ৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ। সিএসই৩০ সূচক কমেছে ২ দশমিক ১৩ শতাংশ এবং সিএসসিএক্স কমেছে ৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ, সিএসই৫০ সূচক কমেছে ২ দশমিক ৯৯ শতাংশ এবং সিএসআই শরীয়াহ সূচক কমেছে ৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।

বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইতে গড়ে মোট লেনদেন হয়েছে ২৭৬টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৪১টির, কমেছে ২২০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫টির। মোট লেনদেন হয়েছে ১১০ কোটি ৫১ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৬
এমএফআই/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।