ঢাকা: মন্দা পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি শ্রেণির বড় বিনিয়োগকারীরা হাত গুটিয়ে নিলেও আবারও সক্রিয় হচ্ছেন প্রবাসী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। কম দামে ভালো কোম্পানির শেয়ার কিনতে পারায় এসব বিনিয়োগকারী দীর্ঘমেয়াদী চিন্তা করে দেশের পুঁজিবাজারে ফিরছেন।
ডিএসই’র সবশেষ তথ্যানুযায়ী, মে মাসে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মোট লেনদেন হয়েছে ৯৫৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা। যা আগের মাসে (এপ্রিল) ছিলো ৭১১ কোটি টাকা। এপ্রিলের তুলনায় মে মাসে ২৪৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা বেশি লেনদেন করেছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। এর মধ্যে শেয়ার বিক্রির চেয়ে কেনায় অবদান বেশি।
এ বিষয়ে ডিএসইর সাবেক সভাপতি ও বর্তমান পরিচালক শাকিল রিজভী বাংলানিউজকে বলেন, বিদেশিরা সবসময় কোম্পানির সার্বিক অবস্থা ও বর্তমান শেয়ারের দাম দেখে, গবেষণার পর শেয়ার কেনেন। এটা পুঁজিবাজারে জন্য ইতিবাচক।
তিনি বলেন, মন্দার বাজারে বিদেশিদের বিনিয়োগ দেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য অনুপ্রেরণা। আশা করছি দেশি বড় ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে সক্রিয় হবেন।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, শেয়ারের দাম ও কোম্পানিগুলোর পিই রেশিও’র অবস্থান দেখলেই বোঝা যায় যে পুঁজিবাজার বিনিয়োগ উপযোগী হয়েছে। এখনই দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের সময়।
তিনি বলেন, এখন বাজারে সূচক অনেকটা নিচে, যা বাজারে বিনিয়োগ ঝুঁকি কমিয়ে এনেছে। এতে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নতুন করে বিনিয়োগে আগ্রহী হয়েছেন।
জানা গেছে, ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এবং নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বিদেশিদের দেশের বাজারে আনতে পুঁজিবাজারে নানা সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে স্টক এক্সচেঞ্জের ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন, সফটওয়্যারের আধুনিকায়ন, বিএসইসিকে শক্তিশালীকরণ এবং আইনগত সংস্কার।
তাছাড়া পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট পাস করা হয়েছে। অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকায় বিএসইসি অনেককে জরিমানা করছে। শেয়ার কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়েছে। এ ধরনের নানা সংস্কারের পরও পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়েনি বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৭ ঘণ্টা, জুন ০৯,২০১৬
এমএফআই/জেডএস