ঢাকা: মে মাসের তুলনায় জুন মাসে লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে ওষুধ ও রসায়ন খাত। এরপর যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান দখল করেছে প্রকৌশল এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত।
জুন মাসে লেনদেনের দিক থেকে এ তিন খাতে ডিএসইর অবদান ছিলো সাড়ে ৫১ শতাংশ। মে মাসে ছিলো ৪৮ শতাংশ। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে তিন খাতের অবদান বেড়েছে ৩ শতাংশ।
ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য অনুযায়ী, পুঁজিবাজারে প্রায় সাড়ে ৩শ’ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড তালিকাভুক্ত রয়েছে। এগুলো ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে মোট ২০ খাতে লেনদেন হয়।
জুন মাসে ডিএসইতে এ প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট ২২৩ কোটি ৬২ লাখ ১ হাজার ২৬৪টি শেয়ার কেনা-বেচা হয়েছে। যা টাকার অংকে লেনদেনের পরিমাণ ৮ হাজার ১৩৮ কোটি ২৯ লাখ ৫১ হাজার ২৯৮ টাকার।
এর মধ্যে শীর্ষে থাকা তিন খাতের ৬৪ কোটি ৮৮ লাখ ৯০ হাজার ৭১৬ শেয়ার কেনা-বেচা বাবদ মোট ৪ হাজার ২০৪ কোটি ৭৪ লাখ ৩৭ হাজার ০৩৪ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা শতাংশের হিসাবে ডিএসইর মোট লেদেনের ৫১ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
এর আগের অর্থাৎ মে মাসে ডিএসইতে মোট ২২৩ কোটি ৬৮ লাখ ৭৫ হাজার ৩৫৪ শেয়ার কেনা-বেচা বাবদ ৮ হাজার ১৪২ কোটি ২১ লাখ ৫০ হাজার ৪৪৮ টাকার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে তিন খাতের ৪৭ কোটি ৩৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৬৫টি শেয়ার থেকে কেনা-বেচা বাবদ লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ৯৭৬ কোটি ২১ লাখ ৭১ হাজার ৯৬৯ টাকা। যা আগের মাসের চেয়ে প্রায় ৪ কোটি টাকা কম।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বিভিন্ন ইস্যুতে লেগে থাকা দরপতনে এসব খাতের শেয়ারের দাম যৌক্তিক দামের চেয়ে কম থাকার পাশাপাশি ওষুদ খাতের কোম্পানিগুলো সর্বশেষ বছরের জন্য তাদের শেয়ারহেল্ডারদের ভাল লভ্যাংশ দিয়েছে। এছাড়াও বিদ্যুৎ ও জ্বালানি কোম্পানিগুলো দেশের পুঁজিবাজারের পাশাপাশি বিদেশের বাজার থেকে টাকা সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে। এ টাকা কোম্পানির ক্যাপাসিটি ও ব্যবসা সম্প্রসারণে ব্যয় করা হবে। এর ফলে কোম্পানিগুলোতে মুনাফা বাড়বে। এ কারণে এসব খাতের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকছেন।
এদিকে, এ তিন খাতের পাশাপাশি মে মাসে পঞ্চম স্থানে থাকা বস্ত্র খাত, জুনে চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে।
ডিএসই’র পাশাপাশি দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ওষুধ ও রসায়ন, প্রকৌশল এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতগুলোর লেনদেনের পরিমাণে একই অবস্থা দেখা গেছে।
অপরদিকে লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা খাতগুলো হলো- বন্ড, পেপার অ্যান্ড প্রিন্টিং, পাট, মিউচ্যুয়াল ফান্ড, ট্যানারি, সিরামিক, আইটি, ট্রাভেলস, টেলিকম ও বিমা খাতের শেয়ার।
ডিএসইর প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুন মাসে লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাত। এ খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের মোট ২৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ। মে মাসে লেনদেনের শীর্ষে ছিলো বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। এ খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা ৩২টি।
মে মাসের মতোই জুন মাসেও দ্বিতীয় স্থান দখলে রেখেছে প্রকৌশল খাত। ডিএসইর মোট লেনদেনে এ খাতের অবদান ১৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এর আগের মাসে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ অবদান ছিলো।
ডিএসই’র মোট ১৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ লেনদেন হওয়ায় প্রথম স্থান থেকে তৃতীয় স্থানে নেমে এসেছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত।
অপরদিকে মে মাসে পঞ্চম স্থানে থাকা বস্ত্র খাত উঠেছে চতুর্থ স্থানে। আর চতুর্থ স্থানে থাকা ব্যাংক খাত আরো এক ধাপ নিচে নেমে অবস্থান করছে পঞ্চম স্থানে।
মহাধসের আগে পুঁজিবাজারের ‘প্রাণ’ হিসেবে বিবেচিত এ খাতে তালিকাভুক্ত ৩০টি কোম্পানিতে জুন মাসে লেনদেন হয়েছে ডিএসইর মোট ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ।
অন্যদিকে বস্ত্র খাতে বাজারে তালিকাভুক্ত ৪৪টি কোম্পানির এ খাতে জুন মাসে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৯ দশমিক ৩৮শতাংশ লেনদেন হয়েছে। বাকি খাতগুলোর অবদান দুই অংকের কোটার নিচে অবস্থান করছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৬
এমএফআই/এসএইচ