বাজেট ঘোষণার দিন অর্থাৎ ০১ জুন থেকে ৮ জুন পর্যন্ত মোট ছয় কার্যদিবস দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে চার কার্যদিবস সূচকের উত্থান আর বাকি দুই কার্যদিবস সূচক সামান্য কমেছে।
সবমিলিয়ে গত ছয় কার্যদিবসে দেশের উভয় বাজারে সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেন, বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দামও বাজার মূলধন।
এর মধ্যে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বিনিয়োগকারীরা হারানো পুঁজি ফিরে পেয়েছেন সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে ডিএসইতে সূচক বেড়েছে ১৭২ পয়েন্ট, লেনদেনেও ফিরেছে গতি।
ডিএসইর সূত্র মতে, অন্যান্য মাসের তুলনায় প্রতি রমজান মাসেই লেনদেন কম হয়। তবে এবার রমজান মাসে প্রথম দিন থেকে সেই চিত্র পাল্টে গেছে। প্রথম রমজানে (২৮ মে) লেনদেন হয় ৩’শ কোটি টাকার কোটায়। সেখান থেকে বাজেট ঘোষণার পর বেড়েলেনদেন দাঁড়িয়েছে ৫১৭ কেটি টাকায়।
পাশাপাশি তিন সূচকে পথচলা ডিএসই ব্রড ইনডেক্স ১৭২ পয়েন্টে বেড়ে ৫ হাজার ৪৭৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়াও ডিএস-৩০ মূল্যসূচক এবং ডিএসইএস শরীয়াহ্ সূচকও বেড়েছে। বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দামও।
এতে ডিএসই’র বাজার মূলধন ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৩০১ কোটি ৮৮ লাখ ১৪ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫৫৫ কোটি ৭২ লাখ ৯৪হাজার টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৭১ হাজার ৮৫৭ কোটি ৬১ লাখ ৮ হাজার টাকায়।
একই চিত্র ছিলো দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারে সম্পর্কে নেতিবাচক কিছু রাখা হয়নি। বরং পরোক্ষভাবে বেশ কিছু ইতিবাচক দিক রাখা হয়েছে।
সেগুলো হলো- পোশাক খাতে ৫ শতাংশ কর কমানো, ব্যাংকের আমানতকারীদের ওপর আবগারি শুল্ক বৃদ্ধি এবং সঞ্চয়পত্রের সুদেরহার কমানো। এই তিন কারণে পুঁজিবাজার ইতিবাচক ধারায় হাঁটছে। ফলে নতুন করে সাড়ে ২৯ লাখ বিনিয়োগকারী বাজারে প্রতি আশা জেগেছে।
বাজারে সার্বিক বিষয়ে ডিএসই’র সাবেক সভাপতি ও বর্তমান পরিচালক শাকিল রিজভী বাংলানিউজকে বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারে সম্পর্কে নেতিবাচক কোনো কিছু নেই। বরং পরোক্ষভাবে বাজারকে গতিশীল করতে বেশ কিছু সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে স্টক এক্সচেঞ্জ ও মার্চেন্ট ব্যাংকস অ্যাসোসিয়েশনসহ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো পুঁজিবাজারকে গতিশীল রাখার পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় যেসব প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছিলো তার কোনোটাই রাখা হয়নি।
তবে পরোক্ষভাবে পোশাক খাতের উপর ৫ শতাংশ কমানো হয়েছে, ব্যাংকে ডিপোজিট হিসেবে অলস পড়ে থাকা হাজার হাজার কোটি টাকা যাতে স্বচল হয়। সেই লক্ষ্যে আবগারি শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। এছাড়াও সঞ্চয়পত্রে সুদের হার কমানো হচ্ছে। পরোক্ষভাবেএগুলো পুঁজিবাজারে জন্য ইতিবাচক।
এদিকে বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, স্বল্প ও মধ্য-মেয়াদী স্থিতিশীলতা এবং আস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা ও কৌশল বাজেট কাঠামায় রাখার দরকার।
একই সঙ্গে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও গতিশীল করতে স্টকএক্সচেঞ্জের দাবিগুলো পুনর্বিবেচনার দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হচ্ছে- আগামী তিন বছর স্টক এক্সচেঞ্জগুলোকে কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া, করমুক্ত লভ্যাংশ আয় ২৫ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকায় উন্নীত করা এবং কোম্পানির কর্পোরেট করহারের ব্যবধান কমপক্ষে আরো ১০ শতাংশে বৃদ্ধি‘রসহ বিশেষ প্রণোদনা রাখা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৮ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০১৭
এমএফআই/এসএইচ