শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) হোলসিম বাংলাদেশের পর্ষদ সভায় কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে (সিইও) সংশোধিত ক্রয়-বিক্রয় চুক্তি বাস্তবায়নের অনুমোদন দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সূত্র বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন করা ৫০৪ কোটি ৭৮ লাখ ১৯ হাজার ৯৪০ টাকায় হোলসিম বাংলাদেশের সব শেয়ার লাফার্জ সুরমা সিমেন্টের কাছে বিক্রির সংশোধিত চুক্তি কার্যকরের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী ধাপে নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় সব আপডেট শেয়ারহোল্ডারদের জানাবে কোম্পানি।
পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তের পর বিশেষ সাধারণ সভায় (ইজিএম) ১১ কোটি ৭০ লাখ ডলারে (ডলারের মান ৮০ টাকা ধরে ৯০০ কোটি টাকার বেশি) হোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেডের শতভাগ সম্পদ কিনে তা একীভূত করে দেxয়ার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছিলেন লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট লিমিটেডের শেয়ারহোল্ডাররা।
দুই কোম্পানির বৈশ্বিক হেডকোয়ার্টার একীভূত হয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশে এ অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াটি সামনে রেখে লাফার্জ সুরমা তাদের কোম্পানির নাম পরিবর্তন করে রাখে লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড। তবে স্টক একচেঞ্জে এখনও পুরাতন নামই রয়ে গেছে।
বিধি মোতাবেক, তালিকাবহির্ভুত কোম্পানির শেয়ার বিক্রির এ অর্থ বিদেশে বিক্রেতা কোম্পানির হেডকোয়ার্টারে পাঠাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি চেয়েছিল কোম্পানি। ১৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের এ অধিগ্রহণ বাবদ ৫০৪ কোটি ৭৮ লাখ ১৯ হাজার ৯৪০ টাকা বিদেশে পাঠানোর অনুমোদন দেয়।
অর্থাৎ প্রকারান্তরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক হোলসিম বাংলাদেশের ৮৮ হাজার ২৪৪টি (শতভাগ) শেয়ারের জন্য এ মূল্যই নির্ধারণ করে দেয়।
এরপর স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ জানায়, এ বিষয়ে তাদের অথরাইজড ডিলার স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংককে দেওয়া এক চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংক মোট ৬ কোটি ২৫ লাখ ২৭ হাজার ১৮৮ ডলারে (১৭ সেপ্টেম্বরের বিনিময় হারের ভিত্তিতে) হোলসিম বাংলাদেশের সব শেয়ার অধিগ্রহণের এবং সে অর্থ বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান হোল্ডারফিন বি ভির নামে বিদেশে পাঠানোর অনুমতি দিয়েছে।
তবে ক্রেতা ও বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের ঐকমত্যের চেয়ে প্রায় ৪৬ শতাংশ কম দামে হোল্ডারফিন বি ভি লাফার্জ সুরমার কাছে হোলসিম বাংলাদেশের সব শেয়ার বিক্রি করতে সম্মত হবে কিনা, এ বিষয়টি নিয়েও দ্বিধা ছিল।
তিন মাসের বেশি সময় পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া দামেই ক্রয়-বিক্রয় চুক্তিটি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিল কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, ২০১৬ সালে গ্রুপ পর্যায়ে ফরাসি সিমেন্ট জায়ান্ট লাফার্জ ও সুইস হোলসিম একীভূত হয়। এরপর ধীরে ধীরে বিশ্বব্যাপী দুই গ্রুপের ব্যবসা এক হয়ে আসে।
বাংলাদেশের স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত লাফার্জ সুরমা সিমেন্টের মুখ্য শেয়ারহোল্ডার ছিল লাফার্জ গ্রুপ। অন্যদিকে শেয়ারবাজারের বাইরে থাকা হোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেডের ৭৪ শতাংশ শেয়ার ছিল হোলসিম গ্রুপ তথা হোল্ডারফিন বি ভির হাতে।
২১ শতাংশ সিয়াম সিটি ও সিয়াম সিমেন্ট এবং বাকি ৫ শতাংশ ছিল স্থানীয় ট্রান্সকম গ্রুপের হাতে। একীভূতকরণ প্রক্রিয়া সহজ করতে দুই গ্রুপের হাতে থাকা ২৬ শতাংশ শেয়ার কিনে নেয় হোল্ডারফিন বি ভি।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৭
এমএ/