সাউথ এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে ফেসবুকের সদর দপ্তর সিঙ্গাপুরের ৩৮ সাউথ বিচ রোডে। এশিয়ান জার্নালিজম ফেলোশিপের অংশ হিসেবে শেষ গ্রুপ ট্যুর ছিল ফেসবুকের অফিসে।
কারো সঙ্গে আগে থেকে অ্যাপয়েনমেন্ট ঠিক করা না থাকলে ফেসবুকের অফিসে প্রবেশ করা যায় না। মেইলে বা চিঠিতে অ্যাপয়েনমেন্ট ঠিক করে নিতে হয়। ভিজিটর কার্ড নিয়ে শুক্রবার দুপুরে ২২ তলায় পৌঁছালে সেখানে আবারো সাইন ইন করতে হয়। ফেসবুকের গবেষক আশা ফিলিপস এদিন আমাদের অফিস ঘুরে দেখান এবং বিভিন্ন কৌতূহল ও জিজ্ঞাসার জবাব দিয়েছেন।
ফ্রি খাবার:
মূল অফিসে প্রবেশ করলে প্রথমেই পড়বে খাবারের জায়গা। ফাস্ট ফুড থেকে শুরু করে চকলেট, হরেক ধরনের জুস, ওয়াইনের বোতল, শুকনো ফল, বাদাম, বিভিন্ন ধরনের স্ন্যাকস, সিডার সবই থরে থরে সাজানো। যত পারো ততো খাও। শুধু কর্মীদের জন্যেই নয়, অতিথিদের জন্যেও এই খাবার।
প্রতি তলাতেই রয়েছে এই খাবারের আয়োজন। এছাড়াও বিকেল সাড়ে ৪টার পর থেকে বিয়ারের ট্যাপও খুলে দেয়া হয়। রাত ২ টা পর্যন্ত খোলা থাকে বিয়ারের ট্যাপ। এখানে গোসলের ব্যবস্থাও রয়েছে। অনেকে আর বাসায় ফেরেন না। রাতটা সোফায় কাটিয়ে সকালে আবার কাজে যোগ দেন।
ছাব্বিশ তলায় রয়েছে ক্যান্টিন। সেখানে চায়নিজ এবং ভারতীয় খাবারের আলাদা কর্নার। বোঝা যায় এই দুই দেশের কর্মীসংখ্যা এখানে বেশি। ছোট করে সিঙ্গাপুরের খাবার এবং আর্ন্তজাতিক খাবারের কর্নার রয়েছে
মিটিং রুম:
দেয়ালজুড়ে বিশাল টাচ-স্ক্রিন। সেখানে খেলা করছে বিভিন্ন ইমোজি এবং জিআইফ। দুনিয়ার নানা দেশের বিভিন্ন সেলিব্রেটিদের পোস্ট। স্ক্রিনে টাচ করে জানা যায় বিস্তারিত।
এটা মিটিং রুম হলেও বসার জায়গা মাত্র ৮ জনের। উঁচু টেবিলের জন্যে উঁচু চেয়ার। বাকিরা সবাই দাড়িয়ে থাকে। বিভিন্ন দেশে ফেসবুকের জনপ্রিয়তা ব্যবহারকারীর সংখ্যা দেখা যায়। দুঃখজনক হলেও সত্য সেই মানচিত্রে ভারতের সঙ্গেই বাংলাদেশ, নেপাল এবং শ্রীলংকাকে দেখানো হয়।
এরপরেই রয়েছে বিশাল আয়তনের মিটিং রুম। আশা ফিলিপস বলেন, এখানে বড় ধরনের বৈঠক হয়। এছাড়াও আরো চারটি অফিসিয়াল মিটিংরুম রয়েছে।
অফিসের ডেস্ক খালি!
আগেই বলা হয়েছিল সব রুমে আমাদের নেয়া হবে না। তবে সাধারণ রুমগুলো ঘুরিয়ে দেখানো হবে যেখানে কর্মীরা কাজ করেন।
এক একটি ফ্লোর যেন এক একটি খেলার মাঠ। দীর্ঘ রুমের টেবিলগুলো কর্মীরা নিজেদের মতো গুছিয়ে নিয়েছেন। কার রুচি কেমন, তা টেবিলগুলোই বলে দেয়। অনেক টেবিল দেখা গেলো পুতুল এবং স্টিকারে সাজানো।
পঁচিশতম ফ্লোরে একটি টেবিলের পাশে দুটি রিকশা। পেছনে লেখা ‘বাংলাদেশ’। তবে টেবিলে কেউ নেই। আশপাশের টেবিলগুলোও খালি। কাউকে জিগ্যেস করারও উপায় নেই। ধরে নিলাম হয়তো বাংলাদেশে কেউ গিয়েছিল বা বাংলাদেশের কোনো কর্মীর ডেস্ক এটি।
অনেককেই দেখা গেলো সোফায় বসে, ফ্লোরে বসে ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করছেন। আশা বলেন, অনেকেই আবার বাসায় বসেও কাজ করেন। কাজের সময়ের একটি এন্ট্রি টাইম রয়েছে। তবে কোথায় বসে কাজ করছেন, এটা সকলের জন্যে প্রযোজ্য নয়।
খেলার জায়গা:
এই ফ্লোরেই খেলার জায়গা। ক্লান্তি দূর করতে চাইলে এখানে এসে ফ্রি কফি আর হরেক ধরনের স্ন্যাকস খেতে খেতে রেসের গেম খেলা যাবে। এছাড়াও খেলা যাবে বোর্ড ফুটবল। আবার অনেককেই দেখা গেলো এখানে বসেও ব্যস্ত ল্যাপটপে।
২২ তলায় পুরো একটি দেয়াল জুড়ে লেখার জায়গা। যে যা লিখতে চায়।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৭
এমএন/জেএম