পোর্ট এলিজাবেথ: সান্ত্বনার জয় পেলো জার্মানি। স্থান নির্ধারণী ম্যাচে উরুগুয়েকে ৩-২ গোলে হারিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের তৃতীয় স্থান পেলো সাবেক চ্যাম্পিয়নরা।
জার্মানির পক্ষে গোল করেন থমাস মুলার, মার্সেল জনসন ও সামি খেদিরা। উরুগুয়ের গোল দুটি করেন এডিসন ক্যাভানি ও দিয়েগো ফরলান।
দিয়েগো ফরলান বনাম জার্মানি ম্যাচ বলা অন্যায় হবে না। উরুগুয়ের এ প্লেমেকার একাই দাবড়ে নিয়ে গেছেন জার্মানির খেলোয়াড়দের। বিশেষ করে রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন একজন ফুটবলারের ব্যক্তিগত দক্ষতা কতটা ভয়ংকর হতে পারে।
সাত মিনিটে দুবার জার্মানির গোলপোস্টে শট নিয়েছেন এই লাতিন। মোট কথা বিরতি পর্যন্ত সুয়ারেস, ফরলান আর ক্যাভানি মিলে প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগ তছনছ করেন। অন্তত সাতবার গোলেবার উদ্দেশ্য করে শট নিয়েছেন লাতিনরা। এ সময়ে একটি গোলও এসেছে।
ঠিক একই সময়ের মধ্যে তিনবার সুযোগ পেয়ে একটি শট কাজে লাগিয়েছে জার্মানি। খেলার ১৭ মিনিটে থমাস মুলারের গোলে ১-০ তে এগিয়ে যায় তিনবারে চ্যাম্পিয়নরা।
উরুগুয়ের প্রথম গোল আসে ২৭ মিনিটে। লুইস সোয়ারেসের সহযোগিতা নিয়ে ডান পায়ের শটে নিশানা ভেদ করেন এডিসন ক্যাভানি। বিরতি পর্যন্ত ১-১ গোলের সমতা থাকে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে একচেটিয়া খেলে দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ানরা। ঝিমিয়ে পড়া জার্মানদের আরো দুর্বল করে তোলে একের পর এক হানা দিয়ে। কিন` গোলবারের অতন্দ্র প্রহরী ম্যানুয়েল নয়ার ক্যাভানি ও লুইস সুয়ারেসের দুটি ঝুকিপূর্ণ শট না থামালে নিশ্চিত বিপদে পড়তে হতো জোয়াকিম লোর দলকে।
এ অর্ধে কিন` আগে গোল পায় উরুগুয়ে। ৫০ মিনিটে ভলি শটে দারুণ এক গোল করেন দিয়েগো ফরলান। পুরো টুর্নামেন্টে ফর্মে থাকা এ লাতিন ফুটবলার জর্মানির জন্য রীতিমতো মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে উঠেছিলেন।
কিন` খুব বেশি সময় গোল ধরে রাখতে পারেনি প্রথম বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নরা। পাঁচ মিনিট পরই আবার সমতায় ফেরে জার্মানি। গোল আসে মার্সেল য়ানসেনের পা থেকে। জেরেমে বোটিঙ্গার ক্রস থেকে বল গন্তব্যে পাঠান এ মিডফিল্ডার।
পাল্লা দিয়ে চলে আক্রমণ। এগিয়ে যাওয়ার লড়াইয়ে সুযোগ কাজে লাগায় জার্মানি। ৮১ মিনিটে সামি খেদিরা নিশানা ভেদ করেন।
শেষ মিনিটে এসে বক্সের ওপর থেকে ফ্রি কিক পেয়েছিলো উরুগুয়ে। দারুণ শটও হয়েছিলো। কিন` ক্রসবারে লেগে বল চলে যায় নিরাপদ অঞ্চলে। সেই সঙ্গে ম্যাচ সমাপ্তির বাঁশি বাজিয়ে দেন রেফারি।
৪০ বছর আগে (১৯৭০ সাল) বিশ্বকাপে এমনই এক ম্যাচে উরুগুয়েকে ১-০ গোলে হারিয়ে তৃতীয় হয়েছিলো পশ্চিম জার্মানি।
এবারও অক্টোপাস পলের গণনা সত্যি হলো। আগের দিন তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে জার্মানির পতাকা খচিত পাত্র থেকে খাবার খেয়েছিলো আক্টোপাসটি।
স্থান নির্ধারণী হলেও এ ম্যাচটি যার কাছে আকর্ষণীয় ছিলো সেই মিরোস্লাভ ক্লোসা খেলতে পারেননি পিঠে চোট থাকায়। অতএব এযাত্রায় বিশ্বকাপে ব্রাজিলের রোনালদোর ১৫ গোলের রেকর্ডটি অক্ষত থেকে গেলো।
তবে জার্মানির থমাস মুলার আর উরুগুয়ের দিয়েগো ফরলান টুর্নামেন্টে নিজেদের পঞ্চম গোল তুলে নিয়ে ডাচ খেলোয়াড় ওয়েসলি স্নাইডার এবং স্পেনের ডেভিড ভিয়ার সঙ্গে সোনার বুটের দাবিদার হয়ে রইলেন। রোববার ফাইনালে স্নাইডার এবং ভিয়া গোল না পেলে সর্বোচ্চ গোলদাতা হবেন চারজন।
বাংলাদেশ সময়: ০২৩০ ঘন্টা, জুলাই ১১, ২০১০