জোহানেসবার্গ: বিশ্বকাপের বি গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে তুলনামুলক সহজ প্রতিপক্ষ গ্রীসের মুখোমুখি হচ্ছে এশিয়ান টাইগারখ্যাত দক্ষিণ কোরিয়া। যদিও ফিফা র্যাংঙ্কিয়ে তাদের চেয়ে এগিয়ে আছে গ্রীস।
‘বি’ গ্রপের অন্য দলগুলো হচ্ছে আর্জেন্টিনা ও নাইজেরিয়া। দু’টি দেশই তাদের চেয়ে শক্তিশালী। তাদেরকে হারানো সহজ কাজ নয়। তাই গ্রুপ পর্বের গন্ডি পেরোতেও এই ম্যাচে জয় চাই গ্রীস ও দক্ষিণ কোরিয়া উভয় দলেরই।
টানা সপ্তমবার সহ মোট আটবার বিশ্বকাপে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার। এশিয়ার দেশগুলো মধ্যে সবচে বেশী। তবে ২০০২বিশ্বকাপে নিজেদের মাঠে সবচে বড় সাফল্য আসে তাদের। সেবার সেমিফাইনালে খেলে এশিয়ার মুখ উজ্জ্বল করে তারা। বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত মোট ২৪টি ম্যাচ খেলেছে তারা। জয় ৪টি হার ১৩ ও ড্র করেছে ৭ ম্যাচে।
অন্যদিকে বিশ্বকাপে ইতিপূর্বে একবারই খেলার সুযোগ হয়েছে গ্রীসের। তিন ম্যাচের সবকটিতে হেরেছে তারা। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ার চেয়ে একদিকে অনেক এগিয়ে তারা। র্যাঙ্কিংয়ে ১২তম স্থান নিয়ে তারা দক্ষিণ আফ্রিকায় এসেছে। অন্যদিকে এশিয়ান টাইগারদের র্যাঙ্কিং ৪৭। সেরা সাফল্য ২০০৪ সালের ইউরো সেরার মর্যাদা লাভ।
বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের খেলায় ৭ জয় তিন ড্র ও দুই খেলায় হেরেছে গ্রীস। অন্যদিকে বাছাইপর্বের খেলায় একটিও হার নেই কোরিয়ার। ৭ জয় ও সমান ড্রতে অস্টমবারের মতো বিশ্বকাপ টিকিট পায় কোরিয়া।
দারুণ ভাবে বাছাইপর্ব পেরোনোয় আত্মবিশ্বাসও অনেকটা তুঙ্গে হু জোং মো’র দলের। দলে রয়েছে বে’কজন বিশ্বমানের তারকা খেলোয়াড়। কোরিয়ানদের সবচে বড় সক্ষমতা ছোট ছোট ঝটিকা পাসে খেলে পুরো ৯০ মিনিটেই প্রতিপক্ষকে ব্যতিব্যস্ত রাখা। খেলার ধরন প্রথাগত ৪-৪-২ ফর্মেশন। তাদের সবচে দুর্বল দিক রক্ষণভাগে। বিপক্ষের প্রতিআক্রমণ প্রায়ই ভালভাবে সামলে উঠতে পারে না তারা।
কোরিয়ান দলের অনেকেরই ইউরোপে বিভিন্ন কাবে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে খেলা পার্ক জি সুং তাদের সবচে উজ্জল তারকা। বাছাই পর্বে দলের পক্ষে সবচে বেশী ৫ টি গোলও এসেছে তার পা থেকেই। এছাড়া দলে আছেন গ্ল্যামার বয়খ্যাত পার্ক চু ইয়ং। গোলপোস্টের নিচে আস্থার প্রতীক হিসেবে থাকবেন লি ওন জাই। তবে স্ট্রাইকার পার্ক চু ইয়ং ও লি ডং গাকের ইনজুরি ভোগাতে পারে জোং মো’র দলকে।
তবে কোচ অটো রেহাগেলের নেতৃত্বে বর্তমানে দারুণ ফর্মে আছে তারা। গ্রীসের সবচে উজ্জ্বল দিক হচ্ছে তাদের মজবুত প্রতিরক্ষাব্যুহ। সাধারণত ৪-৩-২-১ এর রক্ষণাত্মক ফর্মেশনেই খেলতে পছন্দ করে তারা। কিন্তু দলের দুর্বলতা মধ্যমাঠ সামলানোর বড় তারকা নেই।
তবু যাদের দিকে নজর থাকবে তাদেও মধ্যে সবচে বড় তারকা থিওফানিস জেকাস। বাছাই পর্বে দলের মোট ২১ গোলের বিপরীতে একাই করেছেন ১০ গোল। এছাড়া মধ্যমাঠে রয়েছেন লড়াকু জর্জিওস কারাগুনিস। যিনি বলের দখল নিতে সবসময়ই মরিয়া থাকেন। আরও রয়েছেন কস্তাস কাতসুরানিসের মতো ফুটবলার, পুরো মাঠ জুড়ে খেলতে জুড়ি মেলা ভার।
গ্রীস সম্ভাব্য একাদশ: গোলরক্ষক- আলেক্সান্দ্রোস তরভাস
রক্ষণভাগ- গিওর্গস সেইতারিদিস, ভ্যানজেলিস মোরাস, সোকরাতিস পাপাসতাথোপুলোস, সোতিরিওস কির্গিয়াকোস
মধ্যভাগ- কোস্তাস কাতসুরানিস, ভাসিলিস তরোসিডিস, জর্জিওস কারাগুনিস, দিমিত্রিওস সালপিনজিডিস, জর্জেওস সামারাস
আক্রমণভাগ- থিওফানিস গেকাস
দ. কোরিয়া সম্ভাব্য একাদশ: লি ওন জাই (গোলরক্ষক)
রক্ষণভাগ- ও বেয়ম সেওক, চো ইয়ং হাং, কিম ডং জিন, লিং জাং সো
মধ্যমাঠ- পার্ক জি সুং, কিম জাং ওঅ, কি সুং ইয়ং, লি চুং ইয়ং
আক্রমণভাগ- পার্ক চু ইং ও লি সেউং রুল।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১৩৪৬ ঘ. ১১ জুন ২০১০
এএইচএস/