ঢাকা: আর কয়েকদিন পরেই ফুরিয়ে যাবে ২০১৪ সাল। মহাকালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে আরও একটি বছর।
বছরটি টাইগার ক্রিকেটাদের জন্য মোটেও সুখকর ছিল না। পুরো বছরেই পরাজয়ের গোলক ধাঁধায় ঘুরপাক খেয়েছে মুশফিক, সাকিব, মাশরাফিরা। তবে বছরের শেষ দিকে জিম্বাবুয়েকে পাঁচ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে বাংলাওয়াশ করে সমর্থকদের মনে কিছুটা স্বস্তি এনে দিয়েছে মাশরাফি বাহিনী।
চলুন পাঠক এক নজরে দেখে নিই ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের পারর্ফম্যান্স। সাকিবরা এ বছর মোট ১৭টি ওয়ানডে খেলেছে। এর মধ্যে হেরেছে ১২টি ম্যাচে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোম সিরিজ
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে বছরটা শুরু করেছিল বাংলাদেশ। বছরের প্রথম ম্যাচটিই ছিল বৃষ্টি বিঘ্নিত। ১৭ ফেব্রুয়ারি মিরপুরে বৃষ্টির কারণে ম্যাচের দৈর্ঘ্য দশ ওভার কমিয়ে আনা হয়। টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিল বাংলাদেশ।
বছরের প্রথম ওয়ানডের শুরুটা ছিল স্বপ্নের মতোই। ৬৭ রানের মধ্যেই আট উইকেট তুলে নিয়ে বছরের প্রথম ওয়ানডেতেই বাজিমাতের স্বপ্ন দেখাচ্ছিল টাইগাররা। কিন্তু থিসেরা পেরেইরার অপরাজিত ৮০ রানের কল্যাণে শেষ পর্যন্ত লঙ্কানদের স্কোর দাঁড়িয়েছিল ১৮০ রান। শেষ পর্যন্ত মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ম্যাচটি ১৪ রানে হেরে যায় বাংলাদেশ।
সেই যে হার শুরু হলো তার জের টানতে হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর পর্যন্ত। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ওই সিরিজেই হোয়াইট ওয়াশ হয় বাংলাদেশ।
এশিয়া কাপে আফগান লজ্জা
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোম সিরিজে হারের পর পর দেশের মাটিতে বসে এশিয়া কাপের আসর। ২০১২ সালের সুখস্মৃতি নিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করে স্বাগতিকরা। কিন্তু এবারের আসরে সম্পূর্ণ ব্যর্থ ছিল মুশফিকের দল। সবচেয়ে অপ্রত্যাশিত ছিল ১ মার্চ ফতুল্লায় আফগানদের বিপক্ষে ৩২ রানের পরাজয়টি।
৩২৬ করেও হলো না পাকিস্তান বধ
৪ মার্চ মিরপুরে পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যাটসম্যানদের অসাধারণ পারর্ফম্যান্সে আগে ব্যাট করে ৩২৬ রানের বিশাল স্কোর দাঁড় করায় টাইগাররা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে ম্যাচও বাংলাদেশ হেরে যায় তিন উইকেটে।
ভারতের বিপক্ষে ২-০ শূন্যতে সিরিজ হার
জুন মাসে বিশ্বকাপ ফুটবলের উত্তেজনার মধ্যেই তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে আসে ভারত। তবে ভারতীয় স্কোয়াডে ছিলেন না নিয়মিত একাদশের অনেকেই। সুরেশ রায়নার নেতৃত্বে অনভিজ্ঞ ভারতের বিপক্ষেও পরাজয়ের বৃত্ত থেকে বের হতে পারেনি মুশফিক সাকিবরা।
১৭ জুন দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ভারতকে ১০৫ রানে অল আউট করে দিলে সিরিজে সমতায় ফেরার স্বপ্ন দেখে টাইগাররা। কিন্তু ওই ম্যাচেও ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ৫৮ রানে অল আউটের লজ্জায় ডুবে সমর্থকদের এক রাশ হতাশা উপহার দেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।
তৃতীয় ওয়ানডেটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হলে ভারত শেষ পর্যন্ত দুই শূন্যতে সিরিজ জিতে নেয়
ক্যারিবীয় সফরেও ছাড়েনি পরাজয়ের ভূত
আগস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর ছিল টাইগারদের জন্যে একমাত্র বিদেশ সফর। কিন্তু সেখানেও পুরোপুরি ব্যর্থ বাংলাদেশ। এই সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৭০ রানের অল আউটের লজ্জায় ডুবে মুশফিক বাহিনী।
প্রথম ওয়ানডেতে এনামুল হক বিজয়ের সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ করেছিল ২১৭ রান। ৩৪ রানের মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পাঁচ উইকেট তুলে নিয়েও তিন উইকেটে হার মানতে হয়েছিল বাংলাদেশকে।
বছরের শেষ সিরিজে স্বস্তির জয়
পরাজয়ের বোঝা নিয়েই দেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ খেলতে নামে মাশরাফি বাহিনী। বিশ্বকাপের আগে আর কোনো সিরিজ নেই। বিশ্ব আসরের জন্যে আত্মবিশ্বাসের রসদ পেতে এই সিরিজে জয়ের কোনো বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের সামনে।
শেষ পর্যন্ত বছর শেষে সফলতার দেখা পেল ক্রিকেটাররা। পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইট ওয়াশ করে সমর্থকদের মনে হাসি ফোটান ক্রিকেটাররা।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৪